ধ্রবতারা
লিখেছেনঃ গল্পকন্যা (ছদ্ম নাম)
রায়লার সাথে বিয়ে হয়েছে প্রায় পাঁচ বছর চলছে।
কিন্তু কোনো বা'চ্চার মুখ দেখতে পারছিলাম না।ডা'ক্তার কবি'রাজ সব করেছি তবু কিছু হচ্ছিল না।
স্বা'মী-স্ত্রী দুজনই ভে'ঙে পড়ি।
লোকে নানা ধরনের কথা বলতে শুরু করে।এ দিকে বাড়িতে মা রায়লাকে নানা ধরনের কথা শোনায়।
আত্মীয় স্বজনরাও কতো কথা শুনায়।
এতো কথা শুনে ,আমার স্ত্রী কেঁদে আমার বুক ভা'সা'য়।মাঝ রাতে ঘুম ভে'ঙে দেখি নামাজে পড়ে কাঁদছে আর আল্লাহর কাছে একটা স'ন্তান ভি'ক্ষা চাইছে।
আমাকে বলতো "কতো মা'নু'ষ তো তাদের বা'চ্চা কা'চ্চা চায় না।কেউ আবার লা'লন পা'লন করতে পারে না।তাদের না দিয়ে আমাকে দিতে পারে না।আল্লাহ কেন তাদের ছে'ড়ে আমাকে দেয় না।"
অবুঝের মতো কতো কথা বলতো আর কাঁদতো।আমি শুধু চোখের পানি মুছে দিতাম।সা'ন্ত্ব'না দেয়ার ভা'ষা পেতাম না।
কখনো কখনো আ'ব'দা'র করতো কোথাও থেকে একটা বা'চ্চা ওকে এনে দিতে।
আবার যখন রাস্তায় বের হয়ে কোনো বা'চ্চাকে অনাদরে অ'ব'হে'লায় পড়ে থাকতে দেখতো,তখন আমার দিকে তাকাতো জল ছলছল চোখে।
আমি ওর আ'কু'লতাটা বুঝতাম।কিন্তু আমারো যে কিছু করার নেই।দিন শেষে আমার ও ক'ষ্ট হতো।আমারও যে ইচ্ছে করতো ফুটফুটে একটা বা'চ্চার মুখে বাবা ডাক শুনতে।
এভাবেই চার দেয়া'লের ভেতর গু'মরে গু'মরে কা'ট'ছিলো আমাদের দিন।
আমার এক বন্ধু ছিল নাম সেলিম চৌধুরী।পে'শা'য় সে একজন প্র'থ'ম সা'ড়ির ব্যব'সায়ী।ব্যব'সা'র কাজে ল'ন্ড'ন যাচ্ছে।যাওয়ার আগে আমার সাথে দেখা করে যায়।দের বছর ল'ন্ড'নে কা'টায়।এই দের বছরের মধ্যে,ল'ন্ড'নের যে অ'ফি'সের সাথে ও পার্ট'না'রশি'প কাজ করছিলো।সেই অ'ফি'সের ব্র্যা'ন্ড এ'ম্বাসে'ড'র এক মেয়ের সাথে প্র'ন'য় ঘ'টে।আর সেটা বিয়ে পর্যন্ত গ'ড়া'য়।
আমাকে ওদের ছ'বি পা'ঠায় ই'মে'ইলে।আমি রায়লাকে ও দেখাই।সেলিম চৌধুরীর ওয়াইফ জেনিফার ডি'জু'জা।জেনিফার দেখতে ছিলো পুরো হু'রের মতো সু'ন্দরী।যে কেউ এক দেখাতে তাকে পছন্দ করবে।ব্যবহার ও ছিলো তার অ'মা'য়িক।স্কা'ইপে আমার আর রায়লার সাথে কথা হয়।সেদিন প্রথম দেখাতেই জেনিফার আমাদের খুব আপন করে নেয় ।আমাদের সাথে দেখা করতে দে'শে আসবে বলে আ'গ্রহ পো'ষণ করে। ভালোই চলছিলো ওদের সব কিছু।
