আমাদের সাথে সোস্যাল মিডিয়ায় যুক্ত থাকতে আমাদের ফেইসবুক পেইজে লাইক দিন Facebook Follow us!

ধ্রুবতারা-গল্প কন্যা পর্ব-২৫

Estimated read time: 9 min

ধ্রবতারা 
লিখেছেনঃ গল্পকন্যা(ছদ্ম নাম)



সবাই চলে গেছে।
কিন্তু তুর এখনো মুর্তির মতো বসে আছে।

ধ্রুব দুপুরের রান্না করা খাবার গুলো গরম করে একটা প্লেটে নিয়ে আসে।তুরের পাশে বসে।ছোট এক গ্রাস ওর মুখে সামনে তুলে ধরে।

তুরের কোনো হেলদোল নেই। কাধে হাত দিয়ে  ধাক্কা দেয়।

"কি হলো... খাচ্ছিস না কেন?সারাদিন পেটে কিছু পড়েনি।কালকে আবার আমার ফ্লাইট আছে।ঘুমাতে হবে।"

এটা শুনে তুরের পিলে চমকে উঠে।

"খাব না আর আপনার সাথে ঘুমোবো ও না।"

"তোকে কে বলেছে আমার সাথে ঘুমাতে।বেশি বুঝিস।হা কর।"

তুর চুপ করে নিচের দিকে তাকিয়ে বসে থাকে।কিছুক্ষণ ওর দিকে তাকিয়ে থেকে ধ্রুব বিরক্ত হয়ে যায়।এ মেয়ে একদমি কথা শুনে না।বা হাত দিয়ে গালে চেপে ধরে ডান হাতের খাবারটা জোর করে মুখে ঢুকিয়ে  দেয়।

"যে যেমন তার সাথে তেমনি করতে হয়।এতদিন কিছু হলেই,অধিকার দেইনি...অধিকার দেইনি...করেছিস।এখন অধিকারের সার্টিফিকেট নিয়ে নিয়েছি।কারো কোনো কথা কোনো  বারণ শুনবো না।অনিয়ম হলেই বিভিন্ন লেবেলের থেরাপি দিব।বিয়ের জন্য খুব লাফিয়েছিলি।এখন স্বামী সংসার কি জিনিস বুঝিয়ে দিব।"

এগুলো বলছে আর জোর করে ওর মুখে খাবার দিচ্ছে।তুরের কোনো নিষেধ শুনছে না।মাঝে মাঝে নিজে ও খাচ্ছে।

"কত বড় সাহস চিন্তা করা যায়।জিসানকে বিয়ে করার কথা বলে...।শুধু মাএ চাচার মেয়ে বলে,আর চাচাকে বলেছি তাই এখনও কিছু করিনি।না হয় এতক্ষণে বুঝতি ধ্রুব কি জিনিস।"

তুর বিছানায় বসে বসে ভাবছে।

বিয়ের বিষয়টা বাড়িতে জানা জানি হলে কিভাবে নিবে।পুরো কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে।সব দোষ ওর ঘাড়ে পড়বে।হয়তো ও বাড়ির কেউ কখনো কোনো সম্পর্ক রাখবে দূরে থাক,কথা ই বলবে না।বাবা কিভাবে সব জেনে বুঝে বিয়েতে রাজি হলো।

ধ্রুব রুমে ঢুকে দেখে তুর চিন্তা মগ্ন।গলা খাখারি দিতেই তুরের ধ্যান ভাঙে।ধ্রুবকে এতো রাতে এ রুমে দেখে খানিকটা ভরকে যায়।

"আপনি এ রুমে? "

"কেন? আমার বাড়ি,আমার ঘর আসাতে পারবো না? "

"হেয়ালি না করে কেন এসেছেন সেটা বলুন।"

ধ্রুব তুরের কানের কাছে ঝুকে স্লো ভয়েসে বলে"বউয়ের... সাথে... বাসর... করতে...। "

