আমাদের সাথে সোস্যাল মিডিয়ায় যুক্ত থাকতে আমাদের ফেইসবুক পেইজে লাইক দিন Facebook Follow us!

হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে- গল্পকন্যার ধারাবাহিক প্রেমের গল্প ( পর্ব-০৩ )

হৃদয়ের নিকুঞ্জ নীড়ে- গল্পকন্যার ধারাবাহিক প্রেমের গল্প পর্ব-০৩
ছবিঃ হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে- গল্পকন্যা পর্ব-০৩



(গল্পের কাহিনীতে প্রবেশ করতে কিছুটা সময় লাগবে,প্রতিটা গল্পের মতো এই গল্পটাও রোম্যাঞ্চকর হবে,হয়তো কিছুটা ভিন্ন তবে নিরাশ হবেন না,আশা করি ধৈর্য্য সহকারে পড়বেন।আর যারা এতোদিন গল্পের অপেক্ষায় ছিলো তারা কোথায়?হাতে গোণা কয়েক জন ছাড়া রিয়েক্ট কমেন্ট দেখা যাচ্ছে না।এমন হলে কি লিখতে ইচ্ছে করে আপনারাই বলুন?)

হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে-  পর্বঃ- ০২ পড়ুন/link/button

সপ্তাহ খানিক এক ধরনের অস্থিরতার মধ্যে ছিলো।অস্থিরতা কাটাতে নারায়ণগঞ্জ ওর নানা বাড়িতে চলে যায়।সেখানে কাজিনদের সঙ্গে সময় কাটানোর মধ্যে দিয়ে সব কিছু ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করে।ভার্সিটি খোলার আগের দিন ফিরে আসে হালিশহর কেন্টনমেন্টে।

নিজের এ্যাইমে ফোকাস করতে হবে।বাবার অমতে এই ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছে।রেজাল্ট খারাপ কোনো ভাবেই গ্রহনযোগ্য হবে না।নিজেকে নানান ভাবে ধাতস্থ করার চেষ্টা করে ।

ইফরাত বরাবরই প্রকৃতি প্রেমি। ২৩১২.৩২ একরের প্রকৃতির লীলাভূমি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড়ো চবি ক্যাম্পাসের প্রেমে আচ্ছন্ন হয়েছিলো বহু আগেই।এখানে নিজেকে খুঁজে পায় সবুজ পাতায় পাতায়, দূর পাহাড়ে শেন দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকার মাঝে,বৃষ্টির সকালের বিন্দু বিন্দু জলকণাতে, প্রকৃতির নির্জনতায় আর রাতের নিস্তব্ধতায়।এর প্রেম ছেড়ে অন্য কিছুর প্রেমে পড়া নিছক বোকামি।প্রকৃতিই কেবল নিঃস্বার্থ ভাবে উৎফুল্লতা দিয়ে যায়।আর মানব প্রেম কেবল দুঃখ,কষ্ট,তীব্র যন্ত্রণায় দগ্ধ করে।

হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে- গল্পকন্যা পর্ব-০৩

প্রায় পনেরো দিন পর ভার্সিটি খুলেছে।

জাহিদ,সুমন,আফসার,কায়সার,ইফরাত দুইটা ক্লাস শেষে সবাই মিলে যায় চবি স্টেশনের একটি দোকানে।যেখানে চায়ে ডুবিয়ে পোরাটা খেতে ভিড় করে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিভিন্ন দর্শনার্থীরা।ওরা বন্ধুরা সবাই মিলে যে-কোনো দোকানের খাবার খায় না কেন,সেটাই অমৃতের মতো লাগে।

সেখান থেকে বেরিয়ে একটা ক্লাস করে বাড়ি ফিরার পথ ধরে।পথিমধ্যে হঠাৎ দেখে রাস্তার ডান সাইড ধরে হাঁটতে হাঁটতে পাপড়ি আসছে।

আজকে পড়নে তার অন্য দিনের মতো ওয়েস্টার্ন পোশাক না। সাদা মাটা আকাশি রঙের সালোয়ার-কামিজ।আকাশ থেকে সদ্য নেমে আসা কোনো আসমানী পরী মনে হচ্ছে।রাস্তার দিকে তাকিয়ে নিজের মতো করে হাঁটছে।কোনো দিকেই তার কোনো খেয়াল নেই।

