ধ্রবতারা লিখেছেনঃ গল্পকন্যা (ছদ্ম নাম)
আজকে ওদের বিয়ের সাত দিন।বাড়ির পরিস্থিতি সম্পর্কে ধ্রুব মোটামুটি জানে তবে তুর কিছু জানে না।তবে ধ্রুবকে বলেছে তুরকে দুই একদিনের মধ্যে নিতে আসবে।
দুইদিন ধ্রুবর কোনো ফ্লাইট নেই।
আজকে ওর বন্ধু হাবিবের বিয়ে।কমিউনিটি সেন্টারে।ধ্রুব দুজনের জন্য ম্যাচ করে কালো শাড়ি আর পান্জাবি কিনে এনেছিলো।
তুরকে তাড়াতাড়ি রেডি হতে বলে নিজে ও রেডি হতে যায়।কিন্তু তুর রেডি হবে কি করে শাড়ির কুচি তুলতে পারে না।বারবার চেষ্টা করছে খুব ই কঠিন ব্যাপার মনে হচ্ছে।
এদিকে ধ্রুব রেডি হয়ে পনের মিনিট যাবৎ অপেক্ষা করছে।ওর বন্ধুরা একের পর এক কল করে যাচ্ছে।ধ্রুব তুরকে ডাকে তুর শাড়ির কুচি ধরতে এতো মগ্ন যে একটা ডাক ও ওর কর্ণকুহরে প্রবেশ করেনি।
ধ্রুব কোনো সাড়া না পেয়ে ভিতরে ঢুকে যায়।আর থমকে যায়।শাড়ির কুচি ঠিক করায় ব্যস্ত তুরের আঁচলটা মাটিতে পড়ে আছে।
এক রঙা কালো ব্লাউজ আর শাড়িতে ফর্সা উন্মুক্ত উদর যেন চোখের সামনে চিলিক দিয়ে উঠে।
বেহায়া চোখ কিছুতে সড়াতে পারছে না।হঠাত তুর সামনে ধ্রুবকে দেখে উল্টো ঘুরে যায়। ধ্রুবর পুরো বেহাল অবস্থা।তুর শাড়ির আঁচল দিয়ে আষ্টেপৃষ্টে নিজেকে জড়িয়ে নেয়।
"এভাবে কেউ কারো রুমে ঢুকে।ম্যানার জানেন না।"
"অনেক বার ডেকেছি ,না শুনলে আমার কি দোষ।
"তাই বলে হুট করে ঢুকে যাবেন।"
"আজব! আমি তো আমার বউয়ের ঘরেই ঢুকেছি।অন্য কারো নাকি।আর এটা কি প্রথম দেখছি নাকি...? বায় দ্যা ওয়ে এতক্ষণ লাগছে কেন। সবাই ফোন করে পাগল করে দিচ্ছে।"
লজ্জায় তুর চোখ তুলতে পারে না।নিচের দিকে তাকিয়ে বলে"আসলে আমি শাড়ি পড়তে পারি না।"
"ওহ এই কথা। "
"আগে বলতে পারলি না?"
