আমাদের সাথে সোস্যাল মিডিয়ায় যুক্ত থাকতে আমাদের ফেইসবুক পেইজে লাইক দিন Facebook Follow us!

ধ্রুবতারা-গল্প কন্যা পর্ব-৩১

Estimated read time: 4 min

ধ্রবতারা 
লিখেছেনঃ গল্পকন্যা (ছদ্ম নাম)



 চিঠিটা পড়ে,তিন বছর আগের কথা মনে পড়ে যায়।

(চলেন ঘুরে আসি তিন বছর আগে কি হয়েছিল সেই ঘট'নায়।)

তুরের বয়স তখন ১৪+বছর।

৯ম শ্রেণি থেকে সবে মাত্র ১০ম শ্রেণিতে উঠেছে।
খুবই ছটফটে তুর বন্ধুদের সাথে খুব মা'স্তিতে দিন কা'টাচ্ছিল।

প্রতিদিন  তুর আর ফাহিম এক সাথে স্কুলে যায়।বাড়ি থেকে স্কুল বেশি দূর না হওয়ায়,ওরা হেটেই যাতায়াত করতো।

মাঝে মধ্যে ধ্রুব ও নিয়ে যেতো নিয়ে আসতো ।তুর কখনো স্কুল মিস করে না।আর যাই হোক পড়া লেখা ঠিক রেখে পড়ে সব বাদ'রা'মি ।

কিন্তু ফাহিম অনি'য়মিত।কোনো না কোনো অজুহাতে সপ্তাহে দুই এক দিন স্কুল কামাই দিবেই দিবে।

যে দিন ফাহিম স্কুলে না যায় সে দিন বাড়ির অন্য কেউ ওর সাথে যায়।বেশির ভাগ সময় ধ্রুবই আনা নেয়া করে।

 বন্ধু বান্ধবী,পড়াশোনা,ধ্রুবর কাছে হাজারো বায়না,ছুটির দিন ঘুরতে যাওয়া,বাসায় সরাক্ষণ সবার সাথে দু'ষ্টু'মি করে বাড়িটা মাতিয়ে রাখা,এভাবেই খুব ভালো হাসিখুশি ভাবে জীবন কা'টা'চ্ছিল।

একদিন স্কুলে ফুটবল টুর্না'মে'ন্ট।সেখানে ফাহিম পার্টি'সি'প্যান্ট করছে।সেদিন  দুইটা ক্লাস করিয়ে স্কুল ছুটি দিয়ে দিয়েছে।

স্কুলে টুর্না'মে'ন্ট হবে দেখে হয়তো তুরের বান্ধবীরা একজন ও আসেনি।আজকে তো ধ্রুবকে ও আসতে বলে আসেনি।তুরকে একা একা বাড়ি ফিরতে হবে।এটা ভেবে অরিন আয়েশা কে ব'কতে ব'কতে গেট দিয়ে বের হচ্ছে।

ফুটপাত ধ'রে কিছুটা এগোতে হঠাত করে একটা ছেলে তুরের সামনে দাঁড়ায়।তুর চ'ম'কে যায়।ছেলেটিকে এ'ড়ি'য়ে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করে।কিন্তু ছেলেটি দুহাত দুপাশে ছড়িয়ে পথ আ'গ'লে দাঁড়ায়।ভ'য় পেয়ে একদম কাঁদো কাঁদো অব'স্থা তুরের।

"তোমার নাম তুরিন,তাই না?"
তুর এবার আরো বেশি ভ'য় পাচ্ছে।

"কি হলো বলো?তুমি অরিনের ফ্রেন্ড তুরিন না?"

তুর মাথা নাড়িয়ে বলে "জি"

"আমাকে চেনো?"

"জি না,ভাইয়া। "

"আমার নাম রাশেদ।আমি আর অরিনের বোন অরিত্রি একি ভার্সিটিতে পড়ি।"
------ 

"শোনো আমার একটা কাজ করে দিবে,আপু?"

