ধ্রবতারা
লিখিকাঃ গল্প কন্যা (ছদ্ম নাম)
বাড়িতে মেহমানে গিজগিজ করছে।জহির,কবির সমির এবং বোন আবিদা বেগম সকলের শশুর বাড়ির লোকজন এসেছে।গ্রামের বাড়ির আত্মীয় স্বজন ছাড়া ও কাছের সব ফেমিলি ফ্রেন্ডসরা ও এসেছে।জিসানের ফেমিলি ও আমন্ত্রিত,তবে এখনো এসে পৌছায়নি।
বাড়ির আঙিনায় বাগানের ডান পাশে সামিয়ানা টাঙানো হয়েছে।এক পাশে রান্নার আয়োজন করা হচ্ছে।জহির সাহেব তদারকি করছেন।কবির সাহেব ও সমির সাহেব আগত মেহমানদের সাথে কুশলাদি বিনিময়ে ব্যস্ত।
মহিলা এবং কাজের লোকেরা সব মেহমানদের চা,কফি,শরবত,নাস্তা দিয়ে আপ্যায়নে ব্যস্ত।
গতকাল অনেক রাত পর্যন্ত পার্টি করায় আজকে সকলের উঠতে দেরি হয়।ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে সবাই রেডি হতে ব্যস্ত হয়ে যায়।
তুর ভিষণ মন খারাপ নিয়ে চুপ করে বিছানায় বসে,বারান্দার মানি প্ল্যান্ট গাছের দিকে তাকিয়ে আছে।নতুন জামা কেনা হয়নি।যদিও জামা কাপড়ের কমতি নেই।কিন্তু এ অনুষ্ঠানের জন্য তো আর কেনা হয়নি।তাছাড়া মার্কেটে গিয়ে ও কিনতে পারিনি।তাই আরো বেশি খারাপ লাগছে।একদম রেডি হতে ইচ্ছা করছে না।ধ্রুব আসার পর থেকে কোনো ভাবে ই ওর সাথে ভালো কিছু হচ্ছে না।আর মনটাকে ও ঠিক রাখতে পারছে না।
তুর ভাবনায় এতোটা বিভোর যে তন্নি এসে কখন ওর পাশে বসেছে টের পায়নি।
তন্নি : সারা বাড়ি খুঁজেও তোর কোনো পাত্তা নেই।এখানে বসে বসে কি ভাবছিস?প্রেমে পরেছিস নাকি?
ভাবনা থেকে বের হয়ে খুশিতে তন্নিকে জড়িয়ে ধরে।
"আপুওওও আই মিসড ইউ সো মাচ।কখন এসেছো?"
"আই অলসো মিসড ইউ জান।আধা ঘন্টা আগে কিন্তু কাহিনী কি?বাড়ি ভর্তি মেহমান আর তুই এমন ফকিন্নি সেজে বসে আছিস কেন?"
"কিছু না,এমনি ভালো লাগছে না।"
"দ্রুত রেডি হো। এই নে তোর জন্য আমার পক্ষ থেকে এটা...।"
একটা শপিং ব্যাগ এগিয়ে দিয়ে।
"কি এটা?"
"যেটার জন্য মন খারাপ করে বসে আছিস সেটা"
তুর প্যাকেটটা খুলে দেখে একটা গাউন।তুর উল্টে পাল্টে দেখে।একদম আনকমন আর বিউটিফুল একটা ড্রেস।তুরের খুব পছন্দ হয়।আবারো তন্নিকে জড়িয়ে ধরে।
"থাংক্স আপু।খুবই সুন্দর গাউনটা,একদম এক্সক্লুসিভ ডিজাইন।তোমার পছন্দ একদম আনকমন আর স্পেশাল।এই জন্যই বলি ইউ আর দা ব্যস্ট।কিন্তু তুমি জানলে কি করে...?"
"হুম,স্পেশাল পারছান না...তাই মনের খবর জেনে গেছি।এসব ফরমালিটি বাদ দিয়ে জলদি রেডি হো।"
ত্রিশ মিনিটের মধ্যে গোসল করে জামা পড়ে হাল্কা সাজে সেজে রেডি সে।ভেজা চুল গুলো পিঠে ছড়িয়ে রেখেছে।চোখে গাঢ় কাজল।ঠোঁটে হাল্কা গোলাপি লিপস্টিক।
"চলো আপু"
"এইটুকুই!"