"ভেবেছিলাম পারবো।"
"আচ্ছা এদিকে আয়।"
তুর পুরো দস্তুর গলা থেকে পেট পর্যন্ত ঢেকে ধ্রুবর দিকে ফিরে দাড়ায়।
ধ্রুব একটা টিউটোরিয়াল দেখে।তারপর তুরকে বলে "এভাবে থাকলে কিভাবে পড়াবো।"
"তো কিভাবে থাকবো।"
ধ্রুব বিছানায় পড়ে থাকা তুরের ওড়না দিয়ে ওর পেট পর্যন্ত ঢেকে দেয়।
তার পর প্রথম থেকে শাড়ি পড়ানো শুরু করে।আধাঘণ্টা লাগিয়ে কুচি ঠিক করে ওর হাতে দেয় কুচিটা গুঁজে নিতে।
এভাবেই একঘন্টার যুদ্ধাবশেষে শাড়ি পড়া কমপ্লিট হয়।
দশ মিনিট টাইম দিয়ে লিভিং রুমে অপেক্ষা করে।তুরের সাথে কোনো প্রসাধনী না থাকায়।ব্যাগে থাকা একটা কাজল আর লিপস্টিপ দিয়ে একদম সিম্পল সাজে সেজে বের হয়।
চুল টাকে শুধু খোপা করে নেয়।ধ্রুব তো এতেই ঘায়েল।উফফ বিয়ের পর কি মেয়েটার সৌন্দর্য বেড়ে গেল নাকি।
"চলুন।"
"হ্যাঁ ,চল।"
আজকে ইচ্ছে করেই ধ্রুব গাড়ি নিয়ে বের হয়নি।প্রেয়সীর সাথে পাশাপাশি বসে রিক্সা করে একটু ঘুরা হবে তাই।
যাওয়ার পথে ধ্রুব ফুলের দোকান থেকে বেলি ফুলের গাজরা কিনে দেয়,খোঁপায় পড়ার জন্য।
ওরা কমিউনিটি সেন্টারে পৌঁছায়।
দুজনের এমন পারফেক্ট লুক দেখে তো সবাই তাকিয়ে থাকে।ধ্রুবর অবিবাহিত ফ্রেন্ডরা তো সেই লেভেলের মজা নেয় দুজনকে নিয়ে। ধ্রুব আর হাবিবকে শুধু খোঁচাচ্ছে ।
"আজকে বউ নেই বলে এভাবে বউকে নিয়ে ঘুরতে পারছি না।বাসর ও করতে পারছি না।"
ওদের নির্লজ্জ মার্কা কথা শুনে তুর সাইডে চলে যায়,হাবিবের ফেমিলি মেমবারদের কাছে।
সকলে এবার ধ্রুবকে চেপে ধরেছে বাসরের এক্সপেরিয়েন্স বলতে।
ধ্রুব ও সুন্দর করে বলে ,"শুনবি?খুব ইন্টারেস্টিং এক্সপেরিয়েন্স।"
"হুম... হুম... বল... বল..."
"বিয়ের দিন থেকে এখন অবদি বউ এক রুমে আমি অন্য রুমে।ভালো না বল।"সকলে হতাশ হয়ে তাকিয়ে থাকে।
খুব দুঃখ প্রকাশ করে।কেউ কেউ সান্ত্বনার বাণী ছুড়ে।তবে হাবিবকে ছাড়েনা।সবাই হাবিবকে নিয়ে সেই লেভেলের মজা করে।
হাবিব ও বলে"আমার ও দিন আসবে তখন দেখা যাবে।"
এতো কিছুর মধ্যে ও ধ্রুবর চোখ বারবার শুধু ঘুরে ফিরে তুরের দিকে ই যাচ্ছে।অনন্য লাগছে ওর এক মাত্র লাজুক বউটাকে।
কোথা থেকে এক মহিলা এসে তুরকে চৌদ্দ গুষ্টির খবর জিজ্ঞেস করে ফেলছে।অনেক ক্ষণ যাবৎ কথোপকথন দেখে ধ্রুব এগিয়ে আসে।
মহিলা ধ্রুবকে গার্ডিয়ান ভেবে সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে বসে।মহিলার কথা শুনে কয়েকটা কড়া কথা শুনাবে ভাবে।
কিন্তু পরোক্ষণে তা না করে তুরের কাধে হাত রাখে।
নিজের কিছুটা কাছে টেনে বলে,"শি ইজ মাই ওয়াইফ,আন্টি।"
মহিলা তুরের আপাদমস্তক দেখে চুপ করে চলে যায়।
তুর কাধ থেকে চট করে ধ্রুবর হাত নামিয়ে দেয়।
"শি ইজ মাই ওয়াইফ "কথাটা শুনে শরীরে যেন ইলেকট্রিক শক লেগেছে।যার প্রভাব এখনো রয়ে গেছে।
ওই কমিউনিটি সেন্টারে একটা স্পেশাল রুমে হাবিব আর নতুন বউয়ের বাসর সাজানো হয়।সেখানে ওদের পৌঁছে দিয়ে তবে বের হয়।
অনুষ্ঠান শেষ হতে হতে রাত প্রায় ১২টা বেজে যায়। ধ্রুব তুর বাড়ি যাবার জন্যে রাস্তায় বের হয়ে দেখে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে।
কিছু ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে কিন্তু রিক্সার কোনো দেখা নেই।
"সামনে এগিয়ে যাই,এভাবে দাঁড়িয়ে থেকে তো রিক্সার দেখা মিলবে না।"
ধ্রুব ও সায় দেয়। আর সামনে এগোতে থাকে।
দুজনে পাশাপাশি হাটছে।দুজনের মনেই নতুন সম্পর্কের নতুন অনুভূতি।ভালো লাগা,মুগ্ধতা কাজ করছে।
তুরের মন এসবের পাশাপাশি এক দোটানায় ভুগছে।
কি করবে কি করবে না ভেবে পায় না।নিজের এই অনিশ্চিত জীবনে আরো এক নতুন মোড়।বুঝতে পারছে না,ওকে কোন দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
ওর ভাবনার মাঝে ঝপঝপিয়ে বৃষ্টি নামে।আর দুজনের সর্বাঙ্গ ভিজিয়ে দেয়।নব দম্পতি একে অন্যের পানে বোধহীন বাচ্চাদের ন্যায় তাকিয়ে থাকে।
"এটা কি হলো!"
