আমাদের সাথে সোস্যাল মিডিয়ায় যুক্ত থাকতে আমাদের ফেইসবুক পেইজে লাইক দিন Facebook Follow us!

এক গুচ্ছ মাধবীলতা- গল্প কন্যা ( পর্ব-১১ )

এক গুচ্ছ মাধবীলতা,গল্প কন্যা (ছদ্ম নাম),ধারাবাহিক,প্রেম কাহিনী,গল্প কন্যার ধারাবাহিক গল্পঃ ' এক গুচ্ছ মাধবীলতা ' পর্ব-১১,dharabahik golpo,bangla golpo
Estimated read time: 6 min
এক গুচ্ছ মাধবীলতা পর্ব-১১

১১.
রাজউক উত্তরা কলেজে ভর্তি হয়েছে মধু।কিন্তু আসা যাওয়া করে পড়া শোনা করাটা অসম্ভব হয়ে পড়ছে। রহমত আলি কয়েক দিন ধরে দোকান পাট রেখে আনা নেয়া করেছে।কিন্তু সারাদিন গাড়ি-ঘোড়া যানযটেই কে'টে যায়।বাড়ি ফিরে মধু ক্লান্ত হয়ে বিছানায় পড়ে থাকে।

মাজিদা ও রহমত আলি বেশ চিন্তিত মেয়ের জন্য।মেয়েটা না জানি অসুস্থ হয়ে পড়ে,পাছে তো লেখা পড়াতে প্রভা'ব পড়বে।

রহমত আলি বাজারে এক লোকের কাছে শুনেছিলো,কলেজ গুলোতে নাকি থাকার জন্য জায়গা আছে।কিন্তু মাজিদা মানতে নারা'জ।তার এমন অসম্ভব রূপবতী তনয়াকে নারী -লো'লু'প শো'ষকগো'ষ্ঠীর মধ্যে একা তিনি ছাড়বে না।

অনেক ভেবে চিন্তে পরদিন রহমত আলি স্কুলের হেড মাস্টারের কাছে যান,তিনি ভালো পরা'মর্শ দিতে পারবেন।হেড মাস্টারের সাথে পুরো বিষয়টা নিয়ে আলো'চনা করেন।

রহমত আলি এবং মাজিদার চিন্তার কারণ তিনি নিজেও উপল'ব্ধি করতে পারছেন।হেড মাস্টার তাৎ'ক্ষণিক স্কুল ক'তৃপ'ক্ষের সাথে কথা বলেন।

তখন সকলে মিলে রহমত আলি কে বলে,আফজাল শেখ তো ইতিপূর্বেই বলে রেখেছে তিনি নিশ্চয়ই একটা ব্যবস্থা করবেন।

হলোও তাই! কতৃ'পক্ষের একজন আফজাল শেখের সাথে যোগা'যোগ করে।তাদের সমস্যার কথা জানায়।আফজাল শেখ সঙ্গে সঙ্গে জানান যে,মধুর অন্য কোথাও থাকতে হবে না।তার নিজের বাড়িতেই থাকবে।মধু যে কলজে পরে সে কলজ উনার বাড়ি থেকে খুব বেশি দুরত্বের নয়। আসা যাওয়ার ব্যবস্থা ও তিনি করে দিবেন।যত দ্রুত সম্ভব যেন ঢাকায় তার বাড়ি চলে যায়।
রহমত আলি কি করবে এখনো বুঝে উঠতে পারছে না।স্কুল কতৃ'প'ক্ষ ও শিক্ষকরা সবাই খানিকক্ষণ বোঝানোর পরে তিনি স্থির হন।এবং দুই একদিনের মধ্যে রওনা হবে ঠিক করেন।

রহমত আলি বাড়িতে গিয়ে মাজিদাকে বলে।মাজিদা প্রথমে দ্বিম'ত পো'ষণ করে থাকলেও রহমত আলির বোঝানোর ফলে মানতে বা'ধ্য হয়।তবে শ'র্ত দেয় যে মেয়েকে কোথায় রেখে আসছে নিজের চোখে দেখে আসবে,গুছিয়ে দিয়ে আসবে।সেই মো'তাবেক প্রস্তুতি চলছে।


__________


সুলতানা নিবাস, কোনো অংশে রাজপ্রাসাদের তুলনায় কম না।বিশাল জায়গা জুড়ে নির্মাণ করেছে এই জমকালো বাড়িটি।বাহির থেকে দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়।

বাড়ির প্রবেশদ্বার দিয়ে ঢুকতেই দুই পাশে নাম জানা অজানা দেশি-বিদেশি ফুল গাছের সমারোহ।এক পাশে ডালপালা ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে এক কৃষ্ণচূড়া গাছ।তার ঠিক নিচেই একটা দোলনা রাখা।

