ধ্রুবতারা-গল্প কন্যা পর্ব-৩৭

ধ্রবতারা 
লিখেছেনঃ গল্পকন্যা (ছদ্ম নাম)



"যে কথা শোনালো বোন আমার, বউকে ছাড়া আরো কদিন কা'টাতে হয় আল্লাহ জানে।"

পূর্বেই এমন কিছুর আ'শং'কা করেছে।তাই পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।শুধু তন্নির বিয়ে পর্যন্ত অপে'ক্ষা।

দুপুর ১টায় বউ নিয়ে  পার্লার থেকে ফিরে।সবাই দাঁড়িয়ে আছে কনে সাজ কেমন হলো দেখবে বলে।
বাড়ির লোকজন সবাই তো দুজনের প্র'সং'শা'য় পঞ্চ'মু'খ'।তন্নিকে বিয়ের সাজে পুরো অপ'স্ব'রী লাগছে।

আর তুর তো তুর ই।মেরুন লেহেঙ্গা পরে,লম্বা খোলা চুলে,পুরো দ'স্তু'র পার্টি লুকে জাস্ট অসাধারণ লাগছে।

ধ্রুবর তো চোখ ফেরানো দা'য় হয়ে পড়েছে।
"ওফফ... বউটা আমার এতো সুন্দরী কেন?"

তুর তন্নিকে নিয়ে তন্নির রুমে চলে গেছে।সবাই ওদের ঘিরে ধ'রেছে।কাছে যাওয়ার উপায় নেই।
ধ্রুবর মে'জা'জ গ'র'ম হচ্ছে।

কিছুক্ষণ ঘুরে ফিরে,তন্নির রুমে উঁ'কি দেয়।লোকজন তু'ল'না'মূ'ল'ক কম দেখে তুরকে ডাকে।
"তুর,এ দিকে আ'য় তো।"

ভাবি আপুরা হাসাহাসি শুরু করে দেয়।

সবার সামনে ধ্রুবর এমন ডাকে তুর ল'জ্জা পেয়ে যায়।
"জি ভাইয়া,বলুন কিছু লাগবে?"

আরো একবার হাসির রো'ল পড়ে ঘর জুড়ে।একজন  ভাবি তো তন্নিকে বলে,"কিরে এরা দুজন তো এখনো ভাই বোনের সম্পর্কে আ'ট'কে আছে।এদের দিয়ে নতুন প্র'জ'ন্ম আসবে কিভাবে।"

সবাই আবারও হোহো করে হেসে উঠে।

ধ্রুবর মে'জা'জ আরও খা'রা'প হয়ে যায়।তুরের ভাই ডাকের জন্য।সবাইকে বলতে ইচ্ছে হয় "সময় হলে দেখে নিয়েন নতুন প্র'জ'ন্মের অ'ভা'ব হবে না।"

তুর ল'জ্জা পেয়ে দৌড়ে বের হয়ে যায়।ধ্রুব দ্রুত গ'তিতে গিয়ে ওর হাত চে'পে ধ'রে।টা'নতে টা'নতে ছাদে এনে ছাড়ে।

"কি ব্যপার নিজেকে খুব স্বা'ধী'ন'চে'তা ভাবা হচ্ছে না?আমার কোনো পা'ত্তাই নেই।এতো এতো সুন্দরের ভিরে আমাকে চোখে লাগছে না তাই না?"

বলছে আর এক পা করে এগোচ্ছে। অপর দিকে তুর শুধু পেছাচ্ছে।

"না মানে আমি তো আসতে চেয়েছি,কিন্তু এতো মানুষের মাঝ থেকে ছু'টে আসা যায়,বলুন।কি বলবে সবাই।তাছাড়া তন্নি আপু তো জো'কের মত আমাকে ওর সাথে আ'ট'কে রাখে।আমি কি করবো।"

কথা বলতে বলতে তুরের পিঠ দেয়ালে আ'ট'কে যায়। ধ্রুব ও একদম কাছে এসে দুপাশে দু'হাত রেখে আ'ট'কে দেয়।যেন পা'লা'তে না পারে।

"তাই বুঝি সবার সামনে ভাই ডেকে ফেলবি?আমি তোর ভাই হই ,হুম.....? 