"কি আবার বৃষ্টি হলো।"
"সেটা তো আমিও দেখছি।কিন্তু ভিজে গেলাম যে।"
"এখন এটা কি আমার দোষ তুই তো বললি চলেন সামনে।বৃষ্টি তো আর ইচ্ছে করে আমি নামিয়ে তোকে ভিজাইনি।"
"আমি কি বলেছি নাকি।আজব!"
"এতো বকরবকর না করে দ্রুত পা চালা।ভিজে জ্বর চলে আসবে।"
ধ্রুব দ্রুত হাটছে।কিন্তু তুর ওর জুতো পড়ে হাটতে পারছে না।তার উপর ভিজে লেপ্টে থাকা শাড়ি।একদমি সামলিয়ে হাটতে পারছে না।বৃষ্টিতে ভেজার ফলে শাড়ি টা যেন ভারি হয়ে নিচে টানছে।
ধ্রুব অনেক খানি এগিয়ে, পাশে পায়ের শব্দ না পেয়ে পিছনে তাকায়।দেখে তার একমাত্র বউ পিছনে পিপীলিকার নেয় পা টিপে টিপে আসছে।
পুনরায় পিছনে গিয়ে জিজ্ঞেস করে "প্রবলেম কি?"
"শাড়ি ভারি হয়ে গেছে ভিজে কুচি গুলো মনে হচ্ছে খুলে যাবে।আর জুতো গুলো পড়ে হাটতে পারছি না।"
ধ্রুব তুরের অসহায় মুখ দেখে,উপর থেকে নিচে তাকিয়ে বলে "জুতো খোল।"
"কেন?"
"এমনি।যেটা বলছি কর।"
তুর কথা মতো জুতো খুলে দাঁড়ায়।ধ্রুব শাড়ির কুচিটা মিডেল থেকে ধরতে যায় ।
মোটামুটি পাতলা ধরনের শাড়ি বৃষ্টিতে ভিজে শরীরের সাথে আটসাট ভাবে লেগে আছে।
ধ্রুব কুচি ধরতে হাত বাড়াতেই তুর এক পা পিছনে চলে যায়।
"একি? হাটার ব্যবস্থা করছি ভালো লাগছে না।?"
"তাই বলে এভাবে...? "
"হুম ,চুপকরে দাড়া এক মিনিট। "
ধ্রুব ফের শাড়ির কুচি মিডেল থেকে ধরে তুলে কোমরে গুঁজে দেয়।
"হাট তো এবার"
তুর দু'কদম আগায় হ্যাঁ এবার এতোটা কষ্ট হচ্ছে না।মনে মনে ভাবে "এ জন্যই তো আপনি পারফেক্ট।"
ধ্রুব তুরের জুতো হাতে নিয়ে হাটা ধরে।
"আরে আরে কি করছেন।ছাড়ুন "
ধ্রুব হাত থেকে জুতো জোড়া নিতে চায়।
"কি?হাট দেরি হচ্ছে।এটা আমার দায়িত্বর মধ্যে পড়ে। দ্রুত পা চালা।"
"এটা আবার কেমন দায়িত্ব?"
