আমাদের সাথে সোস্যাল মিডিয়ায় যুক্ত থাকতে আমাদের ফেইসবুক পেইজে লাইক দিন Facebook Follow us!

ধ্রুবতারা-গল্প কন্যা পর্ব-০৮

Estimated read time: 4 min

ধ্রবতারা 
গল্প কন্যা (ছদ্ম নাম)



হঠাৎ ই ধ্রুব  তুরের কানের কাছে ঝুকে আসে,তুর চোখ বন্ধ করে ফেলে বুকের ভেতর থেকে হার্ট টা মনে হয় লাফিয়ে বের হয়ে যাবে....নিশ্বাসের গতিবেড়ে গেছে... 

ধ্রুব : ফিসফিসিয়ে বললো... শাড়িটা ঠিক করো...
আমি চাই না একজনের আমানত অন্য কেউ দেখোক........

ধ্রুব সরে গেল ,কিন্তু এ কথা শুনার সাথে সাথে তুর চোখ মেলে তাকালো....তাড়াতাড়ি নিজের পেটের দিকে হাত দিলো ,কখন যে পেটের কাছের পিনটা খুলে গেছে,দ্রুত ই আসেপাশে দেখছে কেউ দেখছে কি না...। ধ্রুব অন্য দিকে ফিরে ই বললো কেউ দেখেনি ঠিক করে ফেলো।তুর আবারও তব্দা খেয়ে গেলো,তাড়াতাড়ি অগোছালো শাড়ি ঠিক করলো সব দিক দিয়ে দেখে দেখে।উফফ...... সব সময় কেন এমন ঘটনা ওনার সামনেই হয়।

ধ্রুব : শোন মৃধা বাড়ি হচ্ছে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী তিন তলা একটি বাড়ি।কখনো  শুনেছিস টিন - কাঠ দিয়ে তিন  তলা বাড়ি নির্মানের কথা? এই বাড়িটি টিন ও কাঠের সংমিশ্রণে তৈরী একটি তিন তলা বাড়ি।এটা বাংলাদেশের একটা ঐতিহ্য।বাড়িটির আশেপাশের পরিবেশ ও যথেষ্ট মনোরম সবুজে ঘেরা,তার ওপর মৃধা বাড়ির পাশে বয়ে গেছে এই অপরূপ পদ্মা নদী। 
জানিস এক তলা ও দু তলা টুরিস্টদের জন্য উন্মুক্ত থাকে,আর তিন তলায় বাড়ির মালিক নিজে থাকে।এই বাড়িটি ২৪ঘন্টা উন্মুক্ত থাকে টুরিস্টদের জন্য।বাড়িটি যেমন সুন্দর তেমনি বাড়ির আশেপাশে ও প্রচন্ড সুন্দর ঠিক বাড়িটির মত।বাড়ির প্রবেশ মুখেই দেখতে পাবি সদূর জাপান থেকে আনা ফুলের টব।এমন নানা ধরনের আকর্ষণীয় কিছু না কিছু পাবি।বাড়িটির সরু সরু বাড়ান্দা আছে  সেগুলো সাজানো হয়েছে ছোট ছোট ঝুলন্ত টব দিয়ে। 
আমরা সব সময় পার্ক সমুদ্রে পাহাড়ে ছুটি মাঝে মাঝে দেশের এই ঐতিহ্যবাহী স্থান গুলো ও দেখতে হয়। বুঝলি?

তুর অপলক ধ্রুবর দিকে তাকিয়ে দেখছে ,ওর কথা শুনছে আর ভাবছে যে একটা লোক কিভাবে এতো সুন্দর করে বিশ্লেষণ করতে পারে। ওনি চাইলে তো কোনো পার্কে নিয়ে ঘুরাতে পারতো...কথায় আছে যার মন সুন্দর তার চোখে সবই সুন্দর।তাই হয়তো ওনার চোখে সবই সুন্দর।একজন পাইলট কতো দেশ ঘুরে কতো দৃশ্য দেখে অথচ তার চোখে কিনা তার দেশের একটি তিন তলা বাড়ি প্রচন্ড সুন্দর।ওনি কেন এতো পারফেক্ট...হলো?

কি সুন্দর করে হাসে... হাসলে ডান গালে ছোট একটা গর্তের সৃষ্টি হয় যা তার সৌন্দর্যকে দিগুণ করে দেয়।আর জাম রাঙা ঠোঁট দুটি... তুর নিজেই নিজেকে বকে.... তোর চোখ নষ্ট হয়ে গেছে কোথায় কোথায় নজর দিচ্ছিস আজকাল,তার পর আনমনেই হাসে... ধ্রুবর দিকে তাকিয়ে।

হঠাৎই ধ্রুবর চোখ যায় তুরের দিকে দেখে ওর দিকে তাকিয়ে ই লাজুক হাসি দিচ্ছে,ধ্রুব বুঝতে পারল প্রেয়সী এতোক্ষণ কোথায় ব্যস্ত ছিলো,তাই নিজে ও একটা বাঁকা হাসি দেয়,ভ্রু উচিয়ে কি জিজ্ঞেস করে কিন্তু তুরের হাসি গায়েব হয়ে যায় মাথা নাড়িয়ে কিছু না বলে,আর চোরের মতো ধরা পড়ে বুক ধকধক করে।দ্রুত ই অন্য দিকে তাকায়.... 

এভাবেই দুজনের চোখাচোখি  হতে হতে  পৌঁছে যায় মৃধা বাড়ি....... 

