আমাদের সাথে সোস্যাল মিডিয়ায় যুক্ত থাকতে আমাদের ফেইসবুক পেইজে লাইক দিন Facebook Follow us!

ধ্রুবতারা-গল্প কন্যা পর্ব-১০

Estimated read time: 5 min

ধ্রবতারা 
গল্প কন্যা (ছদ্ম নাম)



তুর চলে গেলো কিন্তু ওর চোখের পানি যে কারো বুকে ঝড় তুলে দিয়ে গেল। 

ধ্রুব : নানু ,দুজনে ভাই বোন কি বলো এইসব? আর এখানে ওরা দুষ্টুমি করছিল ভাইবোনের সম্পর্ককে কেউ এভাবে দেখে।যারা পবিত্র সম্পর্ককে নোংরা চোখে দেখে আমার মনে হয় তাদের মনে আর চোখে সমস্যা আই মিন তাদের মনটা ও নোংরা।মেয়েটা কতোটা কষ্ট পেলো।

নানু:ভাই তুমি কি রাগ করলা...?রাগ কইরো না আমি ওমন ভাইবা কিছু কই নাই।
রাইসা তুরের হয়ে ওকালতি টা পছন্দ করেনি।
এদিকে দাদির চোখ ও এড়ায়নি ধ্রুবর তর্ক করা।
ধ্রুব ও বের হয়ে গেলো 
তুরের রুমে উকি দিল কিন্তু ও নেই। পরে ছাদের দিকে গেল।রাতের বেলা ছাদের চারদিকে বিভিন্ন কালারের  লাইট জালানো থাকে।বাড়ির নিচে একটা শিউলি গাছ আছে ছোটো বেলায় ধ্রুব তুরের পছন্দ দেখে লাগিয়ে ছিলো।সেই গাছটা এখন ছাদে ওঠে এসছে। ফুল ফুটলে চারিদিক মম করে।ওখানে পাশেই বসার ব্যবস্থা আছে তুর সেখানে বসে কাঁদছে।আদুরে মেয়েটাকে কাঁদিয়েছে। ধ্রুব ওর কাছে গিয়ে বসে ওর দিকে মুখ করে।
ধ্রুব : বুঝলাম না এতোটুকুর জন্য কাঁদার কি আছে.....বুড়ো মানুষ কতো বছর ধরে পার্টনার ছাড়া থাকছে,ডিপ্রেশনে থেকে ভুল ভাল বলে ফেলেছে....। 
ভাবতেছি দাদিকে আর নানু কে বিয়ে দিয়ে পার্টনার নিয়ে আসবো,তাহলে তাদের প্যানপ্যানানি সেই বেচারা সহ্য করবে,আর আমরা রেহাই পাবো।তার পর তাদের বাচ্চা কাচ্চা কোলে নিয়ে ঘুরবো।

তুর এই কথা শুনে খিলখিল করে হাসতে লাগলো,মুখে হাত চেপে হাসছে। 
চোখে পানি টলমল করছে... গালের আশপাশে ছড়িয়ে আছে চোখের পানি.... কিন্তু মুখে পাগল করা হাসি...
ধ্রুব মুগ্ধ হয়ে দেখছে কান্না মিশ্রিত হাসি এতো কাছ থেকে এই মাতাল করা হাসি,হাসাতে পেরে নিজেকে সাথর্ক মনে হচ্ছে ,কিন্তু ওর হাসির ঝংকার হৃদয় তোলপাড় করে দিচ্ছে।হাসির চোটে ডান চোখ দিয়ে এক ফোটা পানি গরিয়ে পড়লো। ধ্রুবর নিজেকে কন্ট্রোললেস মনে হচ্ছে, কিছুখণের জন্য নিজেকে তুরের মাঝে হারিয়ে ফেলে। তুরের হাসি উধাও হয়ে গেছে ধ্রুবর এমন মাতাল চাহনি দেখে,স্টেচু হয়ে বসে আছে।কোনো কিছুর পরোয়া না করে সামনে ঝুকে যায়...তুরের গালে ওর ঠোঁট স্পর্শ করে। তুরের চোখ বড়ো হয়ে যায় কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে বুঝতে পারে কি হয়েছে শরীরের রক্ত গুলো ছোটাছুটি শুরু করেছে।তুরের কাপকাপি অবস্থা শুরু হয়ে যায় ,জ্ঞান হারাবে মনে হচ্ছে।তখনি ধ্রুবর বুকে ধ্বাক্কা দেয় আর এক দৌড়ে নিজের রুমে চলে যায়। 