"হুম ,কেন খারাপ লাগছে?"
"বলেছি নাকি।বলছি আরো একটু সাজ,একটু ভারি মেকআপ নে।সবাই তো ইচ্ছা মতো মেকআপ নিয়েছে।"
"থাক না আপু যার যেটা ইচ্ছা করুক।ভারি মেকআপে একদম বিয়ের কনে কনে লাগবে "
"ঠিক বলেছিস।সত্যি বলতে তোকে এই ন্যাচারাল লুকে ই মানায়।পুরো একটা স্ট্রবেরি লাগছে।মন চাচ্ছে টুপ করে ধরে খেয়ে ফেলি।"
"ছিহ... দুষ্টু মেয়ে,লজ্জা নেই।কিসব বলে...।"
তুর তন্নি নিচে আসে আত্মীয় স্বজনদের সাথে কুশলাদি বিনিময় করে।তুর তুরের নানুকে দেখে আস্তে আস্তে নানুর কাছ যায়।যেয়ে পেছন থেকে জরিয়ে ধরে।
তুরের নানু হাতে ধরে সামনে টেনে নেয়।কপালে গালে হাতে চুমু খেয়ে বুকে জড়িয়ে নেয়।তুর ও নানুর কুচকে থাকা গালে চুমু খায় আর ঝাপটে ধরে থাকে।তুরের নানু বাড়ির এই একটা মানুষ যে ওকে খুব ভালোবাসে।নানুর সাথে অনেক কথা হয়।তুর ওর নানু কে জরিয়ে ধরে সোফায় বসে অনেক অনেক কথা বলছে।
রাইসা রিয়া ভারি মেকআপে সেজে গুজে ও কাজ করছে।ওদের মায়ের আদেশে।তন্নি ও টুকটাক এটা সেটা করতে ব্যস্ত হয়ে গেছে।
ধ্রুবর নানু তুরকে এভাবে দেখে রাগে ফেটে যাচ্ছে।সবার সামনে বলছে"এমন দামরা ছেড়ি,ক্যেমনে এতো কাম দেইখখ্যা বইয়্যা থাকে।বাড়ির মহিলা গুলাইনে ও কোনো কাজ কাম কিছু শিখায় না।পরের বাড়িত গিয়া কি করবো।ওইহানে ও কি এ্যামনে শুয়াইয়্যা বহাইয়্যা মুখে তুইল্লা খাওয়াইবো।আল্লাহ জানে কার কপালে এমন অকর্মা মাইয়া জোটে।আরো তো মাইনসের বাড়িত মাইয়া পোলাপান আছে,এমনি করে।আদরে আদরে সবাই মিল্লা একটা ননির পুতুল গড়ছে।আমি বাবা কিছু কইতাম না।নিজে গো উপরে পড়লে নিজেরা ই বুঝবো।"
তুর নানুকে ছেড়ে সোজা হয়ে বসে।মুহূর্তে মুখটা আধার হয়ে যায়।চোখ ফেটে জল বেরোবে বেরোবে অবস্থা।উপস্থিত মহিলাগণ ওর দিকে তাকিয়ে আছে।যেন কোনো সঙ দেখছে।
রাইসা রিয়া আরো কয়েকজন খুব খুশি হয়েছে।কেউ কেউ কিছু বলাবলি ও করছে।তখনি তুরের নানু পরিস্থিতি সাভাবিক করতে তুরকে বলে"যাও তো নানু মণি আমার জন্য এক কাপ চিনি ছাড়া চা নিয়ে আসো তো।"
তুর রান্না ঘরে যায় গিয়ে ওর নানু,দাদি, ধ্রুবর নানু সকল বয়োজ্যেষ্ঠদের জন্য চা নিয়ে আসে।আর নম্রতার সাথে সবার হাতে হাতে তুলে দেয়।
তুরের নানু চায়ে চুমুক দিয়ে বলে"বেয়ান,বাচ্চা মেয়ে তো এখনো ততোটা বুঝ নেই।মেয়ে যেহেতু হয়েছে আপনার আমার মতো একদিন আমাদের নাতনি ও দেখতে দেখতে শিখে যাবে।আর আমাদের মতো পেঁকে ও যাবে।আসল হচ্ছে নম্রতা ভদ্রতাসূচক আচরণ।যদি বুঝদার হতো তাহলে হয়তো লোক মুখের যোগ্য জবাব দিতে শিখতো,চুপচাপ ভদ্রতার সাথে মাথা নুয়িয়ে শুনতো না।"
ওনার কথায় বৃদ্ধ মহিলা খুবই অপমানিত বোধ করে।তাই চুপসে যায়।