"তুই বুজবি না"
কি আর করা হাটছে ধ্রুবর পাশাপাশি।ধ্রুবর খুব ইচ্ছে করছে তুরের হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে হাটতে।বৃষ্টির তোড় বারছে আর প্রেয়সীর কোমল হাতটি আকড়ে ধরে,বৃষ্টি বিলাস করার প্রবল ইচ্ছেটা ও বৃষ্টির সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে।
এভাবে আরো দশ মিনিট হাটার পর একটা রিক্সার দেখা মিলে।
প্রথমে ধ্রুব উঠে।কিন্তু ভেজা শাড়ি পায়ের সাথে লেপ্টে থাকার দরুন তুর কিছুতেই উঠতে পরে না।পা উঠালে মনে হয় পেটিকোট সমেত উঠে যাচ্ছে।
দুই বার চেষ্টা করার পর চুপ করে দাঁড়িয়ে যায়।ধ্রুব বিষয়টি পুরোপুরি খেয়াল করে।
রিক্সা থেকে নেমে সোজা কোলে তুলে রিক্সায় বসিয়ে দেয়।
এ ঘটনায় লাজুক তুরের যেন প্রচন্ডরকম শীত শীত অনুভূতি হয়।একদম হীম শীতল অনুভূতি যাকে বলে।
ধ্রুব তুরের দিকে না তাকিয়ে রিক্সায় চেপে বসে।এবার তুরের হাড় কাঁপানো শীত লাগছে।একদম দাঁতে দাঁত বাড়ি লাগছে।
পাশে বসে থাকা ধ্রুব ও যে আজ,
প্রেয়সীর বৃষ্টিস্নাত মাতাল করা রুপে বেসামাল।ভেতরের প্রেমিক মনটা যে বলছে "তোরই তো মনোহরিণী মায়াবতী হৃদয়ের রাণী।কাট খড় পুড়িয়ে অর্জন করা সম্পদ।হো না একটু বেহায়া,একটু বেসামাল।একটু বেহায়া না হলে কি প্রেমিক হওয়া যায়।"
এপার্টমেন্টের সামনে আসে।ধ্রুব হাত বাড়িয়ে আলগোছে ফের কোলে তুলে নামিয়ে গেটের সামনে দাড় করায়।রিক্সায়ালাকে খুশি হয়ে তিন গুণ ভাড়া দিয়ে বিদায় করে।
গেটে কয়েক বার নক করতে,কেয়ার টেকার গেটের ছোট্ট পকেট দিয়ে তাকায়। ধ্রুব কে দেখে সালাম দিয়ে গেট খুলে দেয়।
দুজনেই ভিজে চুপসে আছে।
"আল্লাহ মামুণি দেহি একেবারে ভিজা গেছেন।ঠান্ডা লাইগা যাইবগা তো।তাড়াতাড়ি যাইয়া গরম কাপড় পইড়েন, কি অসময়ে বৃষ্টিডা আইলো।"
"জি চাচা।"
"স্যার,জেনারেটরে একটু সমস্যা হইছে।ঠিক করার লোক আনতে পারি নাই।কাইলকা সকালে ঠিক করতে হইবো।এখন কারেন্টেই চলতাছে।
বৃষ্টির দিন তো লোডশেডিং হইতে পারে।মোমবাতি লাইট সাথে রাইখেন।সবাইরে যাইয়া বইলা আসছি।আপনেগো ফ্লেলাটে ও গেছিলাম।তবে আপনেরা তো বাসায় ছিলেন না,তাই জানাইতে পারি নাই।"
"ঠিক আছে চাচা।ধন্যবাদ ঘুম থেকে উঠে মধ্য রাতে ও আমাদের ইনফরমেশন দিতে ভুলেননি দেখে।আসি চাচা।চল।"
রাত প্রায় দুটো ছুইছুই।মুশলধারে বৃষ্টি পড়ছে।বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে।আজ যেন প্রতিযোগিতা লেগেছে বিদুৎ কতো চমকে চমকে রাতের আধার কে আলোকিত করতে পারে।আর বৃষ্টি কতো টাপুরটুপুর রিনিঝিনি ছন্দ তুলে ধরনি মাতাতে পারে।
