আমাদের সাথে সোস্যাল মিডিয়ায় যুক্ত থাকতে আমাদের ফেইসবুক পেইজে লাইক দিন Facebook Follow us!

হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে- গল্পকন্যার ধারাবাহিক প্রেমের গল্প ( পর্ব-০১ )

গল্পকন্যার ধারাবাহিক প্রেমের গল্প 'হৃদয়ের নিকুঞ্জ নীড়ে' পর্ব-০১,বাংলা গল্প,প্রেম কাহিনি,প্রেমের গল্প,bangla golpo,bangla prem kahini.bangla nice stor
ছবিঃ হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে ব্যানার


সুহাসিনী...
তোমাতে রুদ্ধ হয়েছি,
অবিশ্বাস্য মুগ্ধ হয়েছি,
আঁখিপাতে আজ অতরল বশে
অনিন্দ্য সুন্দর এক ছন্দ যশে।
যে আমি ছিলাম প্রকৃতি শোভায় শোভাময়,
যে আমিই ছিলাম নিরন্তর প্রবাহমান শীতলক্ষ্যার ন্যায়,
পাহাড়ের চুড়ায় স্থিতিশীল বটবৃক্ষের ন্যায়।
সুহাসিনী...
আজ কেবলি স্বপ্নের ক্যানভাসে,
ঐ রূপালী জোৎস্নার আলো গুলো ফুলের রেণুর মতো উড়ে উড়ে বেড়ায়,টকটকে ঐ লাল গোলাপের রং,
পাখপাখালির কুহক কলতান,
লোক লোকারণ্যের গুঞ্জরন
সব কিছুই আজ বড্ড নবীন লাগে।
সুহাসিনী...
একি অনুরাগের বহিঃপ্রকাশ
নাকি পাবকে ছাই হওয়ার আহ্বান?
সুহাসিনী...
তোমার মুগ্ধতার সহস্র যাদুবলে
সে আমি...আজ দৃঢ় উৎকন্ঠিত,
দিক দিশেহারা পান্থের ন্যায়,
ঠাঁই দাও সুহাসিনীর হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে,
শান্ত করো,তুষ্ট করো,এ প্রনয়ী যে বড্ড প্রেম পিপাসিত।
                                                                       -গল্পকন্যা

খোলা চুলে শুভ্র পোশাক পরিহিতা একটি মেয়ে ঝর্ণার পানিতে পা ডুবিয়ে বসে আছে।পাতলা গোলাপি ঠোঁট নাড়িয়ে তার রিনরিনে সুমিষ্ট কোকিল কন্ঠে একটি ছেলের উদ্দেশ্যে বলে উঠে,"আমাকে কিছু বলছো?"
_________________

প্রেমে পড়েছেন কখনো?পড়েছেন কারো প্রেমে, একেবারে নাক মুখ থুবড়ে?

এখনকার সময়ে প্রেমে পড়া খুব সাভাবিক ব্যাপার।পড়া যেতেই পারে।কিন্তু কোনো অপ্রত্যাশিত প্রেমকাহিনী আছে আপনার?

এ গল্পটি একটি অপ্রত্যাশিত প্রেমকাহিনী নিয়ে।

এই অপ্রত্যাশিত প্রেমকাহিনীটাই আপনাদের উপস্থাপন করবো।তার আগে প্রেমিক চরিত্রের পরিচয়টা জানা দরকার ।

মোঃ মুনসিফুর ইফরাত।কেউ কেউ ইফরাত ডাকে,কেউ আবার সংক্ষেপে রাত ডাকে।
ছোটোবেলা থেকেই প্রচুর খেতে পছন্দ করে।সেই সুবাদে দেখতে অনেকটা গলুমলু। এর জন্য তাকে আবার মোটা বলেও আখ্যায়িত করা যাবে না।

ওর মা বলে ও নাকি ধবলা রোগীদের মতো ধবলা।আসলে তিনি মোটেও ফর্সা বর্ণের ছেলেদের পছন্দ করেন না।তার মতে ছেলেদের হতে হবে শ্যাম রঙা অথবা কৃষ্ণ রঙা।এই রঙেই তাদের মানায়।ধবধবে ছেলে দেখলে ওর মায়ের কাছে তাকে মেয়ে মেয়ে মনে হয়।

হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে- গল্পকন্যা

ইফরাতও তার সাথে এক মত,মেয়েদেরই ফর্সা রঙ মানায়।কারণ তারা চকচকে থাকতে পছন্দ করে।সরাসরি বলতে গেলে যত সুন্দরী হোক না কেন, মেকাপ মেখে নিজেকে আরো উজ্জ্বল করতে চেষ্টা করে।ক্ষেপে যাবেন না আবার,সবাইকে বলছি না।কিছু কিছু বিরঙ্গনাদের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য।

যাই হোক মূল কথায় আসি।

ইফরাত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালের একজন ছাত্র ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়ছে।

এ ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার পেছনে রয়েছে বিশাল প্রচেষ্টা।সংক্ষিপ্ত আকারে বলি।

ছোটোবেলা থেকেই ওর স্বপ্ন ছিলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন স্টুডেন্ট হওয়ার।কিন্তু এইচএসসিতে এ প্লাস পেয়ে যখন ভর্তির জন্য আবেদন করবে,ঠিক তখনই পরলো বিপাকে।ওর বাবার ইচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হবে ।আর ওর ইচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবে। মনের ইচ্ছে যাইহোক তবে শ্রদ্ধেয় পিতা কর্নেল মোঃ আসাদুজ্জামান হাবিবের কথার সরাসরি অমান্য করার সাধ্য ওর নেই।

কিন্তু ওর স্বপ্নের কি হবে?বাবাকে বলবে কিভাবে?ভেবে ভেবে দিশেহারা হয়ে যাচ্ছিলো।বাবার সামনে চোখ তুলে কথা বলার সাহস কখনোই ওদের দু ভাই বোনের হয়ে উঠেনি।

মার ক্ষেত্রে সেটা সম্পূর্ণ উল্টো।ওর মা আয়েশা বেগমের সাথে ওর এবং ওর একমাত্র ছোটো বোন ঊর্মির বন্ধুত্ত্বপরায়ণ সম্পর্ক।

নির্ধিদায় মাকে সব কিছু শেয়ার করতে পারে।
ওর মা যখন টিভি সিরিয়াল দেখে তখন একটু বেশি ইমোশনাল থাকে।এক সন্ধ্যায় সেই সুযোগ বুঝে মার কোলে শুয়ে বলে দিলো ইচ্ছের কথা।

হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে- গল্পকন্যা

আয়েশা বেগম প্রথমে কিছুটা ইতস্থ করেছে ঠিকি,কিন্তু পরক্ষণে ইফরাতের মুখের দিকে তাকিয়ে ওর বাবাকে রাজি করাতে উঠে পরে লাগে।অতঃপর আয়েশা বেগমের বহু চেষ্টার পরে মোঃ আসাদুজ্জামান হাবিব কিছুটা সহমত হয়।

তবে পুরোপুরি না। ধরতে গেলে তার অনেকটা অনিচ্ছাতেই ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে উত্তির্ণ হয় ইফরাত।কালবিলম্ব না করে ভর্তি হয়ে যায় স্বপ্নের ক্যাম্পাস চবিতে।

মোঃ আসাদুজ্জামান হাবিব বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর অধীনস্থ একজন কর্নেল।সেই সুবাদে হালিশহর সেনানিবাস,অথার্ৎ হালিশহর চট্টগ্রাম কেন্টনমেন্টে ওদের বসবাস।ওদের পরিবারের সদস্য বলতে ইফরাত,ওর ছোটো বোন ঊর্মি আর ওর বাবা-মা।

প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা সেরে ওর যাত্রা শুরু হয়।হালিশহর থেকে সিএনজি করে বটতলি স্টেশন যায়।তারপর বটতলি স্টেশন থেকে শাটল ট্রেনে করে চবি ক্যাম্পাসে।ক্লাস শেষে ঘুরে ফিরে বাসায় ফিরে আসে।

প্রায় প্রতিদিনই বন্ধুরা মিলে পুরো কেম্পাস ঘুরে বেড়ায়। জাহিদ ছাড়া ওর বাকি সব বন্ধুদের সাথে এই চবিতে এসে ওর বন্ধুত্তের সম্পর্ক গড়ে ওঠেছে।