তুরের মা তুরকে ডাকে তুর সেখানে যায়।ওর হাতে লাচ্ছি ভর্তি গ্লাসের একটা ট্রে ধরিয়ে দেয়।আর বলে ওর বড় আব্বু,বাবা,ছোট আব্বু ,মনির আর ধ্রুবকে দিয়ে আসতে।জহির সাহেব কখন থেকে তাপের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে।
তুর লক্ষি মেয়ের মতো নিয়ে যায়।আর ওই মহিলাকে দেখিয়ে দেখিয়ে ডেংডেং করতে করতে বাইরে যায়।কিন্তু কোথাও কাউকে দেখা যাচ্ছে না।বাম সাইডে এগিয়ে যায় রান্নার কাজ চলছে বড়ো আব্বু চেয়ারে বসে আছে।তুর সেখানে গিয়ে এক টা গ্লাস বাড়িয়ে দেয়।জহির সাহেব মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে গ্লাসে চুমুক দেয়।ট্রেতে গ্লাস রেখে তুরকে বলে"আমার মাকে তো অনেক সুন্দর লাগছে।"
"থ্যাংক্স বড়ো আব্বু।আমার বড়ো আব্বুকে ও আজকে সেই হ্যান্ডসাম লাগছে।"
"থ্যাংকস মাই ডিয়ার "
সেখান থেকে ডান দিকে প্যানডেল টানানো হয়েছে।ভিতরে ডেকোরেশন এর কাজ গুছানো হচ্ছে।আর ধ্রুব ভাইয়া সেগুলো ঠিক মতো হচ্ছে কি না দেখছে।মনির ভাইয়া ডেজার্ট আইটেমের ডেলিভারি ঠিকঠাক মতো এসেছে কি না চেক করতে গেছে।
ধ্রুব সুক্ষ ভাবে সব দেখছে।তুর ধ্রুবর পেছনে দাড়ায়।দাড়িয়ে ভাবছে "এই লোকটা ও আমার মতো ডিজাইনের পান্জাবি পড়ছে।কালার ডিজাইন সব সেম সেম।এতো মিল তো হওয়ার কথা না।কিন্তু খুব সুন্দর মানিয়েছে।একদম নতুন জামাই জামাই লাগছে।যতই সুন্দর হোক আমার কি,উনি তো আর একজনের বয়ফ্রেন্ড।"
ধ্রুব পেছনে ঘুরে।তুরেকে দেখে চোখ আটকে যায়।থমকে যায় এক পলকের জন্য।ধ্রুব ভাবেনি এই ড্রেসটায় ওকে এতোটা সুন্দর লাগবে।মনে হচ্ছে শিশিরে ভেজা বাগানের সদ্য ফোটা গোলাপি গোলাপ ফুল।
"কেন এই ভেজা খোলা চুলে মাতাল করা রুপে এসে আমার হৃদয়ে ঝড় তুলে দিয়েছিস।তোর সুভাসে আমি যে মাতোয়ারা।এই আমাকে এখন কে সামলাবে।"
"নিন আপনার লাচ্ছি।রাইসা আপু অনেক ভারি মেকআপ নিয়েছে আপনার জন্য।রাইসা আপুকে অনেক সুন্দর লাগছে,ওনার দিকে অপলক তাকিয়ে কবিতা লিখে ফেলেন।"গ্লাস ধরিয়ে দিয়ে ডেংডেং করতে করতে চলে গেলো।
ধ্রুব যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলে"যে দিন একান্ত আমার হবি,সেদিন এই সব যন্ত্রণার শোধ তুলবো।সব হিসেব করে হৃদয়ের খাতায় টুকে রাখছি।কোনো ছাড় পাবি না।"
রাইসা রিয়া দুজনেই তুরকে দেখে মারাত্মক জ্বলছে কোনো সাজ গোজ ছাড়া কেন ওকে এতো সুন্দর লাগবে।
আর রাইসা রাগে হিংসায় জ্বলে যাচ্ছে ,করাণ তুর ধ্রুবর কেনা কাপল ড্রেসের একটা পড়ে আছে।আর অপরটা ধ্রুবর গায়ে।কিন্তু ও তো ভেবেছিলো এগুলো ওর জন্য কেনা হয়েছে।"ইচ্ছে করছে এখনি ওর শরীর থেকে টেনে জামাটা খুলে নিতে।আর আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দিতে।আপনাকে আমি আর কারো হতে দেব না।আপনার আর আপনার সব কিছুতে শুধু আমার অধিকার।ধ্রুব আপনি ও কাজ টা ঠিক করেননি।আপনাকে এর জন্য মাশুল দিতে হবে।"