লিফট দিয়ে দুজন চার তলায় পৌঁছে।বৃষ্টির পানি গা বেয়ে পড়ে ফ্লোর ভেসে যাচ্ছে।
ফ্ল্যাটে ঢুকে ভেজা শাড়ি নিয়ে তুর রুমে ঢুকে।
ধ্রুব ও ড্রেস চেন্জ করতে অন্য রুমে ঢুকে।কিন্তু হঠাত ভাবে "যদি এই রাত করে মেয়েটা গোসল করে।তাহলে তো জ্বরে ভুগবে।
বারণ করতে হবে।"
ছুটে ওই রুমে যায়।
রুমের ভেতরে খাটের সংলগ্ন ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাড়িয়ে আছে তুর।প্লাজো টপস হাতে।ভেজা শরীরে দ্রুত রুমে ঢুকার দরুন দরজা আটকাতে ভুলে গেছে।
ভেজা শাড়িটা কোমড় থেকে খুলে নিচে ফেলে দেয়।আর প্লাজো ও টপসটা হাতে নেয়।অমনি ধ্রুব নিচের দিকে দেখতে দেখতে হন্তদন্ত হয়ে তুরের পিছনে দাঁড়ায়।আয়নায় ধ্রুবর প্রতিভিম্ব দেখে লজ্জা ভয় আর আকস্মিকতায় হাতে থাকা কাপড় নিচে পড়ে যায়।
আজকে যেন লজ্জা পাওয়ার দিন।একের পর এক লজ্জা জনক পরিস্থিতি সৃ*ষ্টি হচ্ছে।
ধ্রুব হুট করে ভিতরে ঢুকে, উপরের দিকে তাকিয়ে পুরো হ্যাং হয়ে যায়।
ধ্বংসাত্মক রূপে দাঁড়িয়ে থাকা বৃষ্টিতে ভেজা কালো মেঘের দেশের মেঘ কন্যাকে দেখে ঘোর লেগে যায়।হিতাহিত জ্ঞান ভুলে যায়।এক পা এক পা করে সামনে আগায়।
তুর আয়নায় ধ্রুবর ঘোর লাগা চাহুনিতে ছুটে পালাতে চায়।ভয় লজ্জা যেন ওর গলা চেপে ধরেছে।শ্বাস প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।কিন্তু পা দুটো কোনভাবেই নড়াতে সক্ষম হচ্ছে না।
ধ্রুব তুরের চুলের খোঁপায় নেতিয়ে পড়া বেলি ফুলের গাজরায়,নাক ডুবিয়ে ঘ্রাণ নেয়।
আলগোছে খোঁপা করা চুল খুলে দেয়।চুল থেকে ফোটা ফোটা পানি ঘাড়ে চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে।
ঘাড়ের চুল গুলো এক পাশে সরিয়ে গলায় ওষ্ঠ ছোঁয়ায়।ভয়ানক কম্পন শুরু হয় তুরের শরীরে।
কোনো বাধাই যেন আজকে আর দুজনেকে আলাদা করতে পারবে না।
কম্পোমান ভেজা শরীরটা নিজের দিকে ফিরায়।চোখ বন্ধ করে রাখা তুরের কম্পিত ওষ্ঠ যেন ধ্রুবকে আরো বেসামাল করে দেয়।
তখনই হয় লোডশেডিং।
কোমল দেহটা আষ্টেপৃষ্টে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে।
কোনো কিছুর পরোয়া না করে প্রেয়সীর মুখ টা উচু করে ওষ্ঠে ওষ্ঠ মিলিয়ে দেয়।ওষ্ঠ ছেড়ে সারামুখ গলদেশে একের পর এক অজস্র কোমল স্পর্শ করে।পাঁচ মিনিট পর তুরের কম্পমান শরীরটা হঠাত ই যেন নেতিয়ে পড়ে।
ধ্রুবর হুশ ফিরে।
নিজেকে আবারো রাসকেল মনে হচ্ছে।
"কনট্রোল লেস হিউম্যান শিট শিট।কেন যে ওর অনুমতি ছাড়া....... উফফ।না জানি ও ভাবে একা পেয়ে ওর অনিচ্ছা সত্ত্বে..... শিট..."
আর ভাবতে পারছে না।
চলবে.....