ধ্রুবর পান্জাবির দুটো বো'তা'ম খো'লা। তুর চোখ নামিয়ে সেই উ'ন্মু'ক্ত বুকে তাকিয়ে থাকে।

"ইয়্যএএ....মানে.... "

চিবুকে ধ'রে উপরে তুলে,তুরের চোখের দিকে তাকায়।
"কি মানে।তোর বর যদি তোর ভাই হয়,তোর বাচ্চাদের সম্পর্কে কি হবে ধা'র'ণা আছে?আমাকে হাসির পাত্র বানানো হচ্ছে?"

কথা গুলো তুরের কানে একদম ঝং'কা'র তুলে দিয়েছে।ল'জ্জা'য় চোখ ব'ন্ধ করে নিয়েছে।

"তুই নাকি তন্নির সাথে ওর শশুর বাড়ি যাবি?"

"হুম"

গাল চে'পে ধ'রে,"আমি বলেছি যেতে,অ'নু'ম'তি নিয়েছিস?"

"না মানে আপু খুব করে বলছিল তো তাই।"

এবার একেবারে মুখের উপর ঝুঁ'কে পড়ে,"তাই... ,কি? বিয়ে পড়ানো হলে,আমি আর এক মু''হূ'র্ত এখানে থাকবো না।যেখানে আমার এতো সুন্দরী বউকে নিজের কাছে পাবো না,সেখানে থাকার কোনো দ'র'কা'র নেই।বুঝেছিস?কাউকে কিছু জানানোর প্রয়োজন নেই।চুপ করে আমার গাড়িতে উঠবি।আমি অ'পে'ক্ষা করবো।মনে থাকবে?"

ধ্রুবর এই অ'ধি'কার মা'খা'নো 'দু'ষ্টু কথায়,তুরের সারা শ'রী'রে শি'হ'র'ণ বয়ে যাচ্ছে।

"মনে থাকবে।কিন্তু কাউকে কিছু না বলে গেলে  কি ভাববে?"

"সেটা আপনার না ভাবলে ও চলবে।"

"হুম "

"এতো সুন্দরী হোলি কেন?কিছু হলে তো আবার আমাকে দো'ষ দিয়ে জ্ঞা'ন হা'রাবি।"
তুর দুহাতে মুখ ঢেকে ফেলে।

"তুর.....। একটা কথা বলার ছিলো?"

মুখম'ণ্ড'ল থেকে হাত না সড়িয়ে বলে,"হু..."

"মুখ থেকে হাত সরা,তোর 'ল'জ্জি'ত মুখটা দেখতে যে আমার খুব ভালো লাগে।"
তুর মাথা নেড়ে  না বলে।

"ঠিক আছে।তাহলে আমি বললাম না।"

চ'ট করে হাত সরিয়ে বলে,"নাহ...বলুন।আমি শুনবো। "

তুরের দু গালে দু'হাত রেখে মুখটা তুলে।চোখেচোখ রাখে,"লাভ ইউ বউ।আই লাভ ইউ সো মাচ।অনেক অনেক ভালোবাসি তোকে।পৃথিবীর মূল্য'বা'ন সবকিছুর চেয়ে মূল্য'বা'ন তুই আমার কাছে।আমার হৃদয়ের আকাশের ধ্রুবতারা হবি তো?যদি ও আমি জানি তবুও আর কতো অপে'ক্ষা'য় থাকবো তোর মুখ থেকে  শোনার জন্য।আমার ভালোবাসা,আমার ব্যা'কু'ল'তা কি তোর চোখে পড়ে না?আর পারবো না ধৈ'র্য্য ধ'রতে।আজকেই যা হোক একটা কিছু জানাবি।আমার পরে সবাই বিয়ে করে সংসার গুছিয়ে ফেলেছে।আর আমি শা’লা এখনো,বউয়ের মুখ থেকে ভালবাসি শুনতে পেলাম না।"