তুরের ধাক্কায় হুশ ফিরে ,ওহহহ....শিট....কি করে ফললাম এটা (ছাদের ফ্লোরে জোরে কিক্ করে )শিট... শিট..... 
নিজের প্রতিই নিজের রাগ উঠছে।

ওদের এই মুহূর্তটা ছাদের দরজার আড়াল থেকে আরো এক জনের নজরে পরেছে।
তুর বিছানায় শুয়ে হাপাচ্ছে ,কি হলো এটা ,এই লোকটা এই বার আসার পর থেকে একের পর এক কান্ড ঘটাচ্ছে।সেদিন নৌকায় ওনার কথা কবিতা বারবার তাকানো,বারবার কাছে আসা আর আজ....মনে হতেই শরীর কাঁপছে... কোনো মতেই ঘুমাতে পারছে না।চোখে শুধু একটা সিন ই ভাসছে তাই বন্ধ করতে পারছে না।এমন করতে করতে এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ে।

সকাল বেলা নাস্তার টেবিলে সবার সাথে তুর ও বসেছে মেহমান না থাকলে হয়তো কেউ ওকে টেনে ও  ঘর থেকে বের করতে পারতো না।চুপ চাপ নিচের দিকে তাকিয়েই পুরোটা খাবার শেষ করে। ধ্রুব কয়েক বার চেয়ে দেখে কিন্তু তুর মুখ তুলে না। খাওয়া শেষে দ্রুত ওঠে চলে যায়।
এভাবেই ধ্রুবকে এড়িয়ে যাচ্ছে সকাল বিকাল সন্ধ্যা।ধ্রুব ও ওর নাগাল পাচ্ছে না।
এভাবেই দুটো দিন কেটে গেল.....
গল্প কন্যার নতুন লেখা ধারাবাহিক রোমান্টিক গল্প হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে গল্পটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন → হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে পড়ুন/link/button

ঘরে বসে পড়তে আর ফোন টিপতে ভালো লাগছে না......খুব বোরিং হয়ে গেছে ,কিন্তু সেদিনের কথা মনে হলেই শরীরের লোম দাঁড়িয়ে যায়,আবার চুপসে বসে থাকে। 

ভোর ৫টায় ঘুম ভাঙে কিছুতেই ঘুম আসে না।হাত মুখ ধুয়ে পড়তে বসে।এক ঘন্টা ওভার হওয়ার পর আর পড়তে ভালো লাগছে না।তখন ভাবছে ছাদ থেকে ঘুরে আসবে ,
ঘুম থেকে ওঠে রাতের কাপড়টা ও চেন্জ করেনি।কুচকে থাকা ঢোলা  পিংক টিশার্ট আর হোয়াইট প্লাজো পরেই  ছাদে যায়,এই সকাল ৬টায় কেউ ছাদে থাকবে না। তাই এই ভুতের মতো উসখো খুসকো চুল নিয়েই ছাদে এসেছে।

গোলাপ গাছে কয়টা কুড়ি হয়েছে, কলি থেকে কয়টা নতুন ফুল ফোটবে ,কয়টা ফুটেছে সে সব দেখছে।
পেয়ারা গাছ থেকে একটা পেয়ারা পেরে কামড় বসিয়েছে।ছাদের এ মাথা থেকে ও মাথা যাচ্ছে। কোন গাছে কয়টা ফল আসছে গুনে গুনে দেখছে,পেয়ারা গাছের কাছে এসে একা একাই বলছে 
নাহ এই গাছে অনেক গুলো গনা যাবে না।

 তখনি হঠাৎ ছাদের দরজার শব্দ হয়, তুর পেছনে ঘুরে। ঘুরে দেখে ধ্রুব ছাদের দরজা লাগাচ্ছে........

