ধ্রবতারা
লিখেছেনঃ গল্পকন্যা (ছদ্ম নাম)
বাড়ি ফিরার পর সবাই ধ্রুবর অনেক য'ত্ন নিচ্ছে।তুর একবার উঁ'কি দিয়েছিলো।তবে মা চাচিদের জন্য চাইলেও আর কা'ছে যেতে পারছে না।
তুরের মা এবার তুরকে ক'ড়া'ক'ড়ি শা'স'ন করছে,নিজের য'ত্ন নিতে।সারাদিন সবার জন্য ধ্রুবর ঘর মু'খো হতে পারেনি।মনটা শুধু ছ'ট'ফ'ট করছে।
রাতেরবেলা ব'জ্র'পা'তের শ'ব্দে তুরের ঘুম ভে'ঙে যায়।
তাকিয়ে দেখে ওর পাশে বসে আছে ধ্রুব। ফোনের ফ্লা'শ অ'ন করে,ঘো'র লা'গা দৃ'ষ্টি'তে তাকিয়ে আছে। তুর ভে'বা'চে'কা খেয়ে যায়।
ধ'র'ফ'রিয়ে উঠে বসে ও'ড়'না খু'জ'তেছে আসেপাশে।
"ভু'ত দেখেছিস?এমন করছিস কেন?"
কিছু না পেয়ে বা'লি'শ জ'ড়ি'য়ে ধ'রে।
"কি হয়েছে আপনি এখানে এতে রাতে?কিছু লা'গবে?ক'ষ্ট হচ্ছে?ব্য'থা হচ্ছে কোথাও? "
"হুম হচ্ছে ,বউকে ছাড়া থাকতে ক'ষ্ট হচ্ছে।আমার বউকে লা'গবে।পারবি দিতে?"
তুর চোখ নামিয়ে নেয়।ধ্রুব তুরের হাতের বা'লি'শটা বা হাতে টে'নে নিজের কো'লে রেখে প্লা'স্টা'র করা ডান হাতটা রাখে।
লা'জু'ক তুর নিচের দিক থেকে আর মাথা তু'লে তাকাচ্ছে না।হাটু ভা'জ করে হাত দিয়ে জ'ড়ি'য়ে ধ'রে"ছে।
মনে মনে ভাবছে,"উ'ফ'ফ কি লা'গা'ম ছা'ড়া কথা বা'র্তা।"
"কি হলো..?পারবি না তো।"
"আমি কিভাবে দিব।"
"দেয়ার ই'চ্ছে থাকলে দেয়া যায়।"
"আ'নু'ষ্ঠা'নিক ভাবে বিয়েটা হয়নি।হয়ে নি'ক আগে।তারপর দেয়া না দেয়ার ব্যা'পা'র।"
"অ''নু'ষ্ঠা'ন না হলে কি বিয়েটা মি'থ্যে হয়ে যাবে?যত যা ই হোক,বিয়েটা হয়ে গেছে। আমার বউ আমার ই থাকবে।যখন চাইবো তখন ই বুঝে নিতে পারবো।কারো বা'পের সা'হ'স নেই কিছু বলার।"
তুর মনে মনে ভা'বছে,এই রাত দুপুরে আমার ঘরে আমাকে ল'জ্জা দিয়ে মা'র'তে এসেছে নাকি।
"আমার সে'বা করতে করতে খুব টা'য়া'র্ড হয়ে গেছিস তাই না?"
মাথা তুলে তাকাতেই ধ্রুবর চোখে চোখ প'ড়ে।খুব বুঝতে পারছে এ কথার মানে।কিন্তু চে'ষ্টা তো করেছে ,যেতে পারেনি।
"বাসায় আসার পর কি একটা বারের জন্য সা'মনে যাওয়ার প্র'য়ো'জন মনে করিসনি?"