জাহিদ ওর স্কুল ফ্রেন্ড।খুব বদ আর ফাজিল টাইপের ছেলে।সবাইকে হাসানোর কাজটা যেন ওর শখ।একি সাথে দুই তিনটা মেয়ের সাথে রিলেশনে থাকা ওর অভ্যাসের মধ্যে পড়ে।ওর কাছে সব সময় সব সুন্দরী মেয়েদের খোঁজ থাকে।ভার্সিটির যে কোনো সুন্দরী মেয়েকে দেখে ওদের মধ্যে কেউ কিছু জানার আগ্রহ পোষণ করলেই ও পুরো গুষ্টির খবর বলে দেয়।সে জন্য মাঝমধ্যে সবাই ওকে বিবিসি বলে ডাকে।

হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে- গল্পকন্যা

ভার্সিটির প্রথম দিন গুলো চমৎকার আমোদ প্রমোদ আর নতুন উদ্দামে পড়াশোনায় এগিয়ে যাচ্ছিলো।

প্রায় মাস খানিক পরের কথা....

“ঝর্ণা! ঝর্ণা! সুন্দরী ঝর্ণা!
তরলিত চন্দ্রিকা! চন্দন – বর্ণা!
অঞ্চল সিঞ্চিত গৈরিকে স্বর্ণে,
গিরি – মল্লিকা দোলে কুন্তলে কর্ণে
তনু ভরি’ যৌবন, তাপসী অপর্ণা!”
হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে- গল্পকন্যা
সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের মতো বহু কবি ঝর্ণার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছেন ঝর্ণার প্রেমে পড়ে লিখেছেন অসংখ্য কবিতা।কাব্যিক ছন্দে ঝর্ণার অপরূপ সৌন্দর্যের গুণগান গেয়ে গেছেন তাদের গদ্যে পদ্যে।

আবার প্রকৃতিপ্রেমি ভ্রমণপিপাসুদের যেমন নদীর বহমানতা, সমুদ্রের উন্মত্ততা মুগ্ধ করে,তেমনি ঝর্ণার প্রলয়ংকারী সৌন্দর্যও অদ্ভুত আকর্ষণ করে,অদৃশ্য প্রলোভনে কাছে টানে। তাই তো নানা প্রতিকূলতা পেরিয়েও প্রকৃতিপ্রেমি এই ভ্রমণপিপাসুরা দীর্ঘ পথ হেঁটে, কখনো বা খাড়া পথ বেয়ে হলেও ঝর্ণার কোলে ছুটে যায়।

চবি ক্যাম্পাসের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের পিছনে রেয়েছে দৃষ্টিনন্দন এক পাহাড়ি ঝর্ণা।পাহাড় থেকে নেমে আসা জলরাশির খেলা ও ঝর্ণার পাশের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে প্রকৃতিপ্রেমিদের পদচারণায় প্রায়শ্যই মুখরিত থাকে এ স্থান।প্রায়শ্যই আবার হয়ে উঠে জনমানবহীন নিস্তব্ধ।

বর্ষাকাল চলছে।

রোদ ঝলমলে পরিষ্কার আকাশে হঠাৎ করেই আবির্ভাব ঘটে ঘন কালো মেঘরাশির।তার পর পরই ধরনী কাঁপিয়ে মেঘকুঞ্জ থেকে ফোঁটায় ফোঁটায় নেমে আসে অজস্র বৃষ্টির জলধারা।তীক্ষ্ম বৃষ্টির ফলা ঝড়ে পড়ে ধরণীর বুকে।মিশে যায় সাগর নদীর জলে,ঝড়ে পড়ে পাহাড়ের বুকে।স্নান করিয়ে দেয় গাছগাছালি,পাখপাখালি,আর বিশাল ঢিবি,পাহাড়কে।যার রেষ পাহাড়ের বুকে থেকে যায় বেশ কয়েকদিন।

হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে- গল্পকন্যা

গতকাল রাতে তুখোর বৃষ্টি হয়েছে।আজ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে কাটাপাহাড়ের রাস্তা ধরে হাঁটতেই দেখতে পায়, চারপাশটা কেমন সবুজে শ্যামলে ছেয়ে আছে।ছোটো বড়ো গাছ গুলো তাদের গাড় সবুজ পাতা গুলো দুলিয়ে তিরতির করে কেমন ঠান্ডা বাতাস ছাড়াচ্ছে।কি স্নিগ্ধ সেই বাতাস।বাতাসে পাহাড়ি বুনো গন্ধ মিশে আছে।

লম্বা নিশ্বাস টেনে বুকের ভিতরটা শীতল করলো ইফরাত।সকাল সকালই মনটা একেবারে ফুরফুরে হয়ে গেছে।

১২টা ৩০ এ ক্লাস শেষ হয়েছে।

আজকের আবহাওয়াটা একটু বেশিই মনোরম।শীতল আবহাওয়ায় প্রকৃতি ওকে যেন একটু বেশি টানছে।কোনো কিছু না ভেবে জাহিদকে নিয়ে চলে যায় চবি ঝর্ণার কাছে।

সড়ু রাস্তা দিয়ে নেমে ঝর্ণার পারের কাছাকাছি আসতেই কারো হাসির প্রতিধ্বনির শব্দ শোনা যাচ্ছে।কারো হাসির খিলখিলে শুব্দ ফাঁকা জায়গায় পাহাড়ের গায়ে ধ্বাক্কা পেয়ে প্রতিধ্বনিত্ব হয়ে নিস্তব্ধতা ছাপিয়ে এক রকম ভৌতিক আওয়াজ তুলছে।

জাহিদ ভয় পেয়ে বলে,"দোস্তো এমনি জায়গাটা ভালো না,তার উপর এমন সুনশান-নিস্তব্ধ।আবার কে এমন হাসতেছে, চল যাইগা!"

ওর কথা শুনতে শুনতে ইফরাত এগিয়ে চলে সেই শব্দের উৎসের দিকে।

দুপাশের ঘাস ও ঝোপ পেরিয়ে ঝর্ণার পারে আসতেই চোখে পরে,খোলা চুলে শুভ্র পোশাক পরিহিতা একটি মেয়ে ছড়ার যেখান থেকে পানি আছড়ে নিচে পড়ে ঝর্ণার সৃষ্টি করছে,সেখানে ছড়ার মুখিতে পা ডুবিয়ে বসে আছে।উল্টো হয়ে বসে থাকার কারণে তার মুখটা দেখা যাচ্ছে না।

অদ্ভুত বিষয় হলো মেয়েটি পানিতে পা দোলাচ্ছে আর একাকী শব্দ করে হাসছে।মনে হচ্ছে এ কাজটি মেয়েটির খুব পছন্দের কাজ।যা করতে পেরে মেয়েটি ভিষণ খুশি।খুশিতে মাঝেমধ্যেই আনমনে শব্দ করে হেসে উঠছে।

হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে- গল্পকন্যা

জাহিদ বলে,"পাগল নাকি!এমন নিরিবিলি জায়গায় একাকী কেউ বসে থাকে?আর কি বিকট হাসি!বাবা রে বাবা!আমি ভাবলাম কোনো পেত্নী হবে।দেখতে অবশ্য পেত্নীর মতোই লাগছে।"

ইফরাত ওর ফাজলামোতে হেসে উঠে।ছড়ার পার ধরে নিচের দিকে এগিয়ে গিয়ে পারের সবুজ ঘাসে ধপ করে বসে পড়ে।জাহিদ ও ওকে অনুকরণ করে।

"এই পাগল মেয়েটার সম্পর্কে তোর কিছু বলার নেই?"

"কি বলবো?মেয়েটাকে কি চিনি,যে তার সম্পর্কে অনার্থক কমেন্ট করবো?আর মেয়েরা পাগল হয় না পাগলী হয়।"

"কি বলিস!
বিকট হাসি হেসে আমাদের ভয় দেখালো,কাছে গিয়ে কিছু না বলিস,আড়ালে তো একটু গালমন্দ করা উচিত!"

"মেয়েটা তোকে বলেছে ভয় পেতে....!"

"আশ্চর্য্য তো!"

