ভয়ংকর রহস্য (পর্ব ০১) - Nayeem Chowdhori |
ভয়ংকর রহস্য
পর্ব ০১
লেখকঃ Nayeem Chowdhori
আকাশে মেঘাচ্ছন্ন ভাব আশেপাশে হালকা হালকা বাতাস বয়ছে । আশেপাশে অনেক অন্ধকার হয়ে এসেছে তখন আনুমানিক রাত ১১ টা বাজে । চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছে মাএ ৫ জন বন্ধু সোহাগ,সজিব,রকি , রহমান, আর জিসান । পাঁচজন খুব কাছের বন্ধু সবাই একে অপর কে খুব ভালোবাসে । এদের ভেতর সবচেয়ে চালাক আর বুদ্ধিমান রকি ।
পাঁচজন বসে চা খাচ্ছে আর আড্ডা দিচ্ছে । তাদের খেয়াল আকাশের দিকে নেই সবাই গল্প গুজব করতে আর হাসাহাসিতে পেতে উঠছে । সবাই একটা বিষয় নিয়েই মেতে উঠেছে । সবার মনেই একটা ভয় কাজ করছে ।
সোহাগ বললো ,,,, আমাদের ৭ দিন আগের মিশন টা কমপ্লিট হলো নাহ শুধু শুধু মেয়েটিকে মেরে ফেললাম আমরা এইটা কি ঠিক হলো ?
জিসান বলছে ,,, সব ঠিক আছে সা*লি আমাদের শারীরিক সুখ দিতে পারে নাই তাই বলে ওকে কি বেঁচে থাকতে দিব নাকি ! এই কথা বলে অট্টহাসিতে মেতে উঠছে সবাই । সবাই জেন শেষ হাসা আজকে হেসে নিচ্ছে !
রকি বললো ,,,আর যাই বলিশ অন্ধকারে মেয়েটাকে ভোগ করে কিন্তু বেশ মজাই পেয়েছি ইশশশ কালকে রাতের কথা মনে পরলে এখনো শরীরে একটা শিহরণ জেগে উঠে ।
সজিব ,,,,সব ঠিক ছিল কিন্তু মেয়েটাকে মেরে জীবিত অবস্থায় মাটিতে পুঁতে রাখা কি ঠিক হয়েছে আমাদের ।
সোহাগ বললো,,যা হয়েছে হয়েছে এখন আমি বাসায় যাব অনেক ঘুম পাচ্ছে আমার । একথা বলে সোহাগ তার বন্ধুদের থেকে একটা ডার্বি সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে বাসার দিকে যেতে লাগল । এদের পাঁচজনের বাড়ি আলাদা আলাদা রাস্তায় শুধু সজিব আর রকির বাসা একটু কাছাকাছি তবুও রাতের বেলায় যেন অনেক দূরত্ব ।
সোহাগ সবাইকে বিদায় দিয়ে বাসার দিকে যাচ্ছে ,তারাও যে যার যার মতো সিগারেট ধরিয়ে খেতে খেতে বাসার দিকে যাচ্ছে , সবার মনে এখন একটাই চিন্তা বাসায় গিয়ে ঘুমাবে আর সকাল হলেই আবার পাচজনে এক হয়ে আবারো কোন মেয়েকে ভোগ করার ধান্দায় থাকবে ।
সোহাগ বাড়ির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে কিন্তু তার জানি কেমন মনের ভেতর একটা অদ্ভুত ভয় কাজ করছে । তার বার বারই মনে হচ্ছে তার পিছনে কিছু একটা আছে । সোহাগ ধাপ করে পিছনে তাকাতেই দেখে একটা কালো কুচকুচে বিড়াল তারদিকে তাকিয়ে আছে ।
সোহাগ একটু মুচকি হেসে আবার সামনের দিকে যেতে লাগল । সোহাগ কিছুদূর যেতেই আবারো মনে হলেও তার পিছু পিছু কেউ হাঁটছে । সোহাগ একটু সাইডে তাকাতেই দেখে একটা মেয়ের ছায়া তার ছায়ার পিছনে রয়েছে ।
এত রাতে নির্জন রাস্তায় একটা মেয়েকে পাবে একা একা এইটা ভেবেই সোহাগ পিছনে তাকিয়ে দেখে একটা খুব সুন্দর মেয়ে তার পিছনে চুপটি মেরে দাঁড়িয়ে আছে । মেয়েটা অনেক সুন্দর তার শরীরে পড়া রয়েছে কালো বোরখা দেখে মনে হচ্ছে কোন পর্দাশীল মেয়ে হবে হয়ত ।
সোহাগ এত রাতে একটা মেয়েকে কাছে পেয়ে খুব খুশি হলো আর মনে মনে বলল ,,, আজকে এই সুন্দরী মেয়েকে একা একা ভোগ করবো । সোহাগ মেয়েটার দিকে একটু এগিয়ে যেতেই দেখলো মেয়েটা ভয়ে কয়েকপা পিছিয়ে যাচ্ছে ।