কিছুক্ষণ পরে জিসান আর ওর ফেমেলি চলে আসে।ওনাদের ও খুব আন্তরিকতার সাথে আপ্যায়ন করা হয়।
সকলের খাওয়া প্রায় শেষ।তুর আর তন্নি বাগানের দিকে যাচ্ছিল।প্যান্ডেল এর পাশেই আত্মীয়দের মধ্যে কিছু মহিলা দাড়িয়ে কথা বলছেন।তুর কে দূর থেকে দেখে সবাই তাকিয়ে আছে।ওনাদের পাশ কাটিয়ে একটা সাইডে গিয়ে দুজনে দাড়ায়।সেখানে দুজনেই নিজেদের সেলফি তোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে।কিন্তু ওই মহিলার দল এখনো তুর কে নিয়ে গসিপ করে যাচ্ছে।
"একে দেখছেন কেমন রাজকন্যার মতোন ভাবসাব ধরে ঘুরে বেরায়।"
"কোন টা?গোলাপি ড্রেস পড়াটা?"
"হুম,আসলে বিষয়টি নিকট আত্মীয়রা ছাড়া কেউ জানে না। "
"কি বলেন! সত্যি নাকি! "
"তো কি মিথ্যা বলছি"
"আসলেই...কারো চেহারার সাথে কোনো মিল নেই।"
"মেয়েটা জানে এসব?"
"নাহ...জানলে কি আর এভাবে চলতে পারতো।একটু হলেও বিবেকে বাধতো।এটা জানা জানি হলে কি হবে কে জানে।"
"সেটা ই ভালো হবে আরে বাবা এতো আদিখ্যেতার কি আছে,আরো তো মানুষের ঘরে মেয়ে আছে এমনই করে।"
"হুম একদম ঠিক বলেছেন। সেই দিনের অপেক্ষায় আছি।"
"হ্যা... দেখা যাক রায়হান বাড়ি কিভাবে ওই পরিস্থিতি সামলায়।"
এইসব গুলো কথা তুরের কানে যায়।সেলফি তুলতে এদিকের গোলাপ গাছ গুলোর কাছে আসে।নিচের দিকে বেশি গোলাপ ফোটায় বসে পরে।গোলাপি গোলাপ গাছের সামনে বসে ফুলের সাথে সেলফি তুলতে শুরু করে।দুই তিনটা তুলে জুম করে ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে দেখছে।হঠাৎ ওনাদের কথায় মনোযোগ চলে যায়। মহিলাগণ কুটকাচারিতে এতো ব্যস্ত যে কখন তুর ওনাদের এতো কাছে এসেছে বুঝতে পারেনি।
তুর ভাবছে "কথা গুলো কি আমাকে কে নিয়ে হচ্ছে?আমিই তো এখানে গোলাপি ড্রেস পড়া।কিন্তু এগুলোর আগা মাথা কিছু ই বুঝতে পারছি না।বললেই কি এরা কবে আমাকে ভালো বলেছে।ধ্যাৎ... যা খুশি বলুক।আড়ি পেতে কথা শুনবো না।"
এখান থেকে দুজনে সোজা দোতলায় করিডোরের বারান্দায় যায়।এই বারান্দাটা খুব সুন্দর।কয়েক দিন আগে ধ্রুব এখানে একটা দোলনা এনে রেখেছে।তখন থেকে এই জায়গায় টা তুরের পছন্দের জায়গা হয়ে গেছে।এখানে একটু বেশি বেশি ই আসে।
এদিকে জিসান আসার পর থেকে শুধু দূর থেকে তুরকে দেখে যাচ্ছে।কি অপূর্ব লাগছে।কিন্তু ছোটাছুটিতে ব্যস্ত তুরের সাথে কথা বলতে পারছে না।কখন থেকে সুযোগ খুজছে।সুযোগ সন্ধানি হঠাত সিড়ি দিয়ে তুরকে উঠতে দেখে।জিসান ও পিছু ছোটে।করিডোরের শেষ মাথায় তুর দোলনায় বসে আছে,সাথে তন্নি ও।এগিয়ে যায়।পাশে দাড়ায়।
"কেমন আছো তুরিন"
"আলহামদুলিল্লাহ,আপনি কেমন আছেন ভাইয়া?"