ল'ন্ড'নে যাওয়ার প্রায় দের বছর পরে দে'শে আসে ওর বাবার অ'সু'খের কথা শুনে।
সেলিমের বাবা দে'শে আসার পর অনেক জো'র'জ'ব'র দ'স্তি করে ওকে পু'নরা'য় বিয়ে করায়।কিন্তু ল'ন্ড'নে ছয় মাসের বি'বা'হি'ত স্ত্রীকে রেখে আসার অ'নু'শো'চ'নায় ভো'গে।আর যো'গা'যো'গ করে না জেনিফার এর সাথে।
এদিকে জেনিফার ওকে এতো ভালোবাসতো
যে পা'গ'লের মতো সেলিমের খোঁ'জ চা'লা'তে থাকে।ছয় মাসে জেনিফারের অ'ব'স্থা খুব খা'রা'প হয়ে যায়।
একে তো পাঁচ মাসের অ'ন্তঃ'স'ত্ত্বা।তার উপর ও'ভা'রিতে অসংখ্য টি'উ'মা'র ধ'রা পড়েছে।
এখন বা'চ্চার জী'বন বাঁ'চাতে গেলে নিজের জী'বন হা'রাতে হবে।কিন্তু সে ডি'সি'শন নেয় তাদের ভালোবাসার ফল এই পৃ'থিবী'র আলো দেখবে।
এভাবে এতো সব পে'রে'শা'নিতে খুব ভে:ঙে পড়ে।সেলিম কে খুঁ'জতে খুঁ'জতে অ'সুস্থ শ'রী'র নিয়ে বাং'লাদে'শে আসে।তখন প্রায় নয় মাস চলে।
উ'দ্দে'শ্য একটা ই, ম'রে গেলে ও যেন বা'চ্চাটা একটা সুন্দর জীবন পায়।মা না থাকলেও বাবার সা'ন্নিধ্যে পায়।আর শেষ একবার ভালোবাসার মানুষ, প্রাণ প্রিয় স্বা'মীর দ'র্শ'ন।
আ'শ্চর্য ভাবে একদিন আমার সাথে রাস্তায় দেখা হয়।খুব অ'সু'স্থ অ'ব'স্থা'য় একটা প্রে'গ'ন্যা'ন্ট মহিলা মাথায় হাত দিয়ে রাস্তার পাশে বসে আছে।
আমি সা'হা'য্য করতে এগিয়ে যাই।কথা বলে জানতে পারি ইনি ফ'রে'নার,নাম জেনিফার ডি'জু'জা।তখন সব জানতে পারি ।
জেনিফারের অ'ব'স্থা খুবই খা'রা'প ছিলো।
অ'ব'স্থা বে'গ'তিক দেখে হস'পি'টা'লে নিয়ে যাই।ড'ক্টর বলে ই'মি'ডি'য়ে'ট'লি অ'পা'রে'শন করানো লাগবে।বিভিন্ন প'রী'ক্ষা নি'রী'ক্ষা করান।আর জেনিফার এর পূর্বের ত'থ্য অ'নু'সা'রে,ড'ক্টর জানান অ'পা'রে'শ'নের পর বেঁ'চে থাকার চা'ন্স ২%।টি'উ'মা'র গুলো ক্যা'ন্সা'রে রূ'প নিয়েছে।
সেই মুহূর্তে জেনিফার আমার সাথে কথা বলে।দে'শে আসার সব কারণ আমাকে খুলে বলে।কিভাবে পা'গ'লের মতো সেলিমের খোঁ'জ করছে।
তার মুখে একটাই কথা,"ভাই ম'রা'র আগে এক বার ওকে দেখতে চাই।বা'চ্চা'টার একটা ভ'র'সা স্থ'লে'র ব্য'ব'স্থা করে যেতে চাই।না হয় ম'রে ও শা'ন্তি পাবো না।"