ওই দিকে লক্ষ্য করে উপরের দিকে তাকালেই দেখা যায় লতানো মাধবীলতা ফুলের একটা গাছ,বারান্দা বেয়ে ছাদে উঠে গেছে।গাছটা জুড়ে রয়েছে শুধু রঙ বেরঙে ফুলের ছড়াছড়ি।চট করে কেউ দেখলে ভাববে হয়তো ফুল গুলোর নিজেদের মধ্যে কোনো উৎসব লেগেছে।তাই এতো সুন্দর মন মাতানো রূপে সেজেছে।চারিপাশে তাদের সুগন্ধী ছড়িয়ে নিশ্চিন্তে দেয়াল জুড়ে বসে আছে।

কৃষ্ণচূড়া গাছের পাশেই হচ্ছে সার্ভেন্ট কোয়াটার।বাড়ির বিভিন্ন কাজের জন্য আলাদা আলাদা লোকজন আছে।সকল কর্মর'ত লোকজনের বসবাস এখানেই।বাড়ির কেয়ার টেকার ও ড্রাইভার রহিম চাচা তার স্ত্রী জয়নব বেগম এবং একমাত্র মেয়ে প্রভাকে নিয়ে এখানেই থাকেন।রহিম চাচার স্ত্রী ও মেয়ে এই বাড়িতে রান্নার কাজ করে।প্রভা অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী।খুবই সহজ সরল সভাবের একটি মেয়ে।

পূর্বেই বলে দেয়ার ফলে,নিচ তলায় মধুর জন্য একটা কক্ষ ঝাড়াই মোছাই করে রেখেছিল।

বাড়ির পরিবেশ দেখে রহমত আলি খুশি হন,ভাবেন যাক মেয়েটা নিশ্চিন্তে থাকবে। কিন্তু মাজিদার মনে নতুন ভয়ের আগতো হয়।"বাড়ির মানুষ গুলোর মন কি বাড়ির মতই বড়ো ,নাকি...?তার কলিজার টুক'রো মেয়ের আবার কোনো কষ্ট হবে না তো!কিন্তু এছাড়া যে উপায় ও নেই!"

বিশাল জমকালো ড্রইংরুমে বসে আছে ওরা তিন জন।তাদের সামনে সেন্টার টেবিলে চা নাস্তা রাখা। কাজের লোকজন যে যার যার মতো কাজ করছে।কারো দিকে কেউ তাকাচ্ছে না।কাউকে নজর করার ফুরসতটুকু নেই যেন।এমন য'ন্ত্রমানবের মতো চালচলন দেখে মধু মায়ের দিকে তাকিয়ে ঠোঁট উল্টিয়ে দেয়।ছলছল চোখে মায়ের দিকে তাকিয়ে ফুঁপাতে থাকে।


রহিমের স্ত্রী জয়নব বেগম হাসি মুখে তাদের পানে এগিয়ে আসে।

"কি হলো খাচ্ছেন না কেন আপনারা!খান খান! চা তো জুড়িয়ে শরবত হয়ে যাচ্ছে।"

মাজিদা ভদ্রতাসূ'চক হেসে চায়ের কাপ তুলে নেয় ,তদ্রুপ রহমত আলি ও।মধু নিচের দিকে তাকিয়ে এক পায়ের নখে আরেক পায়ের নখ ঘ'ষছে আর ফুঁপাচ্ছে।এহেন কা'ন্ডের কারণ জয়নব বেগম খুবই ভালো মতো আ'ন্দাজ করতে পেরেছে।তাই পরি'স্থিতি সামা'ল দিতে ডেকে উঠে,"মা এদিকে আসো তো!"

মধু উঠে কাছে যায়।গালে মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,"তুমিতো খুব মিষ্টি দেখতে।তা এত বড়ো মেয়ের এমন সুন্দর সুশ্রী মুখে কি কান্না মানায়?কাঁদছো কেন?আমরা আছি না!তোমার নাম কি বলতো শুনি?"