তুর হ'ক'চ'কিয়ে গেল।"জি না ভাইয়া আমি দুঃ'খীত।আপনার সাথে কথা বলেছি এটা জানতে পারলেই ধ্রুব ভাইয়া বকবে,এমন কি মা'ইর ও দিতে পারে। "
বলেই চলে যাচ্ছে।

"প্লিজ,প্লিজ,বোন।আমার কাজটা একটু করে দেও।খুব বি'প'দে আছি।"

------ 

"অরিনের বোন অরিত্রিকে চেনো?ওর বি'এফ আমি। দুই বছর ধ'রে আমাদের স'ম্পর্ক।কিন্তু কয়েক দিন আগে ওর বাসায় সব জেনে যায়।"

এতোক্ষণে তুর যেন কিছুটা স'স্থি পায়।

"তার মানে আপনি আপুর সেই বি'এফ?"

"হুম "

"আচ্ছা বলেন কি করতে হবে।যদি পারি করবো না পারলে নেই।"

রাশেদ তুরের হাতে ধরে রাস্তার পাশের একটা গাছের আ'ড়া'লে টে'নে নিয়ে যায়।তুর খানিকটা ইত'স্ত'ত করে।কিন্তু রাশেদের সেসব খেয়ালে নেই।

"ওদের বাসায় ঝা'মে'লার জন্য অরিনের উপরও প্রে'শা'র পড়েছে।আসলে অরিত্রির মা বাবা গত এক মাস আগে  অরিত্রিকে স'ন্দে'হ করে ওর ফোন নিয়ে নেয়।তাই অরিনের মাধ্যমে চিঠি খবরাখবর পৌঁছাতাম।কিন্তু অরিন ও দুই দিন হলো ধ'রা পড়েছে।তাও আমার দেয়া চিঠি সমেত।তাই অরিন ও স্কুলে আসতে পারছেনা।এজন্য অরিত্রির বাবা অরিত্রিকে মে'রে'ছে।গতকাল লু'কি'য়ে ল্যা'ন্ড লাইন থেকে কল করে দুই মিনিট কথা বলে জানায়।তা না হলে অরিনকে দিয়ে পাঠাতাম।এই যে এই চিঠিটা একটু ওদের বাসায় গিয়ে অরিত্রির কাছে দিয়ে আসবে।আর অরিত্রি চিঠি দিতে পারে,দিলে নিয়ে আসবে। পারবে না?"

তুর চিঠিটার দিকে একবার তাকিয়ে আবার রাশেদের দিকে তাকায়।"কিন্তু যদি কেউ জানতে পারে?"

"কেউ জানবে না।"

বলে তুরের কাধের ব্যাগটা নিয়ে একটা মোটা বই বের করে।আর তার ভিতরে রেখে দেয়।তুর শুধু বো'কা'র মতো তাকিয়ে দেখছে আর ঢোক গি'লছে।

"তুমি এই বইটা হাতে নিয়ে অরিনদের বাসায় যাবে।কেউ স'ন্দে'হ করবে না।তুমি আমার ছোট বোনের মতো।আমি জানি অরিত্রি খুব কান্নাকাটি করছে। প্লিজ আপু কাজটা করে দেও।"

"ভাইয়া,আমার বাসায় জানতে পারলে..... "

কথাটা শেষ করার আগেই রাশেদ তুরের হাতে ধ'রে বলে"প্লিজ বোন না করো না।ভাইয়ের কাজটা করে দেও।অরিত্রি কে না পেলে আমি ম'রে যাবো।অরিত্রি ও আমাকে ছাড়া বাঁ'চ'বে না।তোমার পায়ে ধ'রতে বললে তাই করবো,,প্লিজ বোন না করো না।"
বলে ঝরঝর করে কেঁদে দেয়।

রাশেদকে কাঁদতে দেখে তুরের খুব মা'য়া হলো।আর ওদের ভালোবাসা দেখে,যে করেই হোক সা'হা'য্য করবে বলে ঠিক করে।

"ভাইয়া কাঁদবেন না।আমি যে করেই হোক পৌঁছে দিবো।"

