আমাদের সাথে সোস্যাল মিডিয়ায় যুক্ত থাকতে আমাদের ফেইসবুক পেইজে লাইক দিন Facebook Follow us!

হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে- গল্পকন্যার ধারাবাহিক প্রেমের গল্প ( পর্ব-০৯ )

রাত বেডে বসে আছে।পরনে শুধু ধূসর রঙা টাউজার। আয়েশা বেগম রাতের শরীর মুছিয়ে দিয়ে বের হয়েছে ক্যান্টিনের উদ্দেশ্যে। এমতাবস্থায় পাপড়ির আগমন ঘটে কেবিনে।...
হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে- গল্পকন্যার ধারাবাহিক প্রেমের গল্প ( পর্ব-০৯ )
হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে- গল্পকন্যার ধারাবাহিক প্রেমের গল্প ( পর্ব-০৯ )


হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে
পর্বঃ ০৯
গল্পকন্যা


(দীর্ঘ দিনের গেপ যদি কেউ পূর্বের কাহিনী ভুলে গিয়ে থাকো পড়ে নিতে পারো। ইনশাআল্লাহ যথাযথ রেসপন্স পেলে নিয়মিত দেয়ার চেষ্টা করবো।)


রাত বেডে বসে আছে।পরনে শুধু ধূসর রঙা টাউজার। আয়েশা বেগম রাতের শরীর মুছিয়ে দিয়ে বের হয়েছে ক্যান্টিনের উদ্দেশ্যে।

এমতাবস্থায় পাপড়ির আগমন ঘটে কেবিনে।

রাতের বেডের কাছে যায়।পাপড়ির এমন আকস্মিক আগমনে রাতের বাকরুদ্ধকর অবস্থা ।

পাপড়ি রাতের পাশে দাঁড়িয়ে সরাসরি রাতের কপালে হাত রাখে,হাতের এ পিঠ ও পিঠ দুই পিঠ দিয়েই চেক করে,বুঝতে পারে এখন শরীরে জ্বর নেই।কপাল ঠান্ডা,জ্বর নেমে গেছে।

পাপড়ির এই সামান্য কয়েক সেকেন্ডের কাজটাতেই রাতের ভেতর উলোটপালোট হয়ে যাওয়ার উপক্রম।পাপড়িকে নিজের করে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে যেন।

রাত শুধু অবাক হয়ে পাপড়িকে দেখে-ই যাচ্ছে।পাপড়ির আকস্মিক আগমন,এভাবে স্পর্শ করা ওর কাছে স্বপ্নতূল্য মনে হচ্ছে।

পাপড়ির অস্থিরতা কাটে,কিছুটা সাভাবিক হয়ে রাতের চোখের দিকে তাকায়।রাত নিজেও চোখ সরিয়ে নিচ্ছে না।চেয়ে আছে এক দৃষ্টিতে।

পাপড়ি রাতের মুখশ্রীতে চোখ বুলায়,চোখের নিচটা কালো হয়ে গেছে।মুখটা কেমন শুকনো শুকনো লাগছে।চোখ পড়ে রাতের উন্মুক্ত হালকা লোমশ বুকে ও পেটে।উদোম পৌরষ্য দেহ দেখে কিছুটা লজ্জিত বোধ হচ্ছে।কিন্তু বুকে ও পেটের কালসিটে দাগগুলোয় চোখ পড়তেই পাপড়ির চোখ ভিজে উঠে, নিজেকে বড্ড অপরাধী মনে হচ্ছে।

কাঁদো কাঁদো গলায় বলে,"আমাকে ক্ষমা করে দিও রাত।আমার জন্য আজকে তোমার এই অবস্থা।নিজেকে বড্ড অপরাধী মনে হচ্ছে ..."

পাপড়ির জল ভরা মায়াবী চোখ দেখে রাতের মায়া হচ্ছে।ভিষণ মায়া হচ্ছে।

পাশের চেয়ারে পাপড়িকে বসতে ঈশাড়া করে।তারপর মুখোমুখি বসে,ঠান্ডা ও কোমল স্বরে বলে,"আপনি কেন ভাবছেন আমি আপনাকে ভুল বুঝেছি।আপনি আমার কাছে সদ্য ফোটা ফুলের মতো পবিত্র।যা দেখে আমি প্রানবন্ত হই,চমৎকার উৎফুল্লতা পাই।আর আপনি ক্ষমা চাইছেন কেন?আপনার কোনো দোষ নেই।প্লিজ এভাবে অযথা চোখের পানি ফেলবেন না।চোখের পানি ফেলার জন্য আমাদের জীবনে অনেক কারণ রয়েছে..."