"মাধবীলতা মধু।"

"বাহ!তোমার মতোই মিষ্টি তোমার নাম।আমি তোমাকে মধু বলে ডাকবো,কেমন।শোনো,মন খারা'প করো না তোমার মতো আমার একটা মেয়ে আছে তার সাথে তোমার সময় কে'টে যাবে।পরিচয় করিয়ে দেব।আসো তোমার রুমে তোমাকে নিয়ে যাই।"

জয়নব আর মধুর পিছন পিছন রহমত আর মাজিদা ও যায়।সুন্দর গোছানো পরিপাটি মোটামুটি বড়ো ধরনের একটা কক্ষে মধুর থাকার ব্যবস্থা করেছে।

মধুকে সব গুছিয়ে দিয়ে রহমত আলি ও মাজিদা বেগম সুলতানা নিবাস ছেড়ে প্রস্থান করে।যাওয়ার আগে আফজাল শেখের সাথে কথা বলতে চেয়ে ছিলো।কিন্তু তিনি বাড়িতে না থাকায় হয়ে উঠেনি।

তার বাড়ির অন্য কোনো সদ'স্যের দেখা সা'ক্ষাৎ ও পায়নি।উপায়ন্তর না দেখে রহিম ও তার স্ত্রী জয়নব বেগমের সাথে কথা বলে মেয়েকে দেখে রাখার জন্য অনুরো'ধ করে যায়।

বাবা-মায়ের সাথে বি'চ্ছেদ যে এতো কষ্টের হবে, বুঝতে পারেনি।অঝোরে কেঁদেছে।প্রভা আর জয়নব বেগম বহু কষ্টে সামলেছে।দুপুরের খাবারটা ও খায়নি।

বিকেলের দিকে মধুকে ড্রয়িংরুমে ডেকে পাঠায়।মধু সেখানে গিয়ে সালাম দেয়।সোফায় বসে থাকা পারভীন বেগম এবং তার মা মনোয়ারা সালামের উত্তর দিবেন দূরে থাক ভ্রুকুচকে তাকায়।

মনোয়ারা বেগম বলেন,"তোমারে ঐ ঘরে থাকার জন্যে কেডা বলছে?যাও!সব গুছাইয়া সার্ভেন্ট কোয়াটারো যাও!ঐ শেফালী ওরে দেহায় দিয়ায়।নিয়ে যা।"

আ'ক'স্মিক এমন ব্যবহারে মধুর ভেতর মুচ'ড়ে উঠে।ছোট্টো মনে অপ'মান বো'ধ করে। ইচ্ছে করে ছুটে বাড়ি চলে যেতে।কিন্তু বাবা-মায়ের স্বপ্নের কথা ভেবে গায়ে মাখে না।

কাজের মেয়ে শেফালীর সাথে সব কিছু নিয়ে সার্ভেন্ট কোয়াটারে চলে যায়।কিন্তু কোনো রুম খালি না থাকায় প্রভার রুমে প্রভার সাথে জায়গা হয়।

জয়নব বেগম বিভিন্ন কথা বলে ভুলাতে চেষ্টা করে।মধু উনার হাতে ধরে বলে,"চাচী, আমার সামনে শাক দিয়ে মাছ ডাকার কিছু নেই।আমি কিছু মনে করিনি।উনারা যতটুকু করেছেন তাই অনেক।সেটার ঋ'ণ আমি আমার পরিবার শো'ধ করতে পারবো না।"

"না মানে তোমার পরিবার..."

"আপনি নিশ্চিন্ত থাকেন,আমি কাউকে কিছু বলবো না।এমনকি আমার বাবা-মাকে ও না। অযথা তাদের চিন্তায় ফেলা আমি ও পছন্দ করবো না।সবচেয়ে বড়ো কথা আপানাদের সাথে থাকতে পারলেই আমার ভালো লাগবে।উল্টো ওখানে ই দ'মব'ন্ধ লাগতো।পারবেন না আমাকে প্রভা আপুর মতো ভাবতে?"

জয়নব বেগম মধুকে জড়িয়ে নেয়।মনে মনে ওর সরল মন ও বুদ্ধির প্রশংসা করেন।প্রভা ও মধুকে আপন করে নেয়।মধুকে বলা প্রভার প্রথম বাক্য ছিলো,"ওমা কি সুন্দর তুমি,পুরো পুতুলের মতো দেখতে।আর তোমার মাথার বেনিটা কতোওও বড়ো...আর মোটা...!মাশাল্লাহ! আমি এতো বড়ো চুলের বেনি কোনো দিন দেখিনি।আমাকে তোমার চুলটা আঁচড়াতে দিবে?"

"হ্যাঁ...কেন দিবো না।তুমি আমার আপু না,তুমি ই প্রতিদিন আঁচড়ে দিও।কেমন!"

রাতের বেলা মধুকে ড্রয়িংরুমে পুনরায় ডাকে।কিন্তু এই বার আফজাল শেখের ডাক পরে।মধু সালাম জানায়,"আসসালামু ওয়ালাইকুম,স্যার।"

"ওয়ালাইকুমুস সালাম।আমাকে স্যার বলতে হবে না।অন্য কিছু বলো।"

"জি ,মানে জি...চাচা।"

পাশ থেকে পারভীন বেগম বলে উঠে,"চাচা

আবার কেমন ডাক,ক্ষেত মা'র্কা।আঙ্কেল ডাকবে!"

