ধ্রবতারা
লিখিকাঃ গল্প কন্যা (ছদ্ম নাম)
তুর চমকে যায় দ্রুত ফাইল থেকে বের হয়।পাশে তাকিয়ে দেখে তুহিন ঘুমিয়ে পড়েছে।স্ক্রিনের কোনায় তাকাতে দেখে নয়টা বেজে গেছে।কখন যে পড়তে পড়তে ঘোরে চলে গিয়েছিল টের ই পায়নি।
ধ্রুব রুমে ঢুকে পুনরায় প্রশ্ন করে"আমার লেপটপ এখানে কেন?কি করছিস লেপটপে?
তুর এখনো ঘোর থেকে বের হতে পারেনি।ওকে নিয়ে ওনার মনে এতো কিছু সেই ছোট বেলা থেকে।মাথা নিচু করে ভাবছে।ওনার দিকে তাকিয়ে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে।আসলেই কি?ইনি আমাকে নিয়ে এতো কথা লিখেছে?বিশ্বাস হচ্ছে না।
"কি করছিলি লেপটপে?"
"তুহিন মুভি দেখতে এনেছিলো।"
ধ্রুব ঘুমন্ত তুহিনের দিকে তাকিয়ে"তাই বুঝি,ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে মুভি দেখছে।"
তুর চুপ করে আছে কি বলবে এখন।তুহিন যে অপেক্ষা করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েছে।
ধ্রুব তুরের কাছ থেকে লেপটপটা নিজের হাতে নেয়"রাত পোহালে এক্সাম,এতো টেনশন না করে ঠিক মতো পড়।ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া কর।আর সোশ্যাল মিডিয়া থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকাই ব্যাটার।"
হতবাক তুরকে পেছনে রেখে চলে যায়।
"আপনার মনে যদি আমার প্রতি এতো অনুভূতি থেকে থাকে তাহলে কেন সেদিন একটু বোঝার চেষ্টা করলেন না?এ হৃদয়ের অনুভূতি টাকে কেন সেদিন তছনছ করে দিয়েছিলেন? একটা বার শুনলে কি হতো আমার কথা?"
দেখতে দেখতে প্রায় দের মাস পেরিয়ে গেছে।
ফাহিম তুরের পরীক্ষা ভালো ভাবেই শেষ হয়েছে।যদিও ফাহিম নিয়মিত রিয়ার সাথে ফোনালাপে ব্যস্ত ছিলো।তবে এক্সাম মোটামুটি ভালো ই দিয়েছে।
ধ্রুব নিজের প্রফেশন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।পরীক্ষার মাঝে একবার এসেছিল।দুজনকে বলেছে ভালো রেজাল্ট করতে পারলে দুজনকে লেপটপ কিনে দিবে।
তুর এখন বাসায় খুর বোর টাইম স্পেন্ট করছে।মাঝে মাঝে ধ্রুবর আইডিতে যেয়ে একটু দেখে কলিজা ঠান্ডা করে আসে।
আজকে ফেসবুকে ধ্রুবর ইউনিফর্ম পরা একটা নতুন ছবি আপলোড দিয়েছে।তুর দেখছে তো দেখছে।আবারো ক্রাশ খেয়েছে।"উফফ....এতো ডেশিং কেন হলেন?এতোটা না হলেও পারতেন।"
কুটোটি না নাড়লেও।সব সময় তুর নিজ হাতে দাদির নখ কেটে দেয়।পান পিষে দেয়।দাদির চুলে বিলি কেটে দেয়।দাদির কাছ থেকে গল্প শুনতে আবদার করে।দাদিকে ভালোবেসে সব করতে চায়,করে দেয়।ও ভাবে পৃথিবীতে সবচেয়ে মধুর সম্পর্ক হচ্ছে দাদা-দাদি ও নানা-নানির সাথে। সবচেয়ে বেশি তুর দাদির কাছে কাছে থাকতে চায়।কিন্তু ফজিলাতুন্নেছা যেন তুরকে বেশি ভিরতে দিতে চান না।
আজ শুক্রবার তাই দাদির রুমে যায়।নখ কেটে দিবে।রুমের বাইরে থেকে শুনতে পাচ্ছে।ওর দাদি আর (রিনা বেগম)ছোট মা কথা বলছেন।
কদিন হলো রিনা বেগম দুই ছেলেকে নিয়ে এসেছেন।উনার আবার শাশুড়ীর সাথে একটু বেশি ই ভাব।তুরের মনে হয় রিনা বেগম তুরকে কেমন আলগা আদর করে।কেমন যেন লোক দেখানো আদর।মন থেকে মেনে নিতে পারে না।মন থেকে ভালোবাসে না।
বাইরে থেকে কথা গুলো স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে।না চাইতে ও তুর শুনতে পাচ্ছে....