রাতের কথা শুনে পাপড়ির ভেতরে হুহু করে উঠে।রাতের চোখ থেকে চোখ সরাতে ইচ্ছে করে না, কেবলি অধীর হয়ে চেয়ে থাকতে ইচ্ছে করে।

আয়েশা বেগম ক্যান্টিন থেকে রাতের জন্য চিকেন স্যুপ নিয়ে এসেছে।জাহিদের সাথে একটি অতি সুন্দরী ভদ্র মেয়েকে দেখে খানিকটা অবাক হয়েছে।কারণ এখনকার যুগের ভার্সিটি পড়ুয়াদের তো প্রেমিক প্রেমিকা থাকে।সেসব ব্যপার নয়তো!আবার ভাবে তেমন হলে তো রাত জানাতো।

হাসি মুখে কুশলাদি বিনিময় করে।বুঝতে পারে মেয়েটি নম্র-ভদ্র সভাবের,আচার-আচরণে শিষ্ঠাচার রয়েছে।

সবার সাথে কথা বলতে বলতে রাতকে খাইয়ে দেয়।জাহিদ ওদের বান্ধবী হিসেবেই পাপড়িকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে।

রাতের মা সামনে থাকায় পাপড়ি নিজেকে সাভাবিক রাখার চেষ্টা করে,রাতের সাথে আর তেমন কোনো কথা হয়নি।যাওয়ার সময় রাত বারবার জাহিদকে বলে দেয় পাপড়িকে ঠিক মতো হলে পৌঁছে দিয়ে বাড়ি যেতে।

যা চোখ এড়ায়নি কারোর-ই।


—————————


দিনটা সকাল থেকেই রৌদ্রোজ্জ্বল।হালকা বাতাস ও আছে।

সেই ঘটনার পর দুই মাস পেরিয়ে গেছে।

ভার্সিটিতে এসেই শুনতে পায় ভার্সিটি থেকে কক্সবাজারের একটি ট্যুর দেয়া হবে দুই দিন দুই রাতের জন্য।

বন্ধুরা সবাই যারযার মতো তাদের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনায় ব্যস্ত।

রাতকে সবাই জিজ্ঞেস করে ওর পরিকল্পনা কি?

রাত নিশ্চুপ। মনে মনে ঠিক করে নিয়েছে যদি পাপড়ি যায় তাহলে যাবে।

ভাবনার মধ্যে জাহিদ বলে,"দোস্ত,আ'ম সো এক্সাইটেড রে...!ইফতিও যাচ্ছে,চুটিয়ে প্রেম করবো।উফফ কখন যে যাবো...!"

জাহিদকে রাতের কেমন হিংসে হচ্ছে।যদিও হিংসে করা উচিত না।কিন্তু ওর ও এভাবে বলতে ইচ্ছে হচ্ছে।পাপড়ির হাত ধরে,এক সাথে পা মিলিয়ে সমুদ্রের শীতল বাতাসে পাশাপাশি হাঁটতে ইচ্ছে করছে।

জাহিদের কথা শুনে সুমন বলে,"দূর শালা!আমাদের রেখে প্রেম করে বেড়াবি, আমরা কি ধইনচার মতো দাঁড়াই থাকবো নাকি রে?আমরা তোর জিএফের ফ্রেন্ড গুলোর সাথে ট্রাই মারবো।"সুমনের কথা শুনে সবাই হেসে উঠে।

কায়সার রাতের দিকে তাকিয়ে বলে,"দোস্ত তোর জন্য সুখবর আছে।"

রাত আগ্রহ নিয়ে বলে, "তাই নাকি!বল শুনি, অনেক দিন কোনো সুখবর পাইনা?"

"তুলির কাছে শুনলাম,পাপড়ি আপু ও যাবে।সেটা শুনে আমরা তোর নাম ও এন্ট্রি করে এসেছি।"এটা শুনে রাতের কেমন শান্তি শান্তি অনুভব হচ্ছে।

এখন আর আগের মতো পাপড়ির সাথে রাতের তেমন কথা হয় না।যদি মাঝে মধ্যে রাত ফোন করে,"পাপড়ি কেমন আছেন" জিজ্ঞেস করে, কোনো না কোনো অজুহাতে পাপড়ি অনাগ্রহ পোষণ করে,ফোন রেখে দিতে চায়।

কারো ইচ্ছের বিরুদ্ধে কিছু করা ঠিক না।তাই রাত বিরক্ত করে না।

পাপড়ি সবে মাত্র ক্লাস শেষ করে বান্ধবীদের সাথে বেরিয়েছে।সোহান বলেছে দেখা করতে,সেখানে যেতে হবে।