তখন এক মৃ'ত্যু পথ যা'ত্রী'র শে'ষ ইচ্ছে পূ'র'ণের জন্য আমি ম'রি'য়া হয়ে উঠি।অনেক খোঁ'জ করে জানতে পারি সেলিম দ্বি'তী'য় বিয়ে করেছে।কিন্তু কিছুতেই যো'গা'যো'গ করার কোনো মা'ধ্যম পাচ্ছি না।
এদিকে অ'পা'রে'শ'ন করাতে হবে দ্রুত।বন্ধুদের সবাইকে বলি ওর খোঁ'জ নিতে।এদিকে ড'ক্টর তাড়া দিচ্ছেন।বেশি দেরি করলে বা'চ্চাটা'র ও প্রব'লেম হতে পারে ।
তখন ব্যর্'থ হয়ে জেনিফার এর সামনে দাঁড়াই।কিন্তু আমার মুখ দিয়ে সেলিমের দ্বি'তীয় বি'য়ের কথা বের হয় না।ভাবলাম থাক না কথাটা অ'জানা।একটা মা'নু'ষ যদি নাই বাঁ'চে,মৃ'ত্যু'র দা'র প্রা'ন্তে তার য'ন্ত্র'না আর বাড়িয়ে লাভ কি।
দুঃ'খ ভ'রা'ক্রা'ন্ত মনে বললাম ,"পারিনি বোন তোমার কথা রাখতে ক্ষ'মা করে দিও।"
জেনিফার তখন তার শে'ষ একটা অ'নু'রো'ধ করে। বা'চ্চা'টাকে যেন আমি নেই।লা'ল'ন পা'ল'ন করে,আমার পরিচয়ে বড় করি।মা'নু'ষের মতো মা'নু'ষ করি।
একটা ব্যা'গ থেকে তার' ব্যাং'ক এ'কা'উ'ন্ট আরো নানা ধরনের কা'গ'জ প'ত্র দেয়।
দিয়ে বলে "এ সবকিছু ওর জন্য য'থে'ষ্ট।আপনি শুধু আমার আর আমার বা'চ্চা'র 'ডি'এন'এ' টে'স্টের একটা রি'পো'র্ট করে রাখবেন।ও বড়ো হলে ওকে ওখানে পা'ঠা'নোর ব্য'ব'স্থা করবেন। বাবা মায়ের একমাত্র স'ন্তান হওয়ায় সব কিছু আমার ছিলো।এখন আমার যা আছে সব কিছু যেন ও পায়, আমি সে ব্য'ব'স্থা করে এসেছি। বলুন ভাই আমার কথাটা রাখবেন।"
আমি ও কথা দেই।সে আমাকে একটা এ'ড'প্ট পে'পা'র আনতে বলে।আমি তার কথা মতো সব করি।জেনিফার সেখানে স'ই করে।আর আমি তার ভাই হয়ে হা'স'পা'তা'লে ব'ন স'ই করি।জেনিফারকে ও'টি তে ঢু'কা'নো হয়।
ভিতরে প্র'বে'শের আগে ও আমি মৃ'ত্যু প'থ যা'ত্রী এক না'রীর চোখে তার প্রিয় মা'নু'ষ'টার জন্য আ'কু'ল'তা দেখেছি।
অ'পা'রে'শন এর পরে তা'রা'র মতো চক'চকে একটা মে'য়ে বা'চ্চা জ'ন্ম নেয়।জেনিফার স্বা'মীর চিন্তা আর অ'সু'স্থ'তার কারনে নিজের কোনো যত্নই নিতে পারেনি।যার ফলে বা'চ্চা'টার কিছু প্র'বলে'ম দেখা দেয়।ড'ক্টর বলে হা'সপা'তা'লে প্রায় এক মাস অ'ব'জা'র'ভে'শ'নে রাখতে হবে।
অ'পা'রে'শন শে'ষে ও'টি থেকে বের হয় জেনিফার এর নি'থ'র দে'হ।
কিছুক্ষণ পরে এক বন্ধুর মা'ধ্যমে খ'ব'র পেয়ে সেলিম হা'জি'র হয়।