কথাটা যেন কানের মধ্যে একদম ঝাঁঝাঁ লাগিয়ে দিয়েছে।ছিটকে দু হাত দূরে সরে যায়।ধ্রুব হেসে দেয়। 

"চার্জার নিতে এসেছি।"

চার্জার নিয়ে চলে যায়।

___________ 

পরের দিন। 

ওই বাড়িতে ফজিলাতুন্নেছা মরা কান্না জুড়ে দেয়।ওনাকে সান্ত্বনা দিচ্ছে ওনার ছোট বউমা রিনা বেগম। 

"এডা কি করলো গো বউ।আমি তো এইডার ভয়ই পাইতাছিলাম।আমার ভাই যে এ ছেমড়ির প্রতি দুর্বল আমি আগেই টের পাইছিগো।হের লাইগ্যা ই তো এ ছেমড়ির বিয়ার লেইগ্যা জোর দিতাছিলাম।আল্লাহ আল্লাহ করতাছিলাম,কবে এই আপদ বিদায় হইবো । এডা কি করলো।"

সবাই লিভিং রুমে বসেছে।ফজিলাতুন্নেছা আর রিনা বেগম ডাইনিং স্পেসের চেয়ারে বসে কান্না কাটি হায় হুতাশ করছে।

কবির সাহেব কিছুক্ষণ আগে ই কথাটা সকলকে জানিয়েছেন।

সকলে অবাক।কারো মুখে কোনো রা নেই। 
শুধু ওই দুজনের চেঁচামেচি ছাড়া।

কবির সাহেব বলেন"ছোট বেলা থেকে ই তুরের প্রতি ধ্রুবর কেয়ার করা আমার ভালো লাগতো।ওর কেয়ারিংটা তুরের প্রতি আর সবার থেকে আলাদা মনে হতো।তুরের প্রতি ওর টান দেখে,তখন থেকে আমার ইচ্ছে ছিলো,যদি ওরা দুজন চায় 
তাহলে ওদের চার হাত এক করবো।কিন্তু দিন দিন  দুজনের দূরত্ব বাড়ে।ওদের আচরণে তেমন কিছু পাইনি।তখন মনে থাকা ইচ্ছেটা ও ধামাচাপা পড়ে যায়।"

কিন্তু গতকাল ধ্রুব আমাকে ফোন করে  বলে,"চাচা আমার কথা গুলো দয়া করে মনোযোগ দিয়ে শুনবেন।আ'ম সিরিয়াস।আমি বুঝতে শিখেছি পর থেকে তুরকে পছন্দ করি।মানে.... আমি তুরকে ভালোবাসি। সেই ছোট্ট বেলা থেকে,আমি শুধু ওকে ভালোবাসে এসেছি। ওর চোখের পানি ওর কষ্ট দেখে আমার আর সহ্য হচ্ছে না।চাচা আমি ওর দায়িত্ব নিতে চাই।সারাজীবনের দায়িত্ব। সুখ দুঃখের সঙ্গী হতে চাই।ওর পরিচয় হতে চাই।একটা ভরসার জায়গা হতে চাই।এবং ওকে বিয়ে করতে চাই।আর সেটা আজকে ই।প্রথমে আপনাকে বলছি।এখনো আপনার মেয়ে কে জানাইনি। আমি এটা খুব ভালো করে জানি,আপনি না চাইলে কখনো ওকে পাওয়া সম্ভব না।জানি না ওকে রাজি করাতে পারবো কি না।তবে এটা জানি আপনাকে ছাড়া ও বিয়ে করবে না।আর ওকে না পেলে জীবনে কাউকে বিয়ে করবো না।দয়া করে আমার কথা গুলো কে গুরুত্ব সহকারে নিবেন।আরো আগেই বলতে চেয়েছি,কিন্তু সময় সুযোগ হয়ে উঠেনি।যদি কোনো ভাবে তুরকে হারাতে হয় আমার ছায়া আপনারা কখনো দেখতে পাবেন না। তুর কাজের সন্ধানে আছে।যে কোনো সময় এখান থেকে চলে যাবে।তাই যা করার আজকে ই করতে হবে।পাঁচ মিনিটের মধ্যে আমাকে আপনার ডিশিসন জানান।আমি ও দেখতে চাই বিয়ের পর কে আমার বউকে কষ্ট দেয়।"