"মেয়েটির হাঁটার মধ্যে ও অন্য রকম মাধুর্য্য আছে।যেটা সবার থেকে আলাদা।"নাহ আর কিছু ভাবতে চায় না রাত।

পাপড়ির চলে যাওয়ার দিকে শেষ একবার তাকিয়ে চোখ নামিয়ে নিজের গন্তব্যে চলে যায়।

ভেতরটা অনেকদিন পর কেমন প্রশান্ত মনে হচ্ছে।পরক্ষণেই নিজের অনুভূতির প্রতি নিজেই ধমকে উঠে।

হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে- গল্পকন্যা পর্ব-০৩

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পৃথিবীর একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে কেবল শিক্ষার্থীদের জন্য নিজস্ব শাটলের ব্যবস্থা আছে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ বলা হয় এই শাটল ট্রেনকে। এই শাটলেই প্রতিদিন হাজারো প্রাণের মেলা বসে। গল্প আড্ডা আর গানে গানে মুখরিত হয়ে উঠে এই শাটল ট্রেন। এই ট্রেনের বগিতে গান করে অনেকেই হয়েছে বিখ্যাত গায়ক। তাই চবিকে গানবাজদের তীর্থস্থানও বলা হয়ে থাকে। বিশ্ববিদ্যলয়ের অধ্যয়ন শেষে এখানকার শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশী যা মিস করে তা হলো এই শাটলের আড্ডা আর গান।

কড়া রৌদেও মিশে আছে এক অদ্ভুত রকমের শান্ত সবুজ শীতলতা। চারদিকে সবুজের মিছিল আর মাটির ঘ্রান।শাটলে চড়ে প্রকৃতি বিলাস করতে করতে আর এসব ভাবতে ভাবতে পৌঁছে গেছে 'বটতলি' ওর গন্তব্যে।

বাড়িতে যেয়ে দেখে ওর ছোটো খালা আর তার পরিবার এসেছে।ছোটো খালার একটি মাত্র মেয়ে।নাম দিনা।ঊর্মির সমবয়সী।এবার নবম শ্রেণিতে উঠেছে।কিন্তু বয়সের তুলনায় একটু বেশি পাকা।

রাতকে দেখেলেই কেন যেন মুচকি মুচকি হাসে।এ হাসির অর্থ কি রাত জানে না।তবে হাসিটা দেখেলেই ওর গা জ্বালা করে।এটা বেশ বুঝতে পারে।

হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে- গল্পকন্যা পর্ব-০৩

শুধু হেসেই মেয়েটা তার কর্মকান্ড ক্ষান্ত রাখেনি।সেটা এক ধাপ বাড়িয়ে হঠাৎ হঠাৎ চোখ মারে।

"কি দুরন্ত মেয়ে রে বাবা!আর কি সাহস! বড়ো ভাই কে চোখ মারে!ইচ্ছে করছে চোখে স্কচটেপ লাগিয়ে বন্ধ করে দিতে।কিন্তু না, সেটা করা যাবে না।সত্যি যদি এমনটা করে,বাবা বাসা থেকে বের করে দিবে।"তাই নিরবে সহ্য করে যেতে হবে।সেটাও করে নিতো যদি না মেয়েটা এমন অসভ্যতা করতো।

একেই প্রচন্ড গরম পড়েছে তারউপর এই ভর সন্ধ্যায় কারেন্ট চলে গেছে।বাসায় গেস্ট না থাকলে রাত বাইরে রেড়িয়ে পড়তো।

হঠাৎ ঊর্মি এসে বলছে," ভাইয়া চলো ছাদে যাই।"দিনাও তাতে সুর মেলালো।ফোনের ফ্লাশ অন করে তিন জন মিলে ছাদে পৌঁছালো।

ছাদে উঠতেই মেয়ে দুটো হাসা শুরু করলো।তাও কোনো কারণ ছাড়াই।কি অদ্ভুত প্রাণী এরা!কেন হাসছে হয়তো নিজেরাই জানে না!শুধু শুধু কি কোনো মানুষ হাসতে পারে!