রিনা বেগম : আমি ও বুঝতে পারি না আম্মা,এভাবে আর কতো দিন ঢেকে রাখবে।একদিন না একদিন তো জানবেই।
ফজিলাতুন্নেছা :হো আমি ও তো ভাবি।ঐ দিন কি মিছা কথাটা ই না কইলো।
রিনা বেগম :নিজের পেটের সন্তানকে এভাবে ভাবি অন্যের সন্তান বলে চালিয়ে দিতে পারলো। তাও আবার পরের সন্তানের জন্য।
আমি বাবা জীবনে ও পারবো না।পরের সন্তানকে বুক আগলে রেখে নিজের সন্তানকে দূরে রাখতে।তুহিন কিন্তু ছোট বেলা থেকেই বাবা মায়ের আদর থেকে বঞ্চিত হয়েছে।এবার কিন্তু ওর সম্পত্তি তে ও তুর ভাগ বসাবে।আম্মা অনেক তো হলো ওকে নিয়ে বাড়ির সবার আদিখ্যেতা।এবার তো পরীক্ষা শেষ হলো,বলেন বিয়ে দিয়ে বিদায় করতে।
ফজিলাতুন্নেছা: আমি আর কি কমু।আমার কথা কি শুনে যতোই বলি রক্ত রক্তই হয়।কার না কার রক্ত বইতাছে শরীরে।একদিন ঠিকই মুখ ফিরাই নিবো।ওইদিন আমার পোলা বউয়ের শিক্ষা হইবো।কতো ভালা ঘর থাইকা বিয়াডা আইছিল।তাড়াহুড়া কইরা বিয়া দিয়া ফেলবো নাহ।অহন তো তারা ও পিছাই গেছে।এমন পালইককা মাইয়া জানলে কেডা বিয়া করবো।
রিনা বেগম : বুঝতে পারি না কিভাবে এমন নাজায়েজ একটা বাচ্চা ভাইজান আনলো।এসব যদি কোনো পরিবার জানে বিয়ে হবে এই মেয়ের।তার ওপর যে আদরে লালন পালন করেছে এই মেয়েকে।বিয়ে দিলে শুশুর বাড়ি গিয়ে থাকতে ও পারবে না দেখেন আপনি।
ফজিলাতুন্নেছা: আমার মুখ তো ওরা বন্ধ কইরা রাখছে।আমি তো পোলাগো লেইগ্যা কিছু বলতে পারি না।বউডা ও এমন হইছে,পরের মাইয়ারে এমন আপন কইরা নিছে যে নিজের পেটের ডারে ও পর কইরা দিতে ভাবে না।আমার কথায় কি হইবো।আল্লাহ আল্লাহ কইরা এ বাড়ি থেইকা বাইর হইলে শান্তি। তয় যদি ওগো চোখ খুলে।পোলার দিকে নজর দেয়।
রিনা বেগম : আম্মা আপনার কি মনে হয় তুর যদি জানে ও মেঝো ভাই ভাবির নিজের সন্তান না।কোনো এক বিদেশিনির অবৈধ সন্তান,ওনারা দয়া করে মায়া করে ওরে এডপ্ট করেছে তখন কি হবে?