"আমি ছাড়া ও তো আপনার সে'বার কোনো ত্রু'টি হচ্ছে না।"
অ'ভি'মা'ন নিয়ে বলে,"হুম।যেখানে তুই নেই সেখানে কি সূর্য উঠে না।"
"হুম তা ঠিক। কিন্তু আমি গিয়েছিলাম, তখন সবাই আপনাকে নিয়ে ব্য'স্ত ছিলো।"
"ভালো করেছিস ।এখন সা'জা ভো'গ কর।"
বা হাতে তুরের পা টে'নে সো'জা করে।তারপর চোখ ব'ন্ধ করে তুরের কো'লে শুয়ে পড়ে।
"সারাদিন ধ'রে মাথা ব্য'থা করছে।টি'পে দে।"
লা'জু'ক' তুরের সারা শ'রী'রে বি'দু'ৎ প্রবা'হী'ত হচ্ছে মনে হচ্ছে।
নিজেকে সা'ভা'বিক করে।কাঁ'পা'কাঁ'পা হাতে ধ্রুবর কপালে ম্যা'সে'জ করতে শুরু করে।
মাথায় চো'ট পাওয়ার ফলে চুল গুলো সব ফেলে দিতে হয়েছিল।এখন একটু একটু উঠেছে।সারা মাথায় আ'ল'তো করে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।প্রেয়'সী'র স্প'র্শে বরাবরের মতো পু'ল'কি'ত অ'নু'ভব করছে।
ল'জ্জা পেলেও জী'বনের প্রথম এক নতুন অ'নু'ভূ'তির সাথে পরি'চি'ত হচ্ছে তুর।এক মনে মাথা হাত বুলিয়ে যাচ্ছে।আর ধ্রুবর সারা মুখ'ম'ণ্ডল' স্ক্যা'ন করছে।এতো কাছ থেকে দেখার সু'যো'গ যে আর কখনো হয়নি।
ধ্রুব হঠাত চোখ মেলে তাকায়।"দেখেছিস চেষ্টা করলে সবই পারা যায়।"
ধ্রুবর তাকানোতে তুর অন্য দিকে মাথা ঘুরিয়ে ফেলে।মুচকি হাসি ঠোঁ'টে ঝু'লি'য়ে তুরের চি'বুক ধ'রে।"তাকা আমার দিকে।এভাবে লু'কি'য়ে লু'কি'য়ে দেখার কি আছে।তোর জি'নিস তুই যখন খুশি তখনই দেখতে পারিস।"
তুর চোখ ব'ন্ধ করে রাখে।শ'রী'রে ভ'য়া'ন'ক ক'ম্প'ন শুরু হয়েছে।তুরের ঘা'ড়ে হাত রেখে মুখ টা নি'চু করে।
প্রেয়'সী'র শ'রী'রের ক'ম্প'ন যত টের পাচ্ছে,ততই যেন আ'ক'র্ষ'ণ অ'নু'ভব করছে।কিন্তু অ'নু'মতি না নিয়ে,আগের মতো ভু'ল করতে চায় না।তবে দু'ষ্টু'মি করার লো'ভ ও সা'ম'লাতে পারছে না।
অ'সু'স্থ'তায় বে'ড়ে উঠা খোঁ'চা খোঁ'চা দা'ড়ি গুলো ঘ'সে দেয়, তুরের কো'মল ম'সৃ'ণ গালে।তুর আ'হ'হ করে উঠে।গালে হাত বুলাতে শুরু করে।গালটা জ্ব'লে যাচ্ছে মনে হচ্ছে।কতটা অ'স'ভ্য হলে এই রাতদুপুরে এমন করে।
"এটা কি হলো।"
"কেন তুই কি ভেবেছিলি?তোকে আ'দ'র করবো?"
"ব্য'থা পেয়েছি তো।"
গালে হাত বুলিয়ে বলে,"এমন ব্য'থা যে এখন থেকে রোজ পেতে হবে।"
তুর আবারও ল'জ্জা'য় চোখ ব'ন্ধ করে ফেলে।অন্য দিকে তাকিয়ে বলে,"যান ঘুমান গিয়ে,আমি ঘুমাবো।"
"ঘুমাতেই তো এসেছি।বউয়ের সাথে।"বলেই চোখ ব'ন্ধ করে ফেলে।আর কিছু ক্ষণের মধ্যে ঘুমের দে'শে পারি জমায়।
তুর কো'মল হাতে আ'ল'তো'ভাবে মাথায় ক'পা'লে হাত বুলিয়ে চলেছে।এভাবে কখন যে হে'লা'ন দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে টে'র পায়নি।সকালে ওঠে দেখে বিছানায় শুয়ে আছে।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে দশটা বাজে।
দৌ'ড়ে ধ্রুবর রুমে যায়।ও'ষু'ধ খাওয়ার সময় চলে গেছে।গিয়ে দেখে ধ্রুব বসে আছে।
"ও'ষু'ধ খেয়েছেন?মা বড়ো, মা ওনাদেরকে গ'ত'কালের টা বলে দিয়েছিলাম।কিন্তু সকালের ও'ষু'ধের কথা ওদের বলতে মনে নেই।রাতে ঘুমোতে দেরি হয়েছে দেখে ওঠতে পারিনি।এক বেলার ও'ষু'ধ মিস হলো,এখন কি হবে।ই'স'স....কেন যে..."