আ'বে'গে আ'প্লূ'ত হয়ে রাশেদ তুরের কাধে হাত রেখে কিছুটা দূরত্ব রেখে জ'ড়িয়ে ধ'রে।তবে দূর থেকে দেখলে সেটা বোঝার উপায় নেই।তারপর নিজের চোখ মু'ছে তুরের গাল টে'নে দেয়।

হাতে ধ'রে টে'নে একটু সামনে থাকা এক দোকান থেকে আইসক্রিম,চকলেট,চিপ্স কিনে দেয়।
তুরের হাজার বা'র'ণ স'ত্ত্বেও জো'র করে ব্যাগে ঢু'কি'য়ে দেয়।

"কিসের না রে।বলেছি না তুমি আমার ছোট বোন।ভাইয়ের কাছে কিসের না।হুম। যাও বাসায়।আর কালকের মধ্যে যেভাবে পারো দেয়ার চেষ্টা কোরো,কেমন।"তুর বাসায় চলে যায়।

ধ্রুব উ'চ্চ'ত'র ট্রে'নিং ও লাই'সে'ন্সে'র জন্য হা'ঙ্গে'রি চলে যাবে কয়েক দিনের মধ্যে।হাতে বেশি দিন সময় নেই।তাই বাড়িতেই বেশি সময় কা'টা'য়।

এদিকে সেদিন ফাহিম আসবে না দেখে,ধ্রুব একটা কাজ সে'ড়ে তুরকে আনতে যায়।

কিন্তু গাড়ি থেকে নেমে দেখে,একটা ছেলে তুরের হাতে ধ'রে টে'নে একটা গাছের আ'ড়া'লে নিয়ে যাচ্ছে।সঙ্গে সঙ্গে ধ্রুবর মাথায় আ'গু'ন ধ'রে যায়।ভাবে হয়তো ই'ভ'টি'জিং করছে। দ্রুত সামনে আ'গা'য়।ওই হাত ভে'ঙে দিবে।যে হাতে ওর প্রেয়সীকে ধ'রা'র সা'হ'স করেছে।অন্য কোনো পু'রু'ষ ওর প্রেয়সীর হাতে ধ'র'বে এটা কখনোই মানতে পারবে না।কিন্তু সামনে আ'গা'তে দেখতে পায়, তুর ও ছেলেটার সাথে বি'না সং'কো'চে কথা বলছে।

মনের ভিতরে থাকা ভ'য় ডানা মেলে স'ন্দে'হতে রু'পা'ন্ত'রি'ত হয়ে বেরিয়ে এসেছে মু'হূ'র্তে।মনের ভিতর কেন যেন এক প্র'ল'য়ে'র 'শং'কা পাচ্ছে।

রাস্তার অপর পাশে গিয়ে দূর থেকে দেখছে আসল ঘ'ট'না'টা কি।

ছেলেটি একটা বইয়ের ভিতরে একটা চিঠির মতো কাগজ রাখে।তারপর বইটা ব্যাগে পুন'রা'য় রেখে দেয়।ছেলেটি উ'ল্টো দিকে ফিরে তুরকে আ'ড়া'ল করে রাখে।তাই ঠিক কি করছে,বুঝতে পারছে না।তবে খুব কাছা'কাছি মনে হচ্ছে দুজনকে। হঠাত তুরের কাধ জ'ড়ি'য়ে ধ'রে।এবারও দুজনেই উ'ল্টো দিকে মুখ করে আছে। রাস্তার অ'প'জি'টে থাকায় দুজনের  মুখো ভ'ঙ্গি ঠিক বুঝতে পারছে না।তুরের কাধ থেকে হাত স'ড়ি'য়ে তুরের গাল টে'নে দেয়।

ওর হাতে ধ'রে টে'নে একটা দোকানে নিয়ে যায়। কিছু জিনিস ভ'র্তি একটা পলিথিন ওর ব্যাগে রাখে।তুর মুচকি হাসি দিয়ে বাড়ির পথে হাটা ধ'রে।


চলবে.....

إرسال تعليق

অনুগ্রহ করে স্পাম করা থেকে বিরত থাকুন।
Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.