কিন্তু মেয়ে দুটো হেসেই চলেছে।যাই বলছে তাতেই হেসে উঠছে।রাতের মেজাজ গরম হয়ে যাচ্ছে।এই গরমের মধ্যে এমন নেকামো ভালো লাগছে না।হুট করে পাপড়ির হাসির কথা মনে হয়ে গেছে।

"পাপড়িও তো কোনো কারণ ছাড়াই হেসে উঠেছিলো।কই তখন তো খারাপ লাগেনি!সত্যি ওর হাসিটা সুন্দর।চমৎকার ভাবে হেসে উঠে!সোহান ভাই ভিষণ লাকি,চাইলেই পাপড়ির মনোমুগ্ধকর হাসিটা দেখতে পাবে।"

"মাঝে মধ্যে ওর আফসোস হয় কেন পাপড়ির থেকে বয়সে বড়ো হলো না।তাহলে একবার চেষ্টা করে দেখতো...!"

হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে- গল্পকন্যা পর্ব-০৩

নিজের চিন্তা ভাবনার জন্য নিজেকেই কষে একটা লাগাতে ইচ্ছে করে।

রাত ওর ভাবনায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে, হঠাৎ গালে কারো ঠোঁটের স্পর্শ অনুভব করে।ধ্যান ভঙ্গ হতেই বুঝতে পারে এই ঘুটঘুটে অন্ধকারে ঐ দিনা ফাজিলটা এই অসভ্যতাটা করেছে।

"ছিহহহ!স্পর্শের জায়গাটুকু কেটে ফেলতে ইচ্ছে করছে!অসভ্য মেয়ে কোথাকার!"

রাত দিনার গালের বা পাশ লক্ষ্য করে কষে একটা চড় লাগায়।কিন্তু অন্ধকারে নির্দেশনা ভুল হয়ে কানের গোড়ায় গিয়ে লাগে।

দিনা শক্ত হাতের চড় খেয়ে,"আহহহ! "করে শব্দে করে উঠে।

ঊর্মি কিছুই বুঝতে না পেরে বিচলিত হয়ে পড়ে।

রাত সঙ্গে সঙ্গে ধমকে উঠে বলে," এই মেয়ে, কি হই আমি তোমার,মাথায় আছে?এটা কোন ধরনের অসভ্যতা?কোথায় শিখেছো এগুলো?এ শিক্ষা দিয়েছে খালা খালু?বলবো তাদেরকে,তাদের মেয়ের কান্ড কারখানা ?"

দিনা কানে গালে হাত বুলাতে বুলাতে বলে,"আমি তোমাকে ভালোবাসি!"

রাত আরেকটা চড় মেরে বসে,"বেয়াদব কোথাকার,দাঁড়াও তোমার ভালোবাসা বের করছি!"বলেই রাত নিচের উদ্দেশ্য হাঁটা ধরে।

হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে- গল্পকন্যা পর্ব-০৩

হাঁটা ধরতেই দিনা পিছন থেকে কাঁদো কাঁদো গলায় বলে উঠে,"সরি...! সরি! ভাইয়া!ভুল হয়েছে।আর অমন করবো না তোমার সাথে।আসলে আমার সব ফ্রেন্ডদের বয়ফ্রেন্ড আছে কিন্তু আমার কোনো বয়ফ্রেন্ড নেই।তুমি দেখতে ভিষণ স্মার্ট, হ্যান্ডসাম।পুরো বলিউডের সিদ্ধার্থ মালহোত্রার মতো।সে জন্য আমি তোমার উপর ট্রাই করছিলাম।প্লিজ মাকে বলো না।আমি আর অমন করবো না।প্লিজ ভাইয়া।"

ইফরাত কি হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারছে না।উর্মির দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারে এই মেয়ের কথা শুনে ওর ও হতবিহ্বল অবস্থা।