সোহানের সাথে পাপড়ি খুব কম দেখা করে ।তার-ও একটা কারণ আছে।দেখা করতে চাইলে-ই সোহান উল্টো পাল্টা কথা বলে, সেগুলো পাপড়ির পছন্দ না।একেবারে যে দেখা হয় না তা না।দেখা হয় ক্যাম্পাসে,সাবার সামনে টুকটাক কথা-ও হয়।কিন্তু আর পাঁচটা প্রেমিক প্রেমিকার মতো নিরিবিলি জায়গায় গিয়ে কথা বলা হয় না।

এরিমধ্যে রাত ফোন করে।অনেকদিন পরে রাতের ফোন পেয়ে পাপড়ি ফোন রিসিভ করে।


" কেমন আছেন? "

"আলহামদুলিল্লাহ ভালো,তুমি কেমন আছো? "

"ভালো।"

"পড়াশোনা কেমন চলছে।"

"চলছে কোনো রকম।"

"ডিপার্টমেন্টের একজন ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট হয়ে এ কথা বলছো।"

"কি আর বলবো,মাথার মধ্যে পড়াশোনা ঢোকে না।পড়তে বসলে প্রজাপতির মতো আপনার চিন্তা চেতনায় হারিয়ে যাই।"

পাপড়ি শব্দ করে হেঁসে উঠে।এই একজন মানুষের সাথে কথা বললেই পাপড়ির মনটা ভালো হয়ে যায়।

"এখনো মাথা থেকে এসব বাদ দাওনি।"

"এখন কেন, বুড়ো হলেও বাদ দিতে পারবো না আমার সুহাসিনীকে।"

"ফ্লার্টিং করছো কেন?এর জন্য ফোন করেছো।"

"কোথায় ফ্লার্টিং করছি।আমি তো আমার নিজের,একান্ত ব্যক্তিগত,আমার মন মানবীর কথা বলছি।"

"আচ্ছা রাখছি,আমি একটু সোহানের সাথে দেখা করতে যাচ্ছি।"


এবার রাতের কন্ঠ খাদে নেমে যায়,"কোথায় যাচ্ছেন দেখা করতে?"

পাপড়ি কিছুক্ষণ থেমে বলে,"ফরেস্টিক ডিপার্টমেন্টের দিকে।"

রাত এটা শুনে বিস্মিত হয়।"ওখানে কেন,একা ওখানে যাবেন না।"

পাপড়ি আশ্চর্য্য হয়ে বলে,"রাত আমি ওর জিএফ, সে হিসেবে ওখানে ওর সাথে দেখা করতে একা যেতেই পারি।একটু বেশি ইন্টারফেয়ার করছো না?"

"যা ভাবেন তাই।আমি বলছি যাবেন না।"

"আচ্ছা আর কিছু বলবে?"

"হ্যাঁ,ট্যুরে যাবেন?"

"যাবো।আমার তো ঘুরার কোনো জায়গা নেই, এ অজুহাতে একটু ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ হবে।তুমি যাবে?

" হ্যাঁ,ঠিক আছে রেখে দেন।আর শোনেন,একা যেয়েন না।"


রাত ফোন রেখে দেয়।কিন্তু পাপড়ি রাতের কথা তেমন ভাবে গুরুত্ব দেয় না।ভাবে ওকে পছন্দ করে দেখে হিংসা থেকে এমন বলছে।আর এটা তো সত্যি, সেই ঘটনার পর থেকে সোহানকে রাত কেন কেউই সহ্য করতে পারবে না।

পাপড়ি তখন এটা ও ভাবে,"সে নিজে কি সোহান কে পছন্দ করে!"

একটা রিকশা ধরে ভার্সিটির শেষ মাথায় চলে এসেছে।জায়গাটা একদমই নিরব,দুই এক জন কাপল আছে আসেপাশে।তারা নিজেদের মধ্যে ব্যস্ত আসেপাশে তাকানোর ফুরসত টুকু নেই।

সোহান যেখানে বসে আছে পাপড়ি হাঁটতে হাঁটতে সেখানে গিয়ে পৌঁছায়।সোহান একা নয় আরো কয়েকজন ছেলেমেয়ে আছে সাথে।পাপড়িকে দেখে কোনো কথা না বলেই সবাই চলে যায় কিছুটা আড়ালে।পাপড়ি দাঁড়িয়ে আছে।সোহান গাছের একটা মোটা শেকড়ে বসে আছে।

সোহান পাপড়িকে পাশে বসতে বলে।কিন্তু এখানে বসলে সোহানের সাথে একদম ঘেঁষে বসতে হবে,শেকড়টা দুজনের জন্য তুলনামূলক ছোটো।

"নাহ,দাঁড়িয়েই ঠিক আছি।"