ফজিলাতুন্নেছা: কি আর হইবো।বাড়িতে ঝড় তুলবো।নাজায়েজ কিছু যেখানেই যাক না কেন্ ধ্বংস ছাড়া কিচ্ছু হয় না।
তুর এতক্ষণ অনেক ধৈর্য ধরে শুনছিলো।ওর হাত পা থরথর করে কাঁপছে,মাথা ঘুরাচ্ছে।এসব কি শুনছে।পায়ের নিচের মাটি যেন সরে যাচ্ছে।ও অন্য কারো সন্তান।এতো দিন যাদেরকে নিজের বাবা মা ভেবে এসছে উনারা আসলে ওকে দয়া করে লালন পালন করেছে। সেদিন মা আমাকে মিথ্যা বলেছিলো।এজন্যই এতো রেগে গিয়েছিলো।সাজিয়ে পুরো ঘটনা কে চাপা দিয়েছে।এতো দিন যে পরিবারকে নিজের পরিবার ভেবে এসেছি ওদের কারো সাথে আমার কোনো যোগ সুত্র নেই।এ বংশের রক্ত আমার শরীরে বইছে না।তাই বুঝি লোকে এমন করে।সেদিন এজন্যই ওই মাহিলা গুলো এসব বলছিলো।ধ্রুবর নানা বাড়ির লোকজন ওর নানা বাড়ির লোকজন সব আত্মীয় স্বজনরা এজন্যই ওর দিকে বাঁকা চোখে তাকায়।আমি কারো অবৈধ সন্তান।ওই ফরেনার মহিলার সন্তান।এতোদিন সবার দয়ায় বেঁচেছি,ফুটানি করেছি ছিহ....নিজের প্রতি নিজের ঘৃণা লাগছে।
অঝোর ধারায় চোখের পানি বয়ে যাচ্ছে।কিভাবে পারবো তোমাদের ছেড়ে থাকতে।কোথায় যাবো আমি।তোমরা ছাড়া কে আছে আমার।তোমাদের সবাই কে যে আমি অনেক ভালোবাসি।
রিনা বেগম : আমার বাপের বাড়ির মানুষ তো তুরকে নিয়ে এতো আদিখ্যেতা দেখতে ই পারে না....
"আমার কোনো পরিচয় নেই।আমি কিভাবে মানবো আমার কোনো পরিচয় নেই কিভাবে?"
তুর আর ভাবতে পারেনি দরজার সাথে হেলান দিয়ে ধপ করে ফ্লোরে বসে পরে।ফজিলাতুন্নেছা আর রিনা বেগম দুজনই তাকায়।দুজনেই চমকে যায়।ভায়ার্ত চোখে তাকায় বুঝতে আর বাকি নেই কি করে ফেলেছে দুজনে।
তুর হাউমাউ করে কাঁদছে।শুক্রবার হওয়ায় সবাই বাড়িতে ছিলো।সমির সাহেব ও এসেছিলেন দুই দিনের জন্য।তুরের কান্নার শব্দে সবাই ছুটে আসে।
দু'হাতে চুল খামচে ধরে পাগলের মতো কাঁদছে।হাউমাউ করে কাঁদছে।চোখের পানিতে গাল গলা ভরে যাচ্ছে।চিৎকার করে আল্লাহ কে ডেকে ডেকে কাঁদছে।
সকলে হতভম্ব।কেউ ধরতে পারছে না যেতে পারছে না।
কেমন ছটফট করে কাঁদছে।কেউ কিছু বুঝতে পারছে না।তুরের বাবা বারবার তুরে কে জিজ্ঞেস করছে।"কি হয়েছে মা বলো আমাকে। কোথায় কষ্ট হচ্ছে? বলো মা।"কিন্তু কোনো জবাব নেই।
মেয়ের কান্না বন্ধ করতে পারছে না কোনো মতে।কি এমন হয়েছে কখনো তো এভাবে কাঁদতে দেখিনি ওকে।তখন রিনা বেগম কে জিজ্ঞেস করলো"রিনা কি হয়েছে ওর?এই ঘরে এসে ওর এমন কি হলো যার জন্য এমন করে কাঁদছে।"
রিনা বেগম বুঝতে পারলো এই সত্য আর চাপা থাকবে না।তাই গরগর করে সব বলে দিলো। এতোক্ষণ ওরা কি সম্পর্কে কথা বলছিলো।আর সব তুর শুনে ফেলেছে।