কিন্তু এসে দেখতে পায় জেনিফার এর সা'দা কা'প'ড়ে ঢা'কা নি'থ'র দে'হ।
হাউমাউ করে কাঁদে সেলিম।নিজেকে ওর মৃ'ত্যু'র জন্য দা'য়ি ভাবে।আজো এটা ভেবে গু'ম'রে গু'ম'রে ম'র'ছে।
আমি বা'চ্চা টাকে দ'ত্ত'ক নেয়া আর জেনিফারের বলা সব কথা ওকে বলি।
সেলিম তার বাবাকে বলে জেনিফার আর বা'চ্চা টার কথা।বা'চ্চা'টাকে নেয়ার কথা।কিন্তু তার বাবা রা'জি হয় না।কোনো ভাবে রা'জি করাতে পারে না।আবার ও ব্য'র্থ হয়।হা'স'পা'তা'লে এসে কাঁদতো।
এদিকে রায়লা একটা বা'চ্চা'র জন্য ম'রি'য়া হয়ে উঠেছে।তখন আমি ওর কাছে বলি।ভি'ক্ষা চাই বা'চ্চা'টাকে।সে ও কোনো উপায় না পেয়ে রা'জি হয়ে যায়।
এদিকে জেনিফারের অ'পা'রে'শ'নের পরে,বা'চ্চা'টাকে এ'ড'প্ট করার কথা বড়ো ভাইজান কে জানাই।ওনি সহ'মত হোন।এরপর হা'স'পা'তা'ল থেকে বা'চ্চা'টাকে বাড়ি নিয়ে আসি।
সেদিন বাড়িতে সবাই খুশি ছিলো শুধু আমার মা ছাড়া।আসলে কেউ পুরো ঘ'ট'না টা জানতো না।আমি জানাই নি।শুধু বলেছি এক ফ'রে'নার মহিলার স্বা'মী নেই।বা'চ্চার ভ'র'ণ'পো'ষ'ণের সা'ম'র্থ নেই।তাই দ'ত্ত'ক দিয়ে দিবে।তাই আমি তোমাদের না জানিয়ে দ'ত্ত'ক নিয়ে নেই।
তখন ফাহিমের জ'ন্ম হয়নি।বাড়ির সবাই ওই ফুটফুটে বা'চ্চা'টাকে নিয়ে মেতে উঠে ।সকলে এমনকি ছোট্ট ধ্রুব ও।
ছোট থেকে তুরকে ধ্রুব বাড়ির সব বা'চ্চা'দের থেকে বেশি ভালোবাসতো।যদি তুর,ফাহিম ,ধ্রুব তিন জনকে তিনটা চকলেট দিতাম।তখন ধ্রুব ওরটা থেকে ভে'ঙে অ'র্ধেকটা তুর কে দিয়ে দিত।
তুর ব্য'থা পেলে ধ্রুব কেঁদে দিতো।আর সাবাইকে বলে বেড়াতো এটা আমার পু'তু'ল বউ আমার পু'তু'ল বউ।
তুর ছোটো বেলা থেকেই দেখতে খুব সুন্দর ছিলো,একদম জেনিফারের মতো।তাই ওর সৌ'ন্দর্য চে'হা'রা একদম আ'লা'দা।আমাদের সাথে মিলে না।কেউ দেখলেই আ'দ'র করতে চাইতো।একদম ফুটফুটে না'দু'স'নু'দু'স বা'চ্চা ছিলো।আর খুব সহ'জে সবার সাথে মি'শে যেতো।
ধ্রুবকে আমি বলেছিলাম ওকে তা'রা'র দে'শ থেকে এনেছি।তার পর থেকে তার কৌ'তূ'হ'ল,ওখানে কিভাবে ছিলো!তাই জন্যে বুঝি এমন চক'চকে সুন্দর।কতো কতো বা'চ্চা'মো,কতো প্র'শ্ন তুরকে নিয়ে।
এভাবেই তুর সবার আ'দ'রে বড় হতে থাকল।
সেদিনের পর থেকে মা আমার সাথে ঠিক মতো কথা বলে না।কিন্তু একটা বারও কি জানতে চেয়েছো মা....? স'ন্তা'ন হী'ন আমরা কিভাবে কা'টা'চ্ছিলাম।
এই তুর কে পেয়ে আমাদের আ'ত্মা তৃ'প্ত হয়।দু'জনের স'ন্তা'নের অ'ভা'ব পূরণ হয় ।সে জন্য আল্লাহর কাছে হা'জা'র হা'জা'র শু'ক্রি'য়া জানাই।
তুরের যখন পাঁচ বছর তখন আমরা আল্লাহর অ'শে'ষ রহমতে তুহিনের আ'গ'ম'নের খ'ব'র পাই।রায়লা তুরের য'ত্ন আ'ত্তি আরো বাড়িয়ে দেয়।
রায়লার এবং বাড়ির সবার ধা'র'ণা তুরের মতো এ'তি'ম বা'চ্চা'কে এতো ভালোবাসার জন্যই, রায়লা গ'র্ভে স'ন্তা'ন করতে পারছে।তখন মায়ের মধ্যে ও পরি'ব'র্তন দেখি।আমি খুশি হই।
কিন্তু রায়লা চিন্তা করতো যদি বা'চ্চা'টা হওয়ার পর তুরের প্রতি অ'ব'হে'লা করে।সেটা ভেবে দিন রাত দু'শ্চি'ন্তা করতো।আর মেয়েকে জ'ড়ি'য়ে ধ'রে কাঁদতো।
কিন্তু না তেমন কিছু হয়নি।তুর তুরের জা'য়গা'য় ই রয়ে গেছে।ওর জা'য়'গা কেউ দ'খ'ল দিতে পারেনি।মেয়ে টা আমার খুব ভা'গ্য'ব'তি।ওকে আনার পর আমার লেখা একের পর এক ব'ই খুব ভালো সা'ড়া পেয়েছে।কিছু বছ'রের মধ্যে এই আমি কবির রায়হান সবার কাছে লে'খক হিসেবে পরিচিতি পেয়ে যাই।আর বাড়িটা সব সময় হাসি খুশিতে ভ'রে থাকে।মেয়েটা আমাদের এ বাড়ির সব শূ'ন্য'তা পূ'র'ণ করে দেয়।না চাইতেই তুহিনের চেয়ে বাড়ির আর সবার চেয়ে বেশি আ'দ'র আমরা তুরকে করতাম।
সেলিম অনেক বার তুরকে দেখতে চেয়েছে।নিতে চেয়েছে ওর কাছে। বারবার আ'ব'দা'র করেছে।ভ'য়ে আমি ওকে দিতে চাই নি সেলিমের কাছে।জানাতে পর্যন্ত চাইনি তুরকে। যদি সব জানার পর ও ওর বাবার কাছে চলে যায়।তুরের মা সব সময় ভ'য় পেয়ে এসেছে। তাই খুব স্বা'র্থ'প'রের মতো যো'গা'যো'গ ব'ন্ধ করে দিয়েছিলাম।
সেলিমের বাবা মৃ'ত্যু শ'য্যা'য় একটা নাতির মুখ দেখতে খুব ছ'ট'ফ'টা'য়।এটা ই হয়তো ওনার শা'স্তি ছিলো।জেনিফারের সাথে করা অ'ন্যা'য়ে'র জন্য।
মাস দুয়েক আগে সেলিমের সাথে দেখা।ওর
দ্বি'তী'য় স্ত্রী কখনো মা হতে পারবে না।আজও পর্যন্ত ওরা নি'স'ন্তান।সেলিম জানায় ওর 'ক্যা'ন্সা'র ধ'রা পড়েছে লা'স্ট স্টে'জ। মেয়েটাকে একবার দেখতে চায়।একবার বাবা ডাক শুনতে চায় মেয়ের মুখে।আর মা'ফ চাইতে চায়,তুর আর তুরের মায়ের জী'বনটা এমন করে দেয়ার জন্য