"আরে দাঁড়িয়ে থাকবে কেন?বসো।"বলে-ই পাপড়ির হাত ধরে ফেলে।

এ পর্যন্ত অনেক বার সোহান এমন হাতে ধরার চেষ্টা করেছে।কিন্তু পাপড়ি না বললে আর ধরেনি।আজ কোনো কথা ছাড়া-ই ধরে ফেলছে,আবার সেটা অতিক্রম করে টেনে ধরেছে।

পাপড়ি মনে হচ্ছে ওর শরীরে কতোগুলো কেঁচো কিলবিল করছে।দ্রুত ঝাড়া দিয়ে হাত ছাড়িয়ে নেয়।

সোহান পাপড়ির এমন করাতে রেগে যায়।রেগে বলে," এমন করো কেন?আমি ধরলে কি ফোস্কা পড়ে যাবে?এখনকার যুগে কোন বয়ফ্রেন্ড আছে বলতো, যাদের মধ্যে ফিজিক্যাললি এটাচমেন্ট নেই।আর আমি তোমার কাছে অনুমতি চেয়ে ও তোমার হাতটা পর্যন্ত ধরতে পারলাম না।আমার জায়গায় অন্য কেউ হলে কবেই ব্রেকআপ করে ফেলতো।"

পাপড়ি চুপ করে আছে।সোহানের কথা গুলোতে চোখে জল ছলছল করছে।এজন্য-ই একান্তে দেখা করতে চায় না।একা হলেই এসব ডিমান্ড করে।যা পাপড়ির পছন্দ না।পাপড়ি বোঝে এখনকার প্রেমে আর যাইহোক না কেন হাতে ধরাটুকু তো খুব-ই সামান্য ব্যপার।কিন্তু কেন যেন সোহানের হাতে ধরবে ভাবলে,গা রি রি করে।

উপরন্তু কারো হাতে ধরবে ভাবলেই রাতের মাদকতা মেশানো চাহুনি,দুষ্টুমি মাখানো হাসি হাসি মুখখানি ভেসে উঠে।

"ট্যুরে যাচ্ছো কেন?আমি বলেছি না আমি যাবো না,তুমি ও যাবে না।"

পাপড়ি আশ্চর্য্য হয়ে তাকায়,"এটা কি ধরনের কথা সোহান!আমার এসব ব্যপারে তুমি কেন এন্টারফেয়ার করবে।তুমি জানো,আমি ভার্সিটি ক্লাস আর টিউশন ছেড়ে কোথায় যাই না।সেখানে সবার সাথে যাওয়ার একটা সুযোগ এসেছে সেটা আমি মিস করবো?"

"হ্যাঁ করবে,তুমি ঘুরতে চাইলে আমরা দুজন একাকি কোনো রিসোর্টে গিয়ে ঘুরবো,থাকবো,মজা করবো।"

"সোহান তুমি জানো আমি ঐ ধরনের মেয়ে না।এই তিন বছরেও তুমি আমাকে চিনতে পারলে না।"

"তুমি কোন ধরনের মেয়ে বলতো আমাকে?জুনিয়রদের সাথে ফস্টিনস্টিতে তো সেরা।ভার্সিটিতে তোমার নামে নানান রকমের গুঞ্জন আছে,তুমি নাকি অবৈধ কাজে যুক্ত।কেন এসব শুনতে হবে আমাকে?আমার সাথে তো আজ পর্যন্ত কিছু হলো না?"

"ছিহহ সোহান!এই জন্য-ই তোমার সাথে দেখা করতে চাই না।দেখা হলেই এসব কথা।আসছি আমি!আর কখনো দেখা করতে বলবা না!"

সোহান বলে,"রাগ করেছো?প্লিজ রাগ করো না জান।আচ্ছা ঐ ছেলেটা কি আর তোমাকে ডিস্টার্ব করছে।করলে বলবা দেখছোই তো সেদিন কি ধোলাই টা দিলাম।"

সোহান কথা বলতে বলতে একদম পাপড়ির কাছাকাছি চলে এসেছে।পাপড়ি দূর রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছে।এক বুক কষ্ট নিয়ে ভাবছে,"আজ কি এমন পরিস্থিতিতে থাকার কথা ছিলো।"হঠাৎ অনুভব করে সোহান ওর কাছাকাছি চলে আসছে।একদম ঘাড়ের কাছে।পাপড়ি ছিটকে দূরে সরে যায়।

কিন্তু চালাক সোহান খপ করে ওর হাতে ধরে ফেলে,"প্লিজ এমন করে দূরে সরে যেও না জান।আই নিড এ কিস...!"




চলবে....

Post a Comment

অনুগ্রহ করে স্পাম করা থেকে বিরত থাকুন।
Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.