"হয়েছে বাবা দ'ম নে এবার।এতো উ'ত্তে'জি'ত কেন হচ্ছিস।আমি খেয়ে নিয়েছি।"
"আপনি এই হাত নিয়ে নিজে নিজে করেছেন।কাউকে ডেকে নিতেন।"
"আরে কোনো ব্যপার না।সবাই এখানে ছিলো,হে'ল্প করতে চাইছিলো।এখন তো আগের চেয়ে ব্য'টার,তাই আমি ই বলেছি পারবো।ফ্রে'শ তো হো'স'নি মনে হচ্ছে। যা ফ্রে'শ হয়ে নাস্তা করে আ'য়।ছাদে যাবো।"
তুর ও বা'ধ্য মেয়ের মতো তাই করে।
___________
চলে যায় তিন মাস।
এই কদিনে দুজনের দূর'ত্ব কমে গেছে।আর ভালোবাসা হু'র'হু'র করে শুধু বেড়েই চলেছে।
হু'ট করেই ধ্রুব তুরকে কাছে টে'নে নিয়ে ছুঁ'য়ে দিতে চায়।তুরের কথা ভেবে আবারও দূ'রে স'রে যায়।আর ল'জ্জা'ব'তি তুর ল'জ্জা পেয়ে ছু'টে পা'লা'য়।তবে,আগের মত রুমের ভেতর লু'কি'য়ে থাকে না।
ধ্রুবর হাত ঠিক হয়ে গেছে।সব ক্ষ'ত শুকিয়ে এখন পু'রো'পু'রি সু'স্থ সে।
এদিকে জিসানের পরিবারের সবাই ধ্রুব তুরদের বাড়িতে তন্নিকে দেখে।আর তন্নিকে জিসানের জন্য পছন্দ করে।জিসান ও মত দেয়।সে অ'নু'যা'য়ী ওদের বিয়ে ঠিক করা হয়েছিলো।আর দুদিন বাকি ওদের বিয়ের।
তারপরের সপ্তাহে ধ্রুব তুরের পু'ন''রা'য় বিয়ে ঠিক করা হয়।সে মো'তা'বে'ক এতো দিন আবার সব নতুন করে গো'ছ'গা'ছ করা হয়েছে।
ছেলে মেয়েরা সব তন্নির বিয়ে উ'প'ল'ক্ষে এক সপ্তাহ আগেই চট্টগ্রামে চলে গেছে।
ধ্রুব যেতে পারেনি ওদের সাথে।এ'জে'ন্সি'তে ওর কিছু জ'রু'রি কা'জ আছে।আরো তিন মাসের ছু'টি নেয়ারও চে'ষ্টা করছে।
তুরের মন কিছুতেই যেতে সা'য় দিচ্ছিলো না।তন্নি সমানে কান্না কাটি শুরু করে দিয়েছে। এক প্র'কা'র বা'ধ্য হয়ে তুরকে সবার সাথে যেতে হয়েছে।যাওয়ার আগে মনে হচ্ছিলো কি যেন রেখে চলে যাচ্ছে।
এত দিন এক সাথে থেকে,দুজনের ভালবাসা গ'ভী'র থেকে গ'ভী'র হয়ে গেছে।
এই এক সপ্তাহের দূ'র'ত্ব দুজনকেই পা'গ'ল করে তুলেছে।কাছে পাওয়ার তৃ'ষ্ণা যেন দ্বি'গু'ণ হয়ে গেছে।কখন একজন আরেকজন কে দেখবে সে আশায় ব্যা'কু'ল হয়ে আছে।
হলুদের দিন সন্ধ্যায় বড়দের সাথে ধ্রুব ও আসে। হলুদের ড্রে'স কো'ড অ'ফ হো'য়া'ই'ট হওয়ায়,পড়নে তার অ'ফ হো'য়া'ই'ট পান্জাবি ।তুর ও অ'ফ হো'য়া'ই'ট শাড়ি পড়েছে।
এতো চা'ক'চি'ক্যে'র মাঝে দুজন দুজনকে দেখে আবারও মু'গ্ধ হয়ে যায়।কেউ কারো চোখ থেকে চোখ স'রাতে পারছে না।চোখে চোখেই যেন কদিনের অনেক না বলা কথা বলে ফেলছে।কাছে যেয়ে কথা বলবে তার আগেই,তন্নির ডাকে স্টে'জে চলে যেতে হয়।