"তোমার যা ইচ্ছে তাই ডেকো,তা মা তোমার কি রুমটা পছন্দ হয়নি?"

"পছন্দ হয়েছে আঙ্কেল ।"

"তাহলে রুম ছেড়ে চলে গেলে কেনো?ভালো না লাগলে দো'তলায় থাকতে!"

পাশ থেকে পারভীন বেগম ভ্রুকুঞ্চন করে তাকায়।মধু যা বুঝার বুঝে গেছে।

"আসলে খোলা মেলা থেকে অভস্ত্য তো এখানে কেমন ব'ন্দি ব'ন্দি লাগছিলো,সেই জন্য চলে গেছি,ওখানেই ঠিক আছি।"

"আচ্ছা তোমার যেখানে ভালো মনে হয় সেখানেই থাকো,নিজের বাড়ি মনে করো মা। ওখানে অসু'বিধা হলে আবার এখানে চলে আসবে কোনো প্রবলেম নেই ,ঠিক আছে।"

"জি,আঙ্কেল।"

"রহিম কে বলে দিবো তোমাকে গাড়ি দিয়ে নামিয়ে আসবে আবার ফিরার সময় নিয়ে আসবে।"

"আচ্ছা ।"

"ডিনার হয়েছে?"

"জি"

"আচ্ছা মা যাও,ঘুমাও গিয়ে।"

পর দিন ভোরে,

ঘুম থেকে উঠে নামাজ শেষে মায়ের সাথে কাজ করার অভ্যা'স মধুর।আজকে কোনো কাজ নেই। কিছুক্ষণ পড়তে বসেছিলো।কিন্তু মনোযোগের অভাবে বসে থাকতে পারলো না। মা-বাবার কথা খুব মনে হচ্ছে। বারবার কান্না পাচ্ছে।টেবিল চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়লো বাগানের উদ্দেশ্যে।প্রকৃতির কাছে গেলে মন ভালো হয়ে যাবে।

পুরোটা বাগান একটা চ'ক্কর দিয়ে কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচের দোলনায় এসে বসেছে।পা দুলিয়ে দোল খাচ্ছে।গাছের দিকে তাকিয়ে ভাবছে,"গাছটায় কবে ফুল আসবে?গ্রীষ্মকালে নাকি বর্ষাকালে?"হঠাৎ চোখ পড়ে ঠিক উপরের দিকে খোলা বারান্দায়।


" সেই লোকটা!

কি যেন নাম!

স্নিগ্ধ!

হ্যাঁ... স্নিগ্ধ শেখ!

সে তো আফজাল শেখের ছেলে,তার তো এই বাড়িতেই থাকার কথা।সে কি আমার চু'রির বিষয়টা বলে দিবে?তাছাড়া সেদিন স্কুলের ঘটনার পর থেকে তো মনে হয় সে আমাকে ভিষণ খারা'প মেয়ে ভাবছে।যদি আঙ্কেলকে এসব ঘটনা বলে দেয় তাহলে তো তিনি ও আমাকে খারা'প ভাববে।আমার আর পড়াশোনা করা হবে না।"তাৎক্ষণিক ছুটে পা'লায়।

এদিকে গতকাল রাতে আবারও সেই স্বপ্নটা দেখেছে স্নিগ্ধ।এখন আর মুখটা অস্পষ্ট না।কিন্তু ধরতে চাইলেই ছুটে পা'লায়।

স্নিগ্ধর বারান্দা ঘেঁ'ষে উপরের দিকে উঠেছে মাধবীলতা গাছটা।তাই বারান্দা থেকে হাত বাড়ালেই ছোঁয়া যায়। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে গাছটার কাছে যায় সুবাস নেয়,আলতো করে ছুঁয়ে দেয়।প্রতিদিনকার ন্যা'য় আজকেও ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে সবে মাত্র বারান্দায় মাধবীলতা ফুলের সুবাস নিতে দাঁড়িয়েছে।চোখ বন্ধ করে দীর্ঘনিশ্বাস টে'নে চোখ মেলে তাকাতেই নিচের দোলনায় চোখ পড়ে।


"মাধবীলতা! "

স্বপ্নের রে'শ কা'টেনি ভেবে চোখ ড'লতে শুরু করে।"

"কোথায় মাধবীলতা! সব মতি'ভ্র'ম!

কিন্তু সত্যি যদি এই দোলনায় মাধবীলতা থাকতো।মনোমুগ্ধকর হাসিতে হেসে উঠতো...."




চলবে...


dharabahik golpo, bangla golpo,bangla romantic golpo,best romantic golpo

Post a Comment

অনুগ্রহ করে স্পাম করা থেকে বিরত থাকুন।
Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.