উফফ.... তুর এখন কই পালাবে,চোখ খিচে বন্ধ করে রেখেছে ,নাহ এভাবে কাজ হবে না যেতে হবে। 

যেই চলে যেতে নেবে.... ধ্রুব লম্বা লম্বা কদম ফেলে তুরের দিকেই আসছে।তুর ধ্রুবর বা সাইড দিয়ে দৌড় দিয়ে দরজার কাছে চলে আসে,,কিন্তু শেষ রক্ষা হয় না আরো একবার ধরা দিতে হয় তার প্রেমিক পুরুষের কাছে।

না চাইতেই ধ্রুব কে তুরের একহাত পেছন থেকে টেনে ধরতে হয়।তুর না ঘুরে ই লজ্জায় ভয়ে বলছে : ছাড়ুন.... প্লিজ। 
মোচড়ামুচড়ি করছে ছুটার জন্য। ধ্রুব ওকে এক টানে ওর দিকে ঘুড়িয়ে দুহাত ধরে ফেলে। 

: কেন পালাচ্ছিস?কেন আমার সামনে আসছিস না? কেন আমাকে এড়িয়ে যাচ্ছিস?কেন আমাকে এভাবে শাস্তি দিচ্ছিস?বল?
:প্লিজ ছেড়ে দিন আমাকে....আমি.....আমি.... এমনেতেই....

: আমি সেদিন নিজেকে সামলাতে পারিনি  তাই....ভুলে হয়ে গেছে... তার জন্য সরি চাইছি.. প্লিজ তুই আমাকে যে শাস্তি দিবি মাথা পেতে নিব,এভাবে মুখ ফিরিয়ে থাকিস না,খুব গিলটি ফিল হচ্ছে। 

:আমি...  মুখ ফিরিয়ে থাকবো না ,প্লিজ আমাকে যেতে দিন,,,,
:নাহ....তার আগে বল বিয়ের ব্যাপারে সরাসরি না করিস নি কেন?আজকে বাবা কে বলবি যে তুই একক্ষণি বিয়ে করবি না।
: এমনি না করিনি তাতে আপনার কি?কেন না করবো?যাকে বলবে তাকে বিয়ে করবো আপনার কি তাতে?

কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো ওর দিকে 
:বুঝিস না নাকি বুঝতে চাস না? 
:কোনোটাই না। ছাড়েন বলছি? 
:যদি না ছাড়ি? 
:চিল্লাবো?
:চিল্লা?বাই দা ওয়ে কেন চিল্লাবি?
:আপনি আমার সাথে অসভ্যতা করছেন?ছাড়ুন বলছি, এতো কথা বলতে পারবো না?

:অসভ্যতা করছি? জানিস অসভ্যতা কাকে বলে....
(দুই হাত উপরে তুলে ছাদের দরজায় চেপে ধরে)দেখাবো অসভ্যতা কাকে বলে?হাজারো মেয়ে এই ধ্রুবর জন্য পাগল কিন্তু এই ধ্রুব শুধু..... আমাকে অসভ্য বলছিস।
তুর কাপাকাপির জন্য আর কিছু বলতে পারছে না। একদম চুপসে গেছে যেটুকু সাহস ছিলো তা ও শেষ...। 

:তোর কিছু বলতে হবে না যা করার আমি ই করবো ,বাট নেক্সট নাইম এই ওয়ার্ড টা ভেবে চিন্তে ইউজ করবি।কোনো কারণে যদি এড়িয়ে চলিস  বুঝিয়ে দিব ধ্রুব কি জিনিস....। 
বলেই হাত ছেড়ে দিল..... তুর ছাড়া পেয়ে দরজা খুলে তাড়াহুড়া করে সিড়ি দিয়ে নামছে.....

পেছন থেকে.... 

:নেক্সট টাইম ছাদে আসলে এমন ওড়না ছাড়া চলে আসবি না..... আমি না হয়ে অন্য কেউ ও থাকতে পারে....
তুর এটা শুনে এক মুহূর্ত ও আর নেই সেখানে ,এক দৌড়েই প্রস্থান করে।আর ধ্রুব শব্দ করে হেসে দেয়...... 


চলবে.....


গল্প কন্যার নতুন লেখা ধারাবাহিক রোমান্টিক গল্প হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে গল্পটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন → হৃদয়ের নিকুঞ্জ নিড়ে পড়ুন/link/button

Post a Comment

অনুগ্রহ করে স্পাম করা থেকে বিরত থাকুন।
Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.