সোহাগ বলতে লাগলো ,,,কিগো সুন্দরী কি হয়েছে তোমার গো । মেয়েটা একটু চুপ থেকে সোহাগের দিকে তাকাতেই সোহাগ অনেক অবাক হয়ে গেল , সোহাগ যেন একটা পরীকে দেখছে কি সুন্দর তার চোখদুটো কত মায়াবী ওই চোখ দুটো , সোহাগ জেন এক গভীর মায়ায় জড়ালো ।
মেয়েটা বলতে লাগলো,,,,, আমার বাসা ওই জঙ্গলের একটু ভেতরে দয়া করে আমাকে একটু বাসায় পৌছে দিয়ে আসবেন । মেয়েটার কন্ঠ এতটা সুন্দর ছিল যে সোহাগ হা করে তার কথা শুনছিল । সোহাগ একটু মুচকি হেসে বলতে লাগলো ,,,, অবশ্যই যাব চলেন চলেন তাড়াতাড়ি চলেন ।
মেয়েটা সোহাগের সাথে সাথে চলছে , সোহাগ রাস্তা না দেখে মেয়েটাকে দেখছে আর মনে মনে ভাবছে এই মেয়েকে ভোগ করতে পারলে তার জীবন ধন্য হয়ে যাবে । হঠাৎ মেয়েটা বলল ,,, জানেন আমার বাসায় কেউ নেই আমি একটা অতীম মেয়ে ,আর এতরাতে মাদ্রাসা থেকে আস্তে আস্তে আমার অনেক দেরি হয়ে গেছে তাই কিছুতেই সাহস হচ্ছিল না একা একা যাওয়ার ।
সোহাগ মনে মনে বলতে লাগলো ,,,মেয়েটাও একা আবার তার বাসায় ওহ কেউ নেই তারউপর জঙ্গল ইশশশ আজকে এই মেয়েকে ভোগ করে অনেক শান্তি মিলবে আমার ,,,এই ভেবে সোহাগ মনে মনে অনেক হাসছে ।
সোহাগ বলতে লাগলো,,,, সমস্যা নেই চলেন আর অন্ধকার রাতে এত সুন্দরী একটা পরী পাশে থাকলে যেকোন যায়গায় যেয়ে রাজি আমি । সোহাগের কথাই মেয়েটা কিছু না বলে হাঁটতে লাগলো সামনের দিকে ।
সোহাগ সুযোগ বুঝে মেয়েটার হাত ধরে ফেলল । তাতে মেয়েটা কোন কিছু না বলে সামনের দিকে যেতে লাগল , সোহাগ এর আগে অনেক মেয়েকে ভোগ করেছে কিন্তু কখনো এত নরম হাত ধরেনি । সোহাগ মেয়েটার হাত ধরেই জেন মনে মনে অনেক শারীরিক শান্তি লাভ করল ।
কিছুদূর যেতেই মেয়েটা বলল ,,,, ওই দেখেন আমার বাড়ি । সোহাগ এতক্ষণ মেয়েটার দিকে তাকিয়ে ছিল তাই লক্ষ করিনি সামনে কি আছে । রাস্তার ভেতর যতবার মেয়েটাকে দেখেছে ততবারই তাকে খুব চেনা চেনা লেগেছে ।
সোহাগ সামনে তাকাতেই দেখে একটা কবর । সোহাগ একটু ভয় পেয়ে যায় । সোহাগের কেন জানি মনে হচ্ছে তার হাতের ভেতর মেয়েটার হাত নেই । সোহাগ সাইডে তাকাতেই দেখে মেয়েটা নেই সেখানে । সোহাগ খুব ঘাবড়ে যায় ।
সাইডে একটা চিৎকার করে ভয়ে । সোহাগের চিৎকারের সাথে সাথে কিছুদূর সামনে থেকে একটা চিৎকার ভেসে উঠল । সোহাগ স্পষ্ট বুঝতে পারলো এইটা কোন ৭,৮ বছরের বাচ্চার চিৎকার হবে । সোহাগ ভয়ে ভয়ে একটু সামনে তাকাতেই দেখে একটা ছেলে গাছের ডালের সাথে উল্টো হয়ে ঝুলে আছে । আর সোহাগের দিকে লাল অষ্কু নিয়ে তাকিয়ে আছে ।
সোহাগ যেন এইবার অনেক ভয় পেয়ে গেল । সোহাগ ভয়ে পিছনে দৌড়াতেই দেখে সেই মেয়েটা । মেয়েটার হাতে একটা রড আর একটা বড় হাতুর । সোহাগ এইবার প্রচন্ড ভয় পেয়ে যায় , সোহাগ পিছন দিকে দৌড়াতেই দেখে সেই ছোট্ট ছেলেটা সোহাগের সামনে ঘাড় বাঁকা করে রেখেছে ।
সোহাগ কিছু বুঝে উঠার আগেই সেই ছেলেটা সোহাগের একটা চোখের ভেতর তার ধারালো ড়াত ঢুকে দিয়ে সেই চোখটা টান দিয়ে বের করে ফেলল । প্রচন্ড ব্যাথায় সোহাগ সজোরে চিৎকার করে উঠল ।
সোহাগ তার উঠে ফেলা চোখের উপর হাত রেখে সামনে তাকাতেই সেই মেয়েটা এসে সোহাগের মুখের ভেতর সেই রডটা ঢুকে দেই । সেই রডটা সোহাগের মুখ ছিদ্র করে সোজা গলা দিয়ে ঢুকে পেটের ভেতর চলে যায় ....