"এ কথা শুনে আমি আমার মেয়ের জন্য আসমানের চাঁদ হাতে পেয়েছি।আমার মেয়েটা খুব দুঃখী ভাইজান,খুব দুঃখী।তাই আপনার অনুমতি ছাড়াই আমি... মত দিয়ে ফেলেছি।স্বার্থপরের মত তুরকে রাজি হতে বলেছি।ভাইজান হাত জোর করছি আমার মেয়েটাকে একটু সুখের মুখ দেখতে দিন।জন্ম থেকেই মেয়েটা পোড়াকপালি।এটুকু বয়সে অনেক বড় আঘাতের সমূক্ষিণ হয়েছে।আমার সহায় সম্পদ,টাকা পয়সা যা কিছু আছে সব আমি ধ্রুবকে দিয়ে দিব।ভাইজান তবুও আমার মেয়ে কে কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে দিন।"

ছলছল চোখে বড় ভাইয়ের হাতে ধরে কথা গুলো বলেছেন।

রায়লা বেগম স্বামীর এমন ভিক্ষুকের মতো সর্বস্ব দিয়ে  চাওয়া দেখে কেঁদে ফেলেন।

লিভিং রুমের উপস্থিত সবারই চোখ টইটুম্বুর অবস্থা।জহির সাহেব আর শাহানা বেগম এর মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে না তাদের মনের খবর।

ফজিলাতুন্নেছা সকলের মাঝে কবির সাহেবর সামনে এসে দাড়ান।"তুই রাস্তার একটা মাইয়ার লেইগ্যা তোর বংশের পরথম পোলার কপাল পুরাইলি।ওই জারজ মাইয়ার লেইগ্যা।কেম্নে করলি এইডা তুই।তোর বুক কাঁপে নাই।ওই মাইয়া তো রূপ দেখাইয়া আরো আগে থেইকা বশ করতে চাইছে।তুই কেম্নে নিজের রক্তের সাথে বেইমানি করলি।কি জাদু করছে তোরে তোর বউরে। নিজের পোলার কথা ভাবছ না মানলাম।কিন্তু অহন আমার আরেক নাতির জীবন ধ্বংস করতে উইঠা পইড়া লাগছোস।আমি সবাই রে বইলা দিতাছি এই বিয়া আমি মানি না।
ওরে অন্য কথা ও বিয়া দেও।ধ্রুব রে অনেক বড় ঘরে বিয়া করামু।ওই অপয়া মাইয়া আমার দাদা ভাইয়ের জীবন ডা ও ধ্বংস কইরা দিব।"

কবির সাহেব মাথা নত করে থাকে।নিজের মায়ের কথা শুনে বুকের ভেতরটা ফেটে যাচ্ছে।তুরকে এবাড়িতে আনার পর থেকে মায়ের সাথে মধুর সম্পর্কটা নষ্ট হয়ে গেছে।

জহির সাহেব মাকে অনেকটা ধমকের সুরে বলে"আমি কাউকে কিছু বলছি না বলে,তোমাদের যার যা খুশি বলে যাচ্ছ,ভেবে যাচ্ছো।বুড়ো হয়েছি বলে কি,কেউ আর আমাকে বাড়ির মাথা ভাবো না নাকি? সে যাই হোক।মা...তোমাকে আমি কিছু বলতে চাই না।মানে আমার মুখ দিয়ে কিছু বের হচ্ছে না।তোমাকে কি বললে যে তুমি বুঝবে আমি জানি না।
আর কবির তুই,তোর অনেক টাকা হয়েছে না।একটু কি নামধাম কামালি এখন আমাকে টাকা দেখাচ্ছিস।আমার ছেলেকে টাকা দিয়ে কিনতে চাইছিস।ভাবতে অবাক লাগছে।আমার বাড়িটা কি হয়ে গেছে।"