তুর এ কথা শুনে হেসে দেয়।মনের মধ্যে সুখের অনু'ভূতি খেলা করছে।মনে অনেক সা'হ'স স'ঞ্চ'য় করে,ধ্রুবর চোখের দিকে তাকায়।মনের সব কথা বলে দিবে।ধ্রুব দু'ষ্টু'মি ভরা চোখে এক দৃষ্টিতে অ'ধী'র আগ্র'হী হয়ে তাকায় তুরের চোখে। 

"আমি তো সেই কবে থেকে মনের সকল মান অভি'মা'ন এক পাশে সরিয়ে,আপনার হৃদয়ের আকাশের ধ্রুবতারা হওয়ার অপে'ক্ষা'য় আছি।"

"আর কিসের অপে'ক্ষা'য় আছিস?"

"আপনার মুখে শোনার অপে'ক্ষা'য়।"

"শুধু আপনিই শুনতে চান?আমাকে শুনিয়ে একটু ধন্য করুন মহারানী।"

তুর চোখ ব'ন্ধ করে ফেলে,"কিন্তু আমার ল'জ্জা করে,বলতে পারবো না।"

"হ্যাঁ...,ভালোবাসি বলতে কারো ল'জ্জা করে।এতো ল'জ্জা তোর আসে কোথা থেকে? এসব আমি বুঝি না।ল'জ্জা ট'জ্জা সব সাইডে চা'পা,তারপর বল আমি এক্ষুনি শুনবো।আজকে আমি জেনেই ছা'ড়বো।"

তুর পড়েছে বি'পাকে।যতই চেষ্টা করছে বলার,মুখ দিয়ে কোনো কথা ই বের হচ্ছে না।

"ইয়্যা মানে.. আমি...আমি  আপনাকে.... 

"আপু তুই আর ভাইয়া এখানে কি করছিস?ভাইয়া তুমি ওকে এভাবে ধ'রেছো কেন?"

চম'কে দুজন দুপাশে ছি'ট'কে যায়।

"তুহিন তুমি আসার আর সময় পেলে না।আমি তোমার আপুর সাথে ইম'প'র্টেন্ট কথা বলছিলাম।পরে এসো।"

"তাই বুঝি এভাবে আ'ট'কে রেখেছো?"

"হুম।যাও পরে এসো। "

"আরে তোমাদের ইম'পর্টে'ন্ট কথা পর বলো।সারা বাড়ি খুঁ'জে,পরে এখানে এসেছি।বর এসে পড়ছে,গেটে দাঁড়াতে হবে তো।দ্রুত আপুকে লাগবে।বুঝেছো।চল চল আপু।সবাই তোকে খুঁ'জছে।"

তুর অ'স'হা'য় হয়ে ধ্রুবর দিকে তাকিয়ে চলে যায়।

"ধ্যাত,শা'লার এদের আসেপাশে থেকে কিছু হবে না।"

এদিকে বর এসেছে গেটে। তুর খুব চা'পা'বা'জি করছে।ধ্রুব তো এসব দেখে অবাক।এই মেয়ে একটু আগে ভালবাসি বলতে গিয়ে হাজার বার তো'ত'লিয়েছে।

খাওয়া দাওয়া,বিয়ে পড়ানো সব শেষ হয়।এদিকে তুর ধ্রুবর সিগ'না'ল পেয়ে গাড়িতে চড়ে বসে।তুর গাড়িতে বসা মাত্র এক'টা'নে,এ বাড়ির ত্রি'সী'মা ছে'ড়ে ছু'টে চলে।

"কোথায় যাচ্ছি আমরা?"

"গেলেই দেখতে পাবি।"



চলবে.....