সকালে ,,,,,
জঙ্গলের ভেতরে কিছু কাঠুরে কাঠ কাটতে এসে দেখে আকাশে অনেক গুলো কাক ডাকতাছে । কাঠুরে গুলো বুঝে গেল সেই জায়গাতেই কিছু একটা হয়েছে । কাঠুরে গুলো সেখানে দৌড়ে যেতেই দেখে ভয়ংকর একটা মানুষের মৃত্যু । এতটা ভয়ংকর যে কাঠুরে গুলো দিনের আলোয় দেখার পরেও ভয় পেয়ে যায় অনেক ।
কাঠুরে গুলো পুলিশের কাছে ফোন দিতেই । সেখানকার পুলিশ এসে হাজির হয় , ইন্সপেক্টর তার জীবনে কখনো এমন ভয়ংকর মৃত্যু দেখিনি , সব পুলিশ অভিসার ভয়ে ভয়ে তদন্ত করছে । পুলিশ অভিসার লাশটার পকেটে একটা মানিব্যাগ পায় আর একটা জাতীয় পরিচয়পত্র পায় যেটার দ্বারা বুঝতে পারে ছেলেটার নাম , সোহাগ রানা আর তার বাসাও এই পাশেই ।
একটা পুলিশ গিয়ে এই খবর পুরো গ্রামে ছড়িয়ে দেই । একটু পর সোহাগের আব্বু আম্মু আর সোহাগের সব বন্ধুগুলো এসে দেখে ,, সোহাগের দুইটা হাত পায়ে অনেক আঘাতের চিহ্ন ,এতটাই আঘাত করা হয়েছে দুইটা হাত পায়ে যে সেগুলো অনেক থেঁতলে গেছে , সোহাগের একটা চোখ উঠালো , আর মুখের ভেতর একটা রড ঢুকে রয়েছে ।
এমন ভয়ংকর খুন দেখে অনেক মানুষ ভয়ে চিৎকার করছে । সোহাগের বাকি চার বন্ধু অনেক কান্না করছে আর তারা বুঝতেও পারছে না সোহাগ কে এইরকম নিশংস ভাবে কে মেরেছে । একটু পরে পুলিশ সোহাগের টুকরো টুকরো দেহটা নিয়ে গেল ।
সোহাগের বাবা মা কিছুতেই নিজেদের বোঝাতে পারছে না যে এইটা তার ছেলে । এইভাব দিনটাও কেটে গেল । রাত হতেই আবার বাকি চার বন্ধু চায়ের দোকানে বসে । গ্রামের মধ্যেই এই দোকানটা আশেপাশে কোন দোকান নেই শুধু এইটা ছাড়া । চায়ের দোকানদারের বাড়ির ভেতরেই এই দোকানটা দিয়েছে ।
চার বন্ধু আড্ডা দেওয়া শেষে যখনই রকি সবাই কে বিদায় দিয়ে তার বাসার দিকে একা একা যাচ্ছিল তখনই ঘটল তার সাথে এক ভয়ংকর ঘটনা .......?
#চলবে
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ সোহাগ কেন এতটা ভয়ংকর ভাবে খুন হলো , কি জন্য তাকেই কঠিন মৃত্যু দেওয়া হলো , সেই সুন্দর দেখতে চোখ জোড়া মেয়েটা কে ছিল , কি তার উদ্দেশ্য আর কেনই বা সে সোহাগ কে এইভাবে মারলো , সেই ছোট বাচ্চা টা কি মানুষ নাকি সেও একটা আত্না , কি হতে যাচ্ছে বাকি চার বন্ধুর সাথে সবকিছু জানতে চোখ রাখুন সাহিত্যবক্সে .... আর অবশ্যই ভুলক্রটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন .!