আমাদের সাথে সোস্যাল মিডিয়ায় যুক্ত থাকতে আমাদের ফেইসবুক পেইজে লাইক দিন Facebook Follow us!

এক গুচ্ছ মাধবীলতা- গল্প কন্যা ( পর্ব-০৭ )

গল্প কন্যার ধারাবাহিক রোমান্টিক গল্পঃ ' এক গুচ্ছ মাধবীলতা ' পর্ব-০৭,প্রেম কাহিনী,এক গুচ্ছ মাধবীলতা,গল্প কন্যা (ছদ্ম নাম),ধারাবাহিক,
Estimated read time: 8 min

এক গুচ্ছ মাধবীলতা- গল্প কন্যা ( পর্ব-০৭ )


৭.
মনে হচ্ছে শ'ক্ত প'ক্ত কোনো কিছুর সাথে ধা'ক্কা খেলো।মুহূর্তে মাথা ঝি'ম ধরে গেছে।ঝিমঝিমে ব্যথা অনুভূতির জন্য চোখ মেলে তাকাতে ইচ্ছে করছে না। কিন্তু কোনো তী'ব্র পুরুষালি সুবাস ঘ্রাণেন্দ্রিয়তে ঠেকতে ই চ'কিতে চোখ মেলে মুখ তুলে চায়।
মুহূর্তেই ল'জ্জার বিশাল এক তর'ঙ্গলহরী এসে মধুকে কোথাও ভাসিয়ে নিয়ে যায়......
উজ্জ্বল গৌর বর্ণের সুঠাম দেহি অতি সুদর্শন এক মানব।শিক্ষকের মতো চশমা চোখে।ভ্রকু'ঞ্চিত করে পকেটে দু'হাত গুঁজে ভাবলেসহীন চেয়ে আছে।


মধু ছি'টকে দূরে সরে নত ম'স্তকে দাঁড়িয়ে থাকে।

পেছনে ধ'রা পড়া চো'রের মতো ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে দাঁড়িয়ে আছে বাকি দু'জন।

ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া কড়ি এক বার আগু'ন্তকটির দিকে তো এক বার নিজের বান্ধবীর দিকে তাকায়।বুঝে উঠতে পারছে না দো'ষটা কার হয়েছে ।আগু'ন্তকটিকে এখন কি ইচ্ছে মতো বকে দেয়া উচিত,নাকি ক্ষমা চেয়ে চলে যাওয়া উচিত।বোঝা না বোঝার মধ্যে।

অনতিবিল'ম্বে হতভম্ব হয়ে নতম'স্তকে দাঁড়িয়ে থাকা মধুকে ধা'ক্কা লাগায়।

ল'জ্জারা মধুর সারা গায়ে হূ'ল ফো'টাছে।কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই আগু'ন্তকঃকে পেছনে ফেলে মধু পুনরায় দৌড় লাগায়।একি সাথে বাকি দুজন ছুটে বের হয়ে যায় আমবন থেকে।

আমবন থেকে বেরিয়ে কিছুদূর যাওয়ার পর,মধু দাঁড়িয়ে হাপাতে থাকে।আক'স্মি'কতা কা'টিয়ে উঠতে পারছে না।কি থেকে কি হলো বুঝে উঠতে পারছে না।

কড়ি মধুর চোখের দিকে তাকাতেই ফিক করে দু'জন একি সাথে হেসে উঠে।ওদের হাসতে দেখে ছোটো মানুষ টিপু ও হাসতে শুরু করে।

উদ'ভ্রান্তের মতো কিছুক্ষণ হাসার পর বহুকষ্টে হাসি আ'টকে প্রথম মধু বলে উঠে,"ছিহ...!এই সাত সকালে কি কা'ন্ডটাই না ঘটলো বলতো!ইসস...!কোথাকার কোন ধবলা ব্যাটার গায়ের উপর গিয়ে পড়লাম।কি কে'লেং'কারী বলতো!কখন যে ওই ব্যাটা সামনে এসে দাঁড়ালো,টে'রই পেলাম না!উফফ..!মাথাটা এখনো ঝিমঝিম করছে।আমি তো ভাবলাম কোনো গাছের সাথে বা'রি খেয়েছি।"

আবারও তিনজনের অ'ট্টহাসি শুরু হয়।বহু কষ্টে নিজেকে নিয়'ন্ত্র'ণ করে কড়ি মধুকে বলে,"তোর চুলের কা'টা কই?চুলে তো মাটি লাইগা যাচ্ছে,তাড়াতাড়ি আ'ট'কা।এম্নে খোলা রাখলে তো জ্বীন-ভূতের ন'জর পড়বো।"

মধুর হু'শ ফেরে।আসলেই তো কা'টা'টা কোথায় ফেললো।অসাব'ধা'নতার ফলে কোথায় পড়েছে,কিছুতেই মনে করতে পারছে না।তেঁতুল পেঁ'চানো ওড়নাটা কড়ির কাছে দিয়ে,চুল গুলো সব পেঁ"চিয়ে হাত খোঁপা করে নেয়।

টিপু বলতে শুরু করে,"মধুপা তোমার চুল যে এত বড়ো... এই গুলা তোমার মাথায় রাখতে কষ্ট লাগে না।আমার মাথায় এতো বড়ো চুল থাকলে মনে হয়,ভারীর চো"টে মাথাডা খালি ব্যথা ব্যথা করতো।"

কড়ি টিপুর মাথায় গা'ট্টি মা'রে,"হ...তোরে বলছে,মাথায় চুল থাকলে মাথা ব্যথা করে ,গ'র্ধব কোনহানকার।"

এদের কথায় মধু ফের হেসে উঠে।হাসি থামিয়ে বলে,"এই চলচল সেই কখন আসছি বাড়ি থেকে।আজকে নি"র্ঘা"ত মা'র চেলি কাঠের পি'টু'নি খাবো।আমার চুলে তেল দেয়ার কথা।"

দুজনেই সায় দেয় ওর কথায়।তড়িঘড়ি পা চালায় বাড়ির পথে।ফটকের কাছে এসে উঁকি দিয়ে দেখে মাজিদা কাছে পিঠে আছে কিনা?নাকি খামারের দিকে।কাছে পিঠে না দেখে একেএকে তিন জনে মধুর ঘরে প্রবেশ করে।মধুর ঘরের বিছানার তলায় একটা চ'টের বস্তায় সব গুলো তেঁতুল ভরে রাখে।ঠিক করে বেলা ১২টায় তেঁতুল ভর্তা করবে।সবাই তখন বড়মাঠে উপস্থিত হবে।ওরাও মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানায়।আর দ্রুত প্রস্থা'ন করে।


অপর দিকে,

ব্ল্যাক টাউজার, অ্যাশ হুডি গায়ে চা'পিয়ে ,পায়ে ব্ল্যাক হোয়াইট মিশেল স্নিকারস এবং চোখে রেগুলার চশমা পড়ে প্রকৃতি বিলাস করতে বের হয়েছিল তরুণ ডক্টর স্নিগ্ধ।

প্রকৃতি বিলাস করতে করতে ঠান্ডা অনুভব হওয়ায়,মাথায় হুডির ক্যাপটা তুলে নেয়।পকেটে দুহাত গুঁজে শীতের সকালের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য অবলোকন করতে থাকে।হাঁটতে হাঁটতে শেখ বাড়ি ছেড়ে অনেকটা পথ অতিক্রম করে ফেলেছে।

শীতের সকাল প্রকৃতিকে এক পবিত্র সৌন্দর্যের সৃষ্টি করে, যা ছড়িয়ে থাকে সারাবেলা। তাই শীতকাল টা স্নিগ্ধর খুবই পছন্দ। গত বছর গুলোতে প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্য দেখতে পায়নি।

নিরিবিলি পথঘাট।শুধু পাতায় পাতায় টুপ টাপ শিশির ঝড়ার শব্দ হচ্ছে।

কিছুদূর যাওযার পর দেখতে পায় একটা পুরোনো সাইনবোর্ড।সাইনবোর্ডটি লক্ষ্য করে এগিয়ে যায়।

সামনে গিয়ে দেখে ঝং ধরা পুরোনো একটা সাইনবোর্ড।

সেখানে লেখা আছে"শেখ বাড়ির আমবন" আমবনের 'ন' তে ঝং পড়ে প্রায় মুছে গেছে।সাইনবোর্ড টা এক সাইড দিয়ে প্রায় ঝুলে পড়েছে।

বি'চ'ক্ষণ স্নিগ্ধ মনে মনে অনেক কিছু আ'ন্দাজ করতে পারছে।বাবার কাছ থেকে শুনে ছিলো বেড়িদিয়া গ্রামের আমবনটা নাকি বেশ কিছু বছর আগে জলের দামে কারো কাছ থেকে তার বাবা কিনে নিয়ে ছিলো।

মোটামুটি ভালো আমের ফলন দেয় এই আম বন।আম গাছ ছাড়াও নাকি বিভিন্ন দেশি বিদেশি প্রজাতির ফলের গাছ আছে এই বনে।

বনটা পর্য'বে'ক্ষণ করতে মনে ইচ্ছে জাগছে।কৌতূ'হল ব'শত ভেতরের দিকে প্রবেশ করতে থাকে।ভেতরে ঢুকতে ওর মনে হয়,ও ছাড়া ও অন্য কেউ আছে বনে।

স'ত'র্কতা অবল'ম্বন করে ধী'র'গ'তিতে এগিয়ে যাচ্ছে।কিছুদূর যাওয়ার পর মেয়েলি চা'পা কন্ঠস্বর কানে আসে।চারিদিকের গাছপালায় তখনও জমে আছে আবছা কুয়াশা।লক্ষ্য করে দেখে কেউ গাছ থেকে কিছু পারছে।সম্ভবত লুকিয়ে গাছের কোনো ফল চু'রি করছে।

তারা তাদের কাজে এতই মগ্ন যে গাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে কেউ যে তাদের কা'র্যক'লাপ প'র্যবে'ক্ষণ করছে লক্ষ্য ই করে নি।

শেষ পর্যন্ত কি হবে দেখার জন্য স্নিগ্ধ দাঁড়িয়ে থাকে।কেন যেন অচেনা আজানা মানুষ গুলোর এই লুকিয়ে চু'রিয়ে ফল পারার কাজটা ওর কাছে বেশ লাগছে।

ওদের ফল পারার কাজ শেষ হতেই লাফিয়ে একজন নেমে যায়।পরপর আরেক জন।কিন্তু একি!!দুজনেই তো দেখি নারী অবয়ব!

দূর থেকে কুয়াশার জন্য মুখের আদল ঠিক বুঝা যাচ্ছে না।হঠাৎ করে এক মানবীর হাতে থাকা কিছু ঝরঝর করে মাটিতে পড়ে গেলো।আর সবাই মিলে সেগুলো উঠাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

হুট করে একজন মানবী দৌঁড়ানো শুরু করে।বিষয়টা কি হয়েছে জানার কৌতূ'হল বশত গাছের আ'ড়াল থেকে বের হয়ে দাঁড়ায়।

দাঁড়াতেই থমকে যায়।ঝরঝর করে খুলে যায় মানবীটির স'র্পি'ল পাহাড়ি ঝর্ণার ন্যায় দীর্ঘকায় ঝলমলে মেঘ কালো কেশো রাশি।মানবীটি মুহূর্তেই হৃদয় কাঁপানো খিলখিলে হাসিতে হেসে উঠে।

নিস্তব্ধ বনে এই খিলখিলে হাসির শব্দ বার বার প্রতিধ্ব'নিত হচ্ছে।পুরো বনে এই মনোমুগ্ধকর হাসির শব্দ ছড়িয়ে পড়েছে।এই হাসির শব্দ পুরো বনে এক অসাধারণ ঝনঝনে ছন্দ তুলছে।

বনের চারিদিকে গাছগাছালিতে বা'ধা প্রা'প্ত হয়ে সেই শব্দ প্রতি'ধ্ব'নিত হচ্ছে। শিশির ঝরার শব্দের সাথে সেই প্রতি'ধ্ব'নি মিলে এক অনন্য সুর তুলছে।যা শ্রুতিপথে চমৎকার ভাবে প্রবেশ করছে।মনে হচ্ছে এই অপার ছন্দের তালে প্রকৃতিও নৃত্য করছে।এই নৈ'স'র্গিক চমৎকার শব্দে এক ব'শী'ভূত করণীয় ব্যাপার আছে। ঝনঝনে মনোমুগ্ধকর হাসির শব্দে পুরো অরণ্য কেঁ'পে উঠছে।আর কেঁপে উঠছে কারো হৃদয়।স্নি'গ্ধর কাছে নিজেকে কেমন নিয়'ন্ত্র'ণ হী'ন মনে হচ্ছে।

ভাবনার মাঝে এক ঝ'ট'কায় কেউ এসে বুকের সাথে ধা'ক্কা খায়।নিয়'ন্ত্র'ণহী'ন এক ক'ঠিন মনের মানব খুব করে চাইছে মানবীটির মুখশ্রী দর্শন করতে।

একেতো ছড়িয়ে ছি'টিয়ে দীঘল কালো এলোমেলো কেশো রাশির রূপ দেখে হতভম্ব হয়ে আছে।তার উপর বুকের উপর কারো উপস্থিতি।এই বি'শুদ্ধ ভা'র্জিন মনে লাবডুব লাবডুব তুলে দিয়েছে।

ভালো মন্দ বোঝার আগেই মানবীটি মুখ তুলে চায়।

এই মুখ তুলে তাকানোতেই কারো হৃদয় ঘা'য়ে'ল হয়ে যায়।মুহূর্তেই শত শত বার ঘা'য়ে'ল হয়ে যায় ।

মানবীটির মুখশ্রী দর্শনের পর অচি'রেই স্নিগ্ধর কপাল কু'ঞ্চিত হয়ে যায়।ডাগর ডাগর এই আঁখিদ্বয়ে যে কেউ প্রথম দেখায় ডুবে ম'রেছে।

ছি'টকে মানবীটি দূরে সরে যায়।আর নত ম'স্তকে সঙ্গীদের নিয়ে প্রস্থা'ন করে।

এখন পেছনে ঘা:য়েল হৃদয়ে দাঁড়িয়ে থাকা স্নিগ্ধর কি হবে?তার হৃদয়ের যে প্রাথমিক চিকিৎসা চাই।কিছুতেই যে ঘো'র কা'টিয়ে উঠতে পারছে না।হৃদপিণ্ডের অসাভাবিক চলাচল কিছুতেই থামছে না।নিজকে কেমন হার্টের পেশেন্ট মনে হচ্ছে।হঠাৎ করে কি ওর হৃদয'ন্ত্রের গো'লযো'গ দেখা দিলো?


নাহ..!

ঢাকায় গিয়ে এক বার চেক করে নিতে হবে।এভাবে হুটহাট হৃদয'ন্ত্রের ক্রি'য়ায় ব্যা'ঘা'ত ঘটলে তো অকা'লেই ঝরে পড়তে হবে।তার উপর কেমন অসাভাবিক ভাবে নিয়'ন্ত্র'ণ হী'ন হয়ে পড়েছে।

এই সব তো ভালো ল'ক্ষ্ম'ণ না!

__________


ঢাকা শহরের নাইট ক্লা'বে একের পর এক গ্লাস খালি করছে কেউ।পাশে থাকা মেয়েটি বলছে,"কুল ডাউন বেইবি,কুল ডাউন।এতো ওরিড হচ্ছ কেন?"

"কি করব বলো!ওর জন্য সারাজীবন সব কিছুতেই তানা শুনতে হয়েছে।আমার লাইফ হেল করে দিয়েছে।ব্লা'ডি.....! সুযোগ পেলে ওকে আমি শেষ করে দিবো। শুধু একটা সুযোগ পাই। দেখিয়ে দেবো আমি কি জিনিস! শুধু তোমায় পাশে চাই,বেইবি।"

ইমা:-তাই বুঝি আমাকে ছেড়ে,এভাবে আ'ষ্টেপৃ'ষ্টে ম'দ গি'লছো?

"কি করবো বলো কিছু দিন ধরে,পদে পদে আমাকে নিচু দেখানো হচ্ছে।ছোটো করে কথা শুনানো হচ্ছে।"

"হুঁ....,বুঝতে পেরেছি।আমি এখন পুরোনো হয়ে গেছি।তোমার চেয়ে আবিদ ই ভালো,আর যাই হোক আমাকে পেলে তার কিছু চাই না। নেহাৎই তোমায় ভালোবাসি বলে,তা না হলে কবেই ব্রেকআপ করে ফেলতাম।সেই কবে বলেছি,আমার কিছু ইমপর্টেন্ট শপিং আছে...।তুমি কানে তা'লা দিয়ে রেখেছো।আবিদ কে বললে কখন ই করে দিতো।"

"কি বলছো জান,এসব!আবিদ কোথা থেকে আসলো!ওর নাম তোমার এই পিংকি লিপছে নিবে না।আমিই কিনে দিবো।যা যা চাও সব কিনে দিবো।ও আসার পর থেকে কোনো টাকাই তো হাতাতে পারছি না কেউ,কি করবো বলো!তুমি সব কিছু লিস্ট করতে থাকো,একে বারে সব কিনে দিবো।আর একটা নিউ ফোন গিফ্ট করবো।হুঁমমম... বেইবি,মন খা'রা'প করে না।ওর নাম আর নেবে না....কেমন।"

"লাভ ইউ বেইবি।লাভ ইউ সো মাচ।"

"এখন যে আমাকে ও খুশি করতে হবে...হুঁ.... ।"

"তাই...?"

"তাই তো...! "

দুজনেই ক্লা'বের স্পেশাল রুমে চলে যায়।

"সব কিছু ঠিক ঠাক মতো পৌঁছে দিবি কিন্তু!তারা কিন্তু শহুরে মেহমান।আর ভালো মানুষের সন্তান।"

"কোনো চিন্তা কইরো না আম্মা,আমি সব ভালা মতো পৌঁছাই ,বুঝাই দিয়ে আসবো।"

মাজেদা হাঁস,মুরগি,মাছ,দুধ , কথা মতো সব কিছু বাবলু ও আর বাকি ছেলেদের দিয়ে শেখ বাড়ি পাঠিয়েছে।

"কিরে মাধবীলতা কই ছিলি?তোরে কি বলছি আর তুই কি করছোস!আজকে খালি বাড়ি থেকে বের হ...."

বলেই তেলের বোতল নিয়ে মধুর মাথায় লাগাতে থাকে।

"মা...!এতো কিছু কার বাড়ি পাঠাইছো?"

"পাঠাইছো কি?তোরে না বলছি... এই গ্রামের সবাই যদি অশু'দ্ধ কথা বলে,তর মুখ থেকে যেন না আমি অশু'দ্ধ ভাষা না শুনি।মনে থাকে না কে...?"

"আর হবে না মা।বলো না কোথায় পাঠালে এই গুলো?"

"শেখ বাড়ি....।ওই বাড়িত নাকি বিদেশ ফেরত মানুষ আসছে।জানোস শেখ বাড়ির আফজাল শেখের মনটা অনেক ভালো।এই গ্রামের এতো উন্নতি জীবনে ও হইতো না।যদি না সে মুখ ফিরে চাইতো।তোরা যে ইস্কুলে পড়ছ,ওইটা ও উনি বানাইয়া দিছে।উনার ঋণ শো'ধ করতে পারবি না।সারাজীবন উনার জন্য ওনার পরিবারের জন্য দোয়া করবি।বুঝছস...!"

"হঁ..."

"হঁ কি....? "

"জি মা... "

__________

আজমল শেখ,ঠিকাদার ওসমান,হাসিব,স্নিগ্ধর ড্রাইভার রহিম চাচাকে নিয়ে বের হয়েছে গ্রাম ঘুরে দেখাবে সেই জন্য।গাড়ি ধীরগতিতে গ্রামের ভেতর দিকে উপজেলা পর্যন্ত চ'ক্কর খেয়ে এসেছে। আজমল শেখ হাসিব এটা ওটা বলে যাচ্ছে।স্নিগ্ধ ভাবলেসহীন চেয়ে চেয়ে সব দেখছে।