এটা শুনে সকলের চোখ কপালে।রায়লা বেগম কপালে হাত দিয়ে খাটে বসে কান্না জুড়ে দেয়।কবির সাহেব মেয়ের কষ্টের কারণ বুঝতে পারে।এক বুক কষ্ট নিয়ে মেয়ের পাশে বসে মাথায় হাত রাখে।এখন কি করবে।
তুর উঠে বাবার কাঁধে মাথা রাখে বলে"বাবা... ও বাবা...বলো না সব মিথ্যে।বলো না।"
কবির সাহেব চুপ করে আছেন। চোখ দুটো পানিতে ছলছল করছে।
"বাবা কেন তুমি আমার আসল বাবা হলে না?বাবা বলো না? ও বাবা বলো না কেন আমাকে তোমরা দয়া করলে? কেন দয়া করতে গিয়ে এতো ভালোবাসালে?এখন আমি কিভাবে বাঁচবো বলো?তোমাদের ছেড়ে থাকার কথা যে ভাবতে ও পারিনা?আমার কোনো পরিচয় নেই।কে আমার বাবা কে আমার মা বলো? বলো না বাবা?বাবা গো আমি কিভাবে মানবো যে তুমি আমার বাবা না?আল্লাহ কেন আমার সাথে এমন করলো?আল্লাহ গো কেন তুমি আমাকে এই পরিবারের সন্তান বানালে না?আল্লাহ... " মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
কবির সাহেব মেয়ের আর্তনাদ দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি।ঝরঝর করে পড়তে থাকে।
ঘর ভর্তি সকলের চোখে পানি।কেউ এই দৃশ্য সহ্য করতে পারছে না।জহির সাহেব পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন"মারে... জন্ম দেওয়া সন্তান হয়েও অনেকে সন্তানের দায়িত্ব পালন করতে পারে না।আবার অন্যের সন্তানকে নিজের পরিচয় দেওয়া সন্তান ই সারাজীবন আগলে রাখে।দুনিয়ায় এসব কিছু না।অহরহ ঘটছে। আমরা কি কখনো তোমাকে আলাদা ভেবেছি ,অন্য চোখে দেখেছি। কোনো দিন বুঝতে দিয়েছি বলো?তুমি আমাদের সকলের কলিজা মা।এমন করে না মেনে নেও বাস্তবতা।আমরা কখনো তোমাকে আলাদা দেখিনি আর দেখবো না।তুমি যে আমাদের কাছে কি তা শুধু আমারা জানি মা।শশুর বাড়ি ছাড়া কোথাও তোমাকে যেতে দেব না।পারলে ঘর জামাই এনে রাখবো।তবু তোমাকে ছাড়া কেউ থাকতে পারবো না।সবাই যে তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি।তুমি এভাবে কাঁদলে যে আমাদের কষ্ট হয়।"
তুর জহির সাহেবের হাতে ধরে কান্না করে"কেন আলাদা দেখনি প্রথম থেকে?কেন এতো ভালোবাসা দিয়ে আদর দিয়ে বড়ো করেছো?আমি তো তোমাদের কেউ না বড় আব্বু।আর করুণা করো না।আমার জন্য লোকজন তোমাদের আড়ালে অনেক অনেক কথা বলে।এতো দিন তোমাদের খেয়ে পড়ে বড়ো হয়েছি, কিভাবে সহ্য করবো।"
তুর মায়ের সামনে যায় "মা সেদিন এজন্য মেরে ছিলে তাই না।দেখো লুকিয়ে রাখতে পারলে না।সত্যি কোনোদিন চাপা থাকে না মা।তুহিন কে সারাজীবন আমি ভাই ভেবে যাবো কোনো দিন আমার কারণে কোনো কষ্ট পাবে না।আমি পেতে দেব না। তুমি চিন্তা করো না মা।আমি তোমার পেটের সন্তান না তাতে কি তোমাকেই তো মা ভেবে এসেছি মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তুমি আমার মা।
মা গো...ও মা....। আমার বুকে খুব কষ্ট হচ্ছে মা।