"তোমার বয়স কতো? বড়োজোর চৌদ্দ পনেরো হবে।এই বয়সে কি কেউ প্রেম করে?তুমি কি চাও এসএসসির আগেই বিয়ে করে বাচ্চার মা হয়ে যেতে?চাও না তো এই বয়সেই কারো ঘরের রান্নার কাজ,ঘর গুছানোর কাজ করতে তাই না?তোমার যে ফ্রেন্ডরা এসব করে বেড়াচ্ছে তারা বেশি হলে এসএসসি এক্সাম পর্যন্ত যেতে পারবে।তার পর তাদের লাইফ শেষ।আমি কেন,কোনো ছেলের ওপরই এসব উদ্ভট কাজ ট্রাই করো না।তুমি সুন্দরী বুদ্ধিমতি মেয়ে।এখনি প্রেমে জড়িয়ে নিজের ফ্রিডম লাইফটাকে স্পয়েল করো না।যারা প্রেম করছে তুমি তাদের দেখছো।কিন্তু আমাদের ঊর্মি কে দেখতে পারছো না!পড়াশোনা ছাড়া ও কিছুই বোঝে না।তুমি যে বয়সে প্রেম ভালোবাসা রোমাঞ্চ করতে চাইছো,সে বয়সে ও বই প্রেমি।টিভিতে কোনো রোমাঞ্চকর সিন এলে ও একাকি থাকলেও চেঞ্জ করে দেয়। আর সেখানে তুমি...!এসব মাথা থেকে ঝেরে ফেলো।নয়তো দেখবে একদিন আমাদের ঊর্মি ডক্টর হবে আর তার চেম্বারে তুমি ডেলিভারি করাতে যাবে।যদি তোমার বদমতলব না বদলাও আমাকে জানিও।আমার অনেক সিনিয়র ভাই আছে,যারা সুন্দরী মেয়ে খুঁজছে বিয়ে করে ঘরে তুলতে।" রাত ওর কথা শেষ করে নিচে চলে যায়।

হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে- গল্পকন্যা পর্ব-০৩
___________________


ক্যাম্পাসের সব কিছুই আজকে বোরিং লাগছে।ক্লাস গুলোও কেমন ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে করতে হয়েছে।

ক্লাস শেষে জাহিদ বলে, "দোস্তো আজ সামাজিক বিজ্ঞান ফেকাল্টিতে অনুষ্ঠান আছে।চল যাই।"

সবাই সেখানে যায়।অনুষ্ঠান চলছে কিন্তু ইফরাতের কিছুই ভালো লাগছে না।অপর দিকে জাহিদ ফার্স্ট ইয়ারের এক মেয়ের সাথে অলরেডি ফ্লাটিং করে ফোন নাম্বার যোগাড় করে ফেলেছে।

ওর বিরক্তসূচক অনুভূতিকে আশ্চার্যান্বিত করে আকস্মিক মঞ্চে আগমন হয় পাপড়ির।সাথে আরেকটা মেয়ে।দুজনেই লাল পেরে সাদা শাড়ী পড়নে।গলায় কানে হাতে রজনিগন্ধ্যা ফুলের গহনা পড়ে,অসাধারণ নৃত্য পরিবেশন করছে।

নাচের প্রতিটা মুদ্রা মনে হচ্ছে রাতকে বশ করার জন্য কোনো অভিনব পন্থা,কোনো অদৃশ্য জাদুবলে ওকে যেন বিমোহিত করার ধান্দায় আছে এই মেয়ে।মঞ্চের সামনের সারিতে চোখ পড়তেই সোহানকে দেখে রাতের ঘোর কাটে। অন্যের গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে ওর অযাচিত চিন্তা ভাবনার জন্য রাত বিরক্ত হয়ে ওঠে।
হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে- গল্পকন্যা পর্ব-০৩

জাহিদকে ধরে নিয়ে চলে ফ্যাকাল্টির পেছনে ঝর্ণার কাছে।আজকে ছড়া থেকে ঝর্ণার মুখিতে এক জোড়া কাপল বসে আছে।

তাই ঝর্ণার নিচের দিকে খাদের পাড়ে সবুজ ঘাসে বসে পড়ে।জাহিদ সিগারেট ধরায়।রাত চোখ বুঝে গান ধরে,

"ওহে...কি করিলে বলো

পাইবো তোমারে

রাখিবো আঁখিতে আঁখিতে।"


হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে- গল্পকন্যা পর্ব-০৩
চোখ মেলে জাহিদের হাত থেকে সিগারেট নিয়ে তাতে একটা টান দিতেই দেখে,ওদের থেকে কিছুটা দূরে দুটো মেয়ে এসে বসেছে।হয়তো মাত্রই এসে বসেছে।একটা মাত্র সিগারেট।তাই দুজনে অদলবদল করে টানছে।রাত জাহিদের হাত থেকে সিগারেটটা নিয়ে তাতে টান দিতেই পাশ থেকে রিনরিনে মিষ্টি কন্ঠে কেউ বলে উঠে,"এই যে ভাইয়া, আমরা এখানে বসবো।সিগারেট খাওয়া বন্ধ করো...."


হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে- গল্পকন্যা পর্ব-০৩

হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে- পর্বঃ- ০৪ পড়ুন/link/button


Post a Comment

অনুগ্রহ করে স্পাম করা থেকে বিরত থাকুন।
Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.