"ভাইজান আমার কথা গুলো তুমি অন্য ভাবে নিও।ভুল আমি করেছি তোমাদের অনুমতি না নিয়ে।যা বলার আমাকে বলো আমার দুঃখী মেয়েটাকে কিছু বলো না।"

"তখন থেকে তোর মেয়ে তোর মেয়ে করছিস।বুকে হাত দিয়ে বলতো কোনো দিন ওকে আমি নিজের মেয়ে ছাড়া অন্য কিছু ভেবেছি।"

কবির সাহেব নতো মাথা তুলে ভাইয়ের দিকে তাকায়।

"তুই ভাবলি কেমন করে তুরের জন্য আমি তোর টাকা পয়সা ধন সম্পদ দেখব।আরে ও যে আমার কলিজার একটা অংশ।আমি সব সময় চাইতাম এমন একটা ছেলে তুরের জন্য, যাকে আমাদের বাড়িতে রাখতে পারবো।যেন মেয়েটাকে চোখের সামনে রাখতে পারি।কিন্তু তোদের বলতে পারিনি,যদি তোরা ভুল বুঝিস।ঘর জামাই ভেবে অসম্মান জনক ভাবিস ।যদি ভাবিস যে অন্যের সন্তান ভেবে এমন অসম্মান জনক কথা বলছি।তাই সাহস হয়নি।তবে ধ্রুবর মনে যে এসব আছে আমি ঘুনাক্ষরে ও টের পাইনি।তাহলে আমার মাকে আমি এতো কষ্ট পেতে দিতাম না।"

জহির সাহেব হতভম্ব কবির সাহেব কে টেনে তুলে কোলাকুলি করেন।সাথে সমির সাহেব কে ও ডেকে নেন।

"আজকে খুশির দিন আমরা নতুন সম্পর্ক জুড়েছি রে।আমরা আজকে থেকে বিয়াই বিয়াই।এক জন আর একজনের বিয়াই হইছি রে কোলাকুলি না করলে হবে নাকি।"

কবির সাহেব এখনও বিশ্বাস করতে পারছে না যে এতো সহজে বড়ো ভাই বিষয়টা মেনে নিয়েছে।

খুশিতে কবির সাহেব চোখ ভিজে গেছে।চশমা খুলে চোখ মুছছেন। রায়লা বেগম ও আনন্দের অশ্রু বিসর্জন দিচ্ছেন।

জহির সাহেব স্ত্রীর দিকে ঘুরে অপরাধীর মতো তাকান।

শাহানা বেগম বলে উঠেন," আপনি কি এখন আপনার ভাইয়ের মতো আমাকে স্বার্থপর ভাবছেন?ওরা  আমার মেয়ে আমার ছেলে,ওদের খুশি ই আমার খুশি।মিষ্টি আনেন গিয়ে।বাড়িতে সুখবর দিচ্ছেন অথচ এমন খালি মুখে।"

লিভিং রুমের সকলে হেসে উঠে।সবার মন থেকে যেন এই কদিনের দুঃখ গুলো এক নিমেষে উধাও হয়ে গেছে।করিডোরে দাঁড়িয়ে ফাহিম তুহিন শাহিন মাহিন সব শুনছিলো।

বড়োদের কথা শুনে ইয়্যা...বলে চিল্লিয়ে উঠে।

সকলের এই খুশির মুহূর্তে শুধু কালো আধার নেমে আছে ফজিলাতুন্নেছা ও রিনা বেগমের মুখে।

এনাদের মনে হচ্ছে,বাকিরা তাদের চোখে ই দেখছে না।ফজিলাতুন্নেছা প্রচন্ড ক্ষোভে ফেটে যাচ্ছে।এমন সন্তান জন্ম দিয়েছে ভেবে নিজের প্রতি নিজে আরো বেশি রাগান্বিত।

সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেয় ওদেরকে এক সপ্তাহের মধ্যে এবাড়িতে নিয়ে আসবে।আর কারো কোনো বাধা শুনবে না।তার পর এ মাসের শেষের দিকে বড়ো করে অনুষ্ঠান করে, দাঁড়িয়ে থেকে পুনরায় বিয়ে দিবে।বাড়ির বড় ছেলে আর অপর দিকে এক মাত্র মেয়ের বিয়ে বলে কথা।

এদিকে ধ্রুব ফ্লাইট আছে। তাই সকালে তুর কে বাসায় একা রেখে চলে গেছে।আজকে ওর বাসায় না আসার সম্ভাবনা বেশি।ভাবছে ইসস নতুন বিয়ে করলাম কই একটু বউয়ের সাথে ভরপুর রোমাঞ্চ করব।তার জো নেই বউটা যেমন,কাজটা ও তেমনি।তবুও,মনের বিরুদ্ধে যেতে হয়।

ঘরে বসে থেকে তুর বোর হচ্ছে তাই নিজে নিজে রান্না করার চেষ্টা করছে।ভাত রান্না করতে কোনো প্রবলেম হয়নি।কারণ মাকে দেখেছে কুক ওয়্যারে রান্না করতে।তাই ভাতের মাড় গলানোর ঝামেলা ছাড়া ই রান্না করে ফেলেছে।সমস্যা হয়েছে মুরগি রান্না করতে গিয়ে।ইউটিউব দেখে পারবে ভেবেছে।কিন্তু যত দেখছে, ততোই কঠিন মনে হচ্ছে।

অনেক ভেবে চিন্তে মাকে কল দেয়।ফোন তুলে শাহানা বেগম।সালাম দিয়ে কিছু জিজ্ঞেস না করে সরাসরি বলে"মুরগি কিভাবে রাধতে হয় বলে দেও।"

শাহানা বেগম তো খুশিতে ডগমগ।"ওমা আমার মেয়ে আজকে মুরগি রাধবে!আমাকে দাওয়াত করলি না।"

"নিজে ই রাধতে পারি না আবার দাওয়াত।শিখতে পারলে দিবনে।এখন সহজ করে বুঝিয়ে দাও তো ঝটপট।না হয় রেখে দিলাম।"

"না না রাখবি কেন।বলছি তো।"

"প্রথমে মুরিগিটা ভালো করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিবি।তারপর ফ্রাইংপ্যানে অল্প তেল দিবি,বেশি দিলে কিন্তু ছিটতে শুরু করবে।তখন হাত পা পুড়োবি।অল্প তেল দিবি।তেলটা গরম হলে সেটাতে চামচের সাহায্যে মুরগির মাংসের পিস গুলো একটা একটা দিবি।খুবই সাবধানে কিন্তু একদম হাত টাত পোরাবি না। দুই মিনিট পর উল্টে অপর পাশটা ও একি ভাবে হাল্কা লালচে করে ভাজবি।এভাবে সবগুলো টুকরো ভাজবি।ভাজা হলে সব নামিয়ে একটা প্লেটে তুলি রাখবি।একবাটি পেঁয়াজ কুচি দিবি তেলে ।সেটাতে আধা চামচ লবণ দিয়ে কিছুক্ষণ ভাজবি।পেঁয়াজটা একটু বাদামি হলে সেটাতে এক টেবিল চামচ আদা বাটা,এক টেবিল চামচ রসুন বাটা দিবি।তারপর আরো দুই মিনিট ভাজবি।
ভাজা হলে সামান্য পানি দিবি তারপর সেটাতে দের চা চামচ হলুদ গুড়ো,দুই চা চামচ মরিচ গুড়ো,এক চা চামচ ধনিয়া গুড়ো দিবি।একটু টমেটো কেচাব ও দিস ধ্রুব খুব পছন্দ করে।তারপর মসলাটা ভালো করে কষিয়ে ভেজে রাখা মুরগি গুলো দিয়ে মসলার সাথে মেশাবি।
মেশানো হলে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিবি।এভাবে দশ মিনিট রাখবি।মাঝখান দিয়ে দু তিন বার নেড়ে দিবি।দশ মিনিট পর ঢাকনা তুলে যেটা দিয়ে পানি খাস, ওই গ্লাসের একগ্লাস পানি দিয়ে দিবি।আর দের চা চামচরজিরা গুড়ো দিবি।

ঢাকনা দিয়ে আবারো ঢেকে দিবি।চুলাটা মিডিয়াম আঁচে রাখবি।মাঝে মধ্যে ঢাকনা তুলে নেড়ে চেড়ে দিবি।এভাবে দশ মিনিট পর দেখবি চারপাশ থেকে তেল ছাড়ছে।

তখন চারপাঁচটা কাঁচা মরিচ দিয়ে নামিয়ে নিবি।অবশ্যই চেক করে দেখবি লবণ ঠিক আছে কিনা নাহয় সাধ মতো আর একটু দিয়ে নিবি।দেখ চুলার পাশে সব রাখা আছে। সেখানে কোনটা কি নাম সেটাও লেখা আছে।বুঝতে পেরেছিস। "

"হুম বুঝতে পেরেছি।খুব যুদ্ধ করতে হবে।এর চেয়ে সহজ আমার হায়্যারম্যাথের ম্যাথ গুলো।"

শাহানা বেগম হেসে দেন।তুর থ্যাংক্স বলে রেখে দেয়। 

তারপর তুর শাহানা বেগমের ইনসট্রাকশন মতো একে একে সব করে।রান্না শেষ করে টেস্ট করে দেখে নাহ খারাপ না ভালোই হয়েছে।

ধ্রুব অনেক রাতে ফিরে।তুর দরজা খুলে অন্য দিনের মতো রুমে ঢুকেনি।রান্না ঘরে গিয়ে সব গরম করে টেবিলে রাখে।

ফ্রেশ হয়ে ডাইনিং এ এসে ধ্রুব তো অবাক।একি দেখছে গরম করা খাবার। মনে হচ্ছে... কেউ রান্না করেছে।
আজকে কিছু বলা ছাড়া ই সব রেডি... নট বেড।পুরো ই বউ বউ ফিল আসছে।টেয়ার টেনে বসে।তুর একটা প্লেটে বেড়ে দেয়। ধ্রুব খাওয়া শুরু করে।এক গ্রাস মুখে তুলে বলে "কে রেধেছে?"

"কেন? ভালো হয়নি?আমি রেধেছি।"

"হুম...  টেস্টি হয়েছে।খেয়েছিস?"

তুর খুব খুশি হয়েছে।মাথা নাড়িয়ে না করছে খায়নি।

তুরের বসে থাকা চেয়ারটা তুর সমেত টেনে ওর কাছে আনে।তুর ভয় পেয়ে যায়।ধ্রুব ওর প্লেট থেকে তুরের মুখে খাবার তুলে দেয়।

"একা একা খেতে ইচ্ছে করনি তাই না?"
তুর নিচের দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়ায়।যার মানে হ্যাঁ।

 ধ্রুব সুন্দর মতো তার একমাত্র ঘাড় ত্যাড়া বউকে খাইয়ে দেয়।

 এরপর থেকে,ধ্রুব যখন বাসায় না থাকে,
তখন তুর এটা সেটা বানানোর চেষ্টা করে।ধ্রুব রাতে এসে সেগুলোর রিভিউ দেয়। তুরের আগ্রহ বারে।

এভাবে কেটে যায় প্রায় এক সপ্তাহ।


 চলবে...

إرسال تعليق

অনুগ্রহ করে স্পাম করা থেকে বিরত থাকুন।
Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.