তুমি ছোটো বেলার মতো দোয়া পড়ে ফু দিয়ে দেও না। আমার সব কষ্ট চলে যাবে।আমার সব দুঃখ চলে যাবে।তুমি কেঁদো না মা তোমার চোখে পানি দেখলে আমার কষ্ট হয়।"মায়ের হাটুতে মাথা রেখে কাঁদছে।তুরের মা ও তুরের মাথায় হাত বুলাচ্ছে আর কাঁদছে।
শাহানা বেগম টেনে ওঠায়,চোখ মুছিয়ে দেয়।"আর কাঁদিস না অসুস্থ হয়ে পড়বি।"
তুর উঠে দৌড়ে রুম থেকে বের নিজের রুমে গিয়ে দরজা আটকে ফেলে।অনেক ডাকাডাকিতে ও খুলেনি।পুরোবাড়ি মরা বাড়ির মতো হয়ে আছে।
সমির সাহেব রিনা বেগম কে ইচ্ছা মতো ঝারে। ইচ্ছা মতো বকে।রিনা বেগম কেঁদে দেয়।
ফজিলাতুন্নেছা চুপসে বসে আছে।উনি বেশ ভালো করে বুঝতে পারছে ছেলেরা উনার সাথে রেগে আছে।মেঝো ছেলে তো তাকাচ্ছে না পর্যন্ত।
বাড়ির সকলের খাওয়া দাওয়া বন্ধ।এ জন ও জন গিয়ে তুরকে কিছুক্ষণ পর পর ডেকে আসছে।তুরের ঘর থেকে কান্নার শব্দ ছাড়া কোনো সারা নেই।
রায়লা বেগম সারাদিন তুরের রুমের পাশে ছাদের সিড়িতে বসে কেঁদে কেটে পার করেছে।
কবির সাহেব মনের জোর হারিয়ে বিছানায় শরীর ছেড়ে দিয়েছেন।বারবার মেয়ের আর্তনাদ চোখে ভাসছে।আর ভেতর টা দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে।
জহির সাহেব বাড়ির এমন পরিবেশ দেখে,হাসি খুশি মেয়ে টার কষ্ট দেখে ভেঙে পড়েছেন।মেয়েটার ভেতরের ক্ষত টা অনুমান করে আরো বেশি কষ্ট পাচ্ছেন।
এভাবেই পুরো বাড়ির মানুষ মুষড়ে পড়েছে।
__________
পরের দিন সকালে,
তুরের মা মেয়ের রুমে সামনে যায় দেখে দরজা খুলা।ভিতরে কোথাও তুর নেই।ভাবেন হয়তো অন্য কোথাও আছে। মেয়ের মুখ দেখার জন্য বাড়ির এখানে ওখানে পুরো বাড়ি খুজে কিন্তু কোথাও নেই।ছাদে ও খুজে কিন্তু ছাদটা ও আজ ফাঁকা।
ওনার ভেতর নাড়া দিয়ে উঠে।ওনি কাঁদতে কাঁদতে সিড়ি দিয়ে নামেন।
কান্নার শব্দে সকলে লিভিং রুমে জোড়ো হয়।ওনি সবাই কে বলেন তুরকে কোথাও পাচ্ছে না।
সকাল সকাল সবার মাথায় বাজ পড়ে।সবাই ছুটোছুটি লাগিয়ে দেয় ফাহিম পুনরায় ছাদ কোরিডোর বাগান বাড়ির পেছনে।সবার রুমে রুমে খোঁজে কোথাও নেই।
কি করবে কোথায় খুজবে দিশেহারা অবস্থা।
রায়লা বেগম শাহনা বেগম কান্না করছে।ফরিদা রাইমা ওনাদের সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে।
সমির সাহেব আবারও রিনা বেগমকে ঝেড়ে ফাহিম কে নিয়ে বেরিয়ে যায়।বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নেয়।
কবির সাহেব জহির সাহেব বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনদের ,তুরের ফ্রেন্ডদের বাড়ি বাড়ি ফোন করে জিজ্ঞেস করছে তুর গেছে কি না গেলে জানাতে।কোনো ভাবেই সারাদিনে কেউ কোথাও থেকে ওর খোঁজ দিতে পারেনি.....
চলবে.....