বেশ অনেকটা জায়গা নিয়ে টি'নের বেড়া ঘেরা দেয়া একটা বাড়ি।বাড়িটির প্রবেশদ্বা'র ও টি'নের বেড়ার পুরোটা জুড়ে মাধবীলতা ফুলের ডাল পা'লায় ছেয়ে আছে।প্রবে'শদ্বা'রের উপরিভাগে কিছু রঙবেরঙে ফুলের সমারহে ছেয়ে আছে ।

বাড়িটির প্রবেশদ্বা'রের সন্নিক'ট হতেই নাসিকা ভেদ করে মিষ্টি সুবাস প্রবেশ করে।স্নিগ্ধ আবেশে চোখ বন্ধ করে নাক টে'নে নিশ্বাস নেয়।

আজমল শেখ বলতে নেয়,"এটা হইলো গ্রামের...."

হাসিব মুখের কথা কে'ড়ে নিয়ে উ'ত্তে'জিত হয়ে বলে,"ভাই এটা হইলো মধু দের বাড়ি।গ্রামরে রহমত আলি চাচার মেয়ে ও..."

কথাটা বলার সময় হাসিবের ঠোঁটের মৃদু হাসিটা স্নিগ্ধর নজর এড়ায়নি।ভ্রু'কু'ঞ্চিত করে ভাবুক দৃষ্টিতে তাকায় হাসিবের দিকে।

তারপর বলে,"রহিম চাচা গাড়ি থামান,এখানেই নামবো গাড়ির ভেতর ভালো লাগছে না।বাকিটা পথ হেঁটে যাবো।"

হাসিবের মনে মনে খুশি হওয়ার ব্যাপার স্নিগ্ধ টের পেয়ে যায়।আগে আগেই হাসিব নেমে যায়।ফটকের ফাঁক দিয়ে এক চোখে উঁকি মা'রে।

"হাসিব কি করছো!অন্যের বাড়িতে এভাবে উঁকি দিতে নেই,চলো...।"

স্নিগ্ধর কথায় হাসিব ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়।

সামনের দিকে অ'গ্রসর হয়।কিছু বাড়িঘর আর সরিষা ক্ষেত পেরিয়ে ওরা বড়মাঠের কাছে আসে।

হঠাৎ হাসিব বলে ওঠে,"ভাই ,এই খোতের আইল ধরে নদীর ধারে যায়।"

আজমল শেখ ছেলেকে থামিয়ে বলে,"স্নিগ্ধ বাজান,এই সামনে বিশাল বড়ো মাঠটা আমাগোই।এইটা দেখো।ভালো লাগে কিনা।এই জায়গায় পোলাপানরা খেলে।খালি খালি পইড়া আছে।"

স্নিগ্ধ দূর থেকেই ভালো করে পর্যবে'ক্ষণ করছে।একদম ই রাস্তার পাশে জায়গাটা।যাতায়াতের সুবিধা হবে।তবে গ্রামের ভেতরের দিকে হয়ে যায়।

মাঠের কাছাকাছি আসতেই ছেলে মেয়েদের হৈ-হু'ল্লোড় কানে বাজে।

"দেখছো বলছি না তোমারে...!"

বলতে বলতেই মাঠের সামনে এসে পড়ে।দেখে কিছু ছেলে মেয়ে হাসাহাসি করতে করতে, কোনো কিছু কা'ড়াকা'ড়ি'তে ব্যস্ত।

মাঠের ভেতরের দিকে যেতেই খেয়াল করলো সকালের দুইটা ছেলে মেয়ে।সেই মেয়েটা ও আছে।

ওদেরকে আসতে দেখে সবাই হাসি থামিয়ে নেয়।মধু আর কড়ি দ্রুতগতিতে মাথায় কাপড় তুলে নেয়।


"আসসালামু ওয়ালাইকুম চাচা।"
"ওয়ালাইকুম...
তুমি রহমতের মাইয়াডা না...!"

নিচের দিকে দেখে মাথা নাড়িয়ে স'ম্মতি জানায়।

এক গুচ্ছ মাধবীলতা- পর্ব-১১ পড়ুন/link/button

إرسال تعليق

অনুগ্রহ করে স্পাম করা থেকে বিরত থাকুন।
Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.