খুটিনাটি সব কিছুই দেখছে বাড়িটির,সবাই মিলে কিছু ছবি ও তুলেছে ,তুর বাড়িটির একটি ভিডিও  করেছে।সত্যি ই খুবই সুন্দর... বাড়িটি দেখার পর ওরা রাজা বল্লাল সেনের দিঘি ওটাকে রামপালের দিঘি ও বলা যায় সেখানে ও ঘুরে এসেছে।মাওয়া ঘাটে  যখন ফেরে,তখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে।ওখানে মাওয়া রিসোর্ট আছে সেই রিসোর্টে ও যায় ওদেরকে  নিয়ে সেখানে খাওয়া দাওয়া করে,আশাপাশটা ঘুরে ফিরে দেখে.... 

এদিকে ধ্রুবর ফোনে বাবা চাচার জিসানের কল আসছে তো আসছে... এক বার কল ধরে আসছি বলে তুরের আর ওর ফোন অফ করে রাখে।তুর জানতে চাইলে কিছু না বলে। 

জিসান বিকাল ৫টায় ওর মা বাবা বড় বোনকে নিয়ে আসে ধ্রুবদের বাড়িতে।জহির কবির দুই ভাই গেস্টদের জন্য বাসায় ছিলো। ওনারা বরাবর ই অথিতি আপ্যায়নে খুবই আন্তরিক।

ওনাদের আন্তরিকতা দেখে জিসানের ফেমিলি খুব পচ্ছন্দ করেছে।জিসানের বাবা একজন ব্যবসায়ী নিজেদের ব্যবসা থাকা সত্ত্বেও জিসান নিজের যোগ্যতায় কিছু করতে চাইতো তাই চাকরি করা।

এটা শুধু জিসান না জিসান ধ্রুবর ক্লোজ ফ্রেন্ড সবাই।সবার একটাই কথা আমার বাবার  কি আছে তাতে আমার কি,আমার কি আছে সেটা ইমপর্টেন্ট,আমার নিজের যোগ্যতায় নিজের জায়গা তৈরী করবো। 

তো দুই পরিবারের মাঝে অনেক কথাই হচ্ছে সবাই ধ্রুব কে খুজছে ধ্রুবর ফ্রেন্ড অথচ ধ্রুব নেই ওনারা কি ভাব্বেন তার ওপর বারবার বলছে কই আপনাদের বাড়ির একমাত্র মেয়ে তাকে ডাকেন দেখি কত বড়ো হয়েছে।
জিসান ও ফোন দিচ্ছে প্রথম কলটা গেলে ও পড়ে আনরিচেবল বলছে।
ফোনে পাচ্ছে না দেখে ধ্রুবর মা পরিবেশ রক্ষার্থে বলছে তুহিন অনেক কান্না কাটি করছিল ঘুরতে যাবে বলে,তাই ওদের দুজনকে নিয়ে একটু বেরিয়েছে ঢাকার রাস্তা ঘাট সম্পর্কে তো জানেনই তাই হয়তো দেরি হচ্ছে।
জিসানের বাবা ধ্রুবকে ছাড়া ই 
বলতে শুরু করলেন :
দেখেন ভাই সাহেব আমি ধ্রুবকে খুব স্নেহ করি খুব ভালো ছেলে আমার কথা খুব মানে,ওর সামনে ই বলতো চাইছিলাম,এখন যেহেতু ও নেই তো ওকে ছাড়া ই বলতে হচ্ছে। আসলে আমাদের পরিবার সম্পর্কে তো কিছুই অজানা না আপনাদের।আপনাদের পরিবারটা ও আমার খুবই পছন্দ এই যুগে কোথায় এমন যৌথ পরিবার আছে।সবাই যার যার মতো থাকে ভাইয়ে ভাইয়ে মিল নেই,বিভিন্ন ঝামেলা বিভিন্ন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়,সেখানে আপানারা পরিবারটাকে এতো সুন্দর ভাবে মেইনটেইন করছেন।আর আপনাদের আন্তরিকতায় আমি মুগ্ধ।যানেন ইতো এক মেয়ে এক ছেলে আমার।মেয়ে শশুর বাড়ি যাওয়ার পর বাড়িটা খালি খালি লাগে ,জিসানকে তিন বছর ধরে বলছি বিয়ে কর বিয়ে কর একটা পুতুলের মতো মেয়ে নিয়ে আসি ও কিছুতেই রাজি না।বলে বয়স হয়নি মনের মতো কাউকে পেলে করবো না হয় করবো না। বলেন তো এটা কোনো কথা। আমার আবার হার্টের প্রবলেম কবে জানি পরপার হয়ে যাই। তাই ছেলের বউয়ের মুখটা দেখে যেতে চাই। ছেলের আমার এতো দিনে একটা মেয়ে কে মনে ধরেছে।তাই কি মনে করবেন না ভেবেই চলে এসেছি।আসলে আমি আপনাদের মেয়ের কথা বলছি,জিসান মেয়েটাকে প্রথম দিন দেখেই মাকে গিয়ে বলে আর আমার কানে আসতেই আমি দেরি করিনি।ভাই আমরা আমরা ই তো সব জনা শুনার মধ্যে আছে,ঘরের মেয়ে ঘরে ই থাকবে,আমি আপনাদের মেয়ে কে আমার ছেলের বউ করতে চাই,আমার আর একটা মা করতে চাই।দয়া করে আপনাদের মতামতটা জানিয়ে চিন্তা মুক্ত করুন।ভেবেছিলাম যে ধ্রুব থাকলে একেবারে কথা পাকা করে যাব,তাই জিসান আগে থাকেই ধ্রুকে বলে রেখেছিল ফোনে,কিন্তু ওতো নেই।এখন আপনারা যদি....... 



চলবে....


إرسال تعليق

অনুগ্রহ করে স্পাম করা থেকে বিরত থাকুন।
Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.