তুর একটু ফাঁ'কা পেয়ে ধ্রুবর কাছে যেতে নেয়।অ'মনি কোথা থেকে মে'য়ে'দে'র দ'ল এসে টা'না'টা'নি শুরু করে।
সবার ডাকে আবার ও ওদের সাথে মিলে যেতে হয়।
একজন আর একজনকে কা'ছে পাও'য়া'র সু'যো'গ কিছুতেই হয়ে উঠছে না।
এদিকে ধ্রুবর আর ত'র স'ই'ছে না।বউটাকে কত সুন্দর লাগছে শাড়িতে।
নি'রি'বি'লিতে একটু কাছে পাবে দূ'রে থাক,কথা পর্যন্ত বলতে পারছে না।বারবার চে'ষ্টা করেও কোনো লা'ভ হচ্ছে না।এই বাড়িতে থেকে বউ কাছে পাও'য়া'র জো নেই।দূর থেকে দেখেই মন ভ'রাতে হবে,তাছাড়া মনে হয় আর কিছু ক'পা'লে নেই।
এভাবেই ব্য'স্ত'তা হলুদের রাতটা কে'টে যায়।অ'নু'ষ্ঠা'ন' শে'ষ হতে হতে অনেক রাত হয়।ক্লা'ন্ত হয়ে যে যার মতো যেখানে জা'য়'গা পায়, সেখানে শুয়ে পড়ে।
বিয়ের দিন সকাল থেকে বাড়িতে প্র'চু'র ভি'র আর হৈ'চৈ।
রাতে দেরিতে ঘুমানোর ফলে,,ধ্রুবর ঘুম ভা'ঙে দেরিতে।ঘুম থেকে উঠেই শুনে, তুর তন্নি ফাহিমকে নিয়ে বে'ড়িয়ে পড়েছে পা'র্লা'রের উ'দ্দে'শ্যে।
ধ্রুবর মে'জা'জ'টা'ই খা"রা"প হয়ে গেছে।ঘুম থেকে উঠেছে কই এখন একটু বউটাকে কাছে পাবে,তা না চোখের সামনেও দেখতে পারছে না।
ফাহিমকে ফোন লা'গা'য়'।
"হ্যাঁ....ভাইয়া,বলো।"
"তন্নিকে দে তো।"
"দিচ্ছি।"
তন্নি ফোন হাতে নিতেই শুরু হয় ঝা'ড়ি।
"কিরে... বিয়ে হচ্ছে তোর আর জিসানের।তুই আমার বউকে নিয়ে টা'না'টা'নি করছিস কেন?কতগুলো দিন তোর জন্য বউ ছা'ড়া থা'ক'ছি হি'সে'ব আছে? ঠিকি তো ডেং'ডেং করতে করতে জামাইর হাত ধ'রে চলে যাবি।তখন কি ওকে ছা'ড়া থাকবি না।তো এখন কেন এই অ'ব'লারে শা'স্তি দিচ্ছিস,বোন।"
"আরে ভাইয়া টে'ন'শন নিও না,আমি আমার সাথে তুর কে ও নিয়ে যাবো। ওকে ছাড়া জী'ব'নেও যাবো না। একেবারে বউভাতের দিন আমার সাথে ফিরবে।নিজ দ্বা'য়ি'ত্ব্যে ব্যা'গ গু'ছিয়ে রেখেছি।আমার আ'দ'রের ছোট বোন প্লা'স বে'স্ট ফ্রে'ন্ড না।ওকে ছা'ড়া চলে বলো।তুমি কদিনের জন্য আমার কো'ল'বা'লি'শটা নিয়ে নেও।আচ্ছা,এখন রা'খি দুজনে আজ প্র'চু'র সা'জ'বো।"
"আরে শো'ন শো'ন।তোর বিয়ে তুই সা'জ'বি ঠিক আছে।ও কেন সা'জ'বে? একদমই না।একেবারে আমাদের বিয়েতে সা'জ'বে।"
"আমার বিয়ে উ'প'ল'ক্ষে তোমার কোনো নি'ষে'ধ শুনছি না।আর তুর দু'নি'য়া'তে জ'ন্মে আগে আমার বোন হইছে,পরে তোমার বউ হইছে।তোমার কথার আগে আমার কথা শুনবে।বুঝছো তো ভাইয়া .... ,আ'ল'বি'দা। "কল কে'টে যায়।
ধ্রুবর মাথা হ্যাং হয়ে গেছে,এই মেয়ের কথা শুনে।আমার বউ অথচ আমি ছাড়া সবার অ'ধি'কা'র আছে।হা'য় ক'পা'ল.....
চলবে....