"চুপ থাক!কান পেতে শোন,কালকের বৃষ্টির পর সুন্দরী ঝর্ণা খুশিতে তার নিজস্ব স্বরে ছন্দ তুলছে।"

জাহিদ কানপাতার ভান ধরে মিনিট পাঁচেক পরে বলে,"কই কিছুই তো শুনি না!"

"তুই চুপ করে বসে থাক তো!"

রাত চোখ বন্ধ করে ইয়োগা পজিশনে বসে গভীর ভাবে নিশ্বাস নিচ্ছে।আর কান পেতে শুনছে ঝর্ণার মনোমুগ্ধকর ছন্দ।

হঠাৎ করে সব কিছু ছাপিয়ে শোনা যায় আবারো সেই অদ্ভুত হাসির কলধ্বনি।

তখন বিদঘুটে মনে হলে ও এখন কেন যেন এই হাসির কলধ্বনি রাতের কাছে ভালো লাগছে।

কিন্তু পাশে বসে থাকা মানবের সেটা সহ্য হচ্ছে না।একে তো খিদে পেটে বসে আছে ধ্যানরত আধ্যাতিক বন্ধুর পাশে, তারউপর এমন ভূতুড়ে হাসি।জাহিদের মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেছে।

উঠে যায় মেয়েটির কাছে।তারপর হরবর করে কতক্ষন যা মুখে আসছে বলতে থাকে।জাহিদের ধমকে ধমকে কথার ফলে,ধ্যান ছেড়ে দ্রুত পায়ে সেখানে যায় জাহিদকে আটকাতে।

জাহিদের পিছনে গিয়ে দাঁড়াতেই মেয়েটি ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায় জাহিদের দিকে। পাতলা গোলাপি ঠোঁট নাড়িয়ে মেয়েটি তার রিনরিনে সুমিষ্ট কোকিল কন্ঠে বলে উঠে,"আমাকে কিছু বলছো?"

হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে- গল্পকন্যা

জাহিদ মেয়েটির চেহেরা দেখে খানিকটা হকচকিয়ে যায়।তারপর অবাক করে দিয়ে বলে,"সরি আপু,আই হ্যাভ এ মিসটেক,প্লিজ প্লিজ আপু কিছু মনে করবেন না।কাউকে বলবেন না,আপু প্লিজ!"

মেয়েটি তার মনোমুগ্ধকর বচন ভঙ্গিতে পুনরায় বলে,"ওকে!ইটস ওকে।"

জাহিদ অনতি বিলম্বে এস্থান ত্যাগ করে এগিয়ে চলে ফেরার উদ্দেশ্যে।

কিন্তু আটকে যায় রাত।কারো সুরেলা কণ্ঠের মোহে আটকে যায়।কারো বচন ভঙ্গি এতোটা অমায়িক হতে পারে সেটা কল্পনাতিত।কেবল মাত্র দুটো বাক্য ....!

জীবনের এতোগুলো বছর বন্ধুদের সাথে কাটিয়েছে, যারা মিনিটে সেকেন্ডে এর ওর উপর ক্রাশ খেয়ে চলেছে।তাদের সাথে থেকেও কখনো ক্রাশ খায়নি।ক্রাশ খাওয়ার মতো এমন অসাধারণ কিছু কখনো পায়নি ।যার জন্য বন্ধু মহলের সবাই ওকে বিটিএস বলে ক্ষেপাতো।

সবার উদ্দেশ্য তখন ওর একটাই বক্তব্য,"ক্রাশ কি খাওয়ার জিনিস...!"

কিন্তু সেই রাত, আজ এই মুহূর্তে নিজের অজান্তেই ক্রাশ খেয়ে বসে আছে ।
নাহ ক্রাশ বলে বিষয়টাকে হালকা করতে চায় না সে।
মুগ্ধ হয়েছে।

জাহিদ পিছনে ফিরে এভাবে রাতকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে, ডান হাতে ধরে টেনে নিয়ে চলে ফেরার পথে।

রাতের ঠোঁটের কোণে মুচকি হাসির সৃষ্টি হলো।এখান থেকেই শুরু এক অন্য রকম প্রেম কাহিনীর।

(ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)
হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে- গল্পকন্যা

হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে- পর্বঃ- ০২ পড়ুন/link/button




Post a Comment

অনুগ্রহ করে স্পাম করা থেকে বিরত থাকুন।
Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.