"এখন অনেকটা বেটার"
"অসুস্থ ছিলেন নাকি? "
"হুম.. বলতে পারো,মনের অসুখ হয়েছে।"
"আচ্ছা...এই ব্যাপার,তো যার জন্য এই অবস্থা তার কাছে যান।সে ওষুধ দিলে ভালো হয়ে যাবেন।"
"যেতে চাই তো কিন্তু যেতে পারছি না।তোমাকে কিছু কথা বলার ছিল।"
"বলেন"
"পারছোনাল তো তাই একা বলতে চাই"
তুর তন্নি র দিকে তাকায়।আর তন্নিও তুরের দিকে তাকায়।আসলে ব্যাপার কি?ব্যটা এমন করছে ক্যান।মনে প্রশ্ন থাকা সত্তে ও তন্নি তুরকে বলে "আমি তোর রুমে আছি।"
তুর এবার খানিকটা ইতস্তত বোধ করে।
জিসান বলতে শুরু করে "তোমার কি কারো সাথে রিলেশন আছে? বা ছিল?আশা করি সত্যি বলবে"
"জি না ভাইয়া। কখনো ছিল না আর এখনো নেই।কেন বলেন তো?"
"এরেন্জম্যারেজ করার ইচ্ছে নাকি লাভ ম্যারেজ? "
"অবিয়েসলি এরেন্জম্যারেজ।বাবা চাচা ফেমিলির সম্মতিতে বিয়ে করবো।কিন্তু এগুলো কেন বলছেন?"
"আমাকে কেমন লাগে? "
"ছোট থেকে দেখে আসছি ধ্রুব ভাইয়ার সাথে আপনাকে।কখনো আমার চোখে আপনার খারাপ কিছু পরেনি।আপনার পারসোনালিটি তো মাশাল্লাহ।যে কোনো মেয়ে একবার প্রোপোজে পটে যাবে।হা..হা...হা...."
"বলছো?"
"হ্যা একশ পার্সেন্ট "
এই বার জিসান ও তুরের সাথে হো হো করে হাসতে শুরু করে।
এদিকে তুরের কথার শব্দ শুনে,ধ্রুব ওর রুম থেকে বের হতে নিচ্ছিলো।দরজায় দাড়িয়ে বারান্দার দোলনা বরাবর তাকাতে জিসানকে দেখে।মেজাজ তার সপ্তম আসমানে ওঠে যায়।তারপর একের পর এক কথোপকথন।প্রচন্ড রাগ উঠছে... কেন বোকা তুর ডিরেক্ট ওকে না করে দেয় না।কেন বুঝে না এই প্রেমিক পুরুষর বুক থেকে কেউ ওর কলিজা টেনে বের করতে চাইছে, আর সেখানে রক্তক্ষরণ হচ্ছে ।তারপর দুজনের এক সাথে হেসে ওঠা... উফফ...সহ্য হচ্ছে না।বাইরের একটা ছেলের সাথে কেন এতো হাসতে হবে তোকে।কই এভাবে তো কখনো আমার সাথে হাসিসনি।রাগের চোটে ঘাড়ের রগ ফুলে গেছে।
ধ্রুব ওদের সামনে গিয়ে দাড়ায় "কি ব্যাপার এতো হাসছিস কেন? মেয়েদের হাসিতে এতো শব্দ হয় নাকি?কতো টাইয়ার্ড হয়ে শুয়েছিলাম ঘুমটা ভাঙিয়ে দিলি।আর তুই কি রে একটা বাচ্চা মেয়ের সাথে কেলাচ্ছিস।কমনসেন্সের অভাব পড়েছে?যত্তসব কমনসেন্স ছাড়া লোকজন।"বলেই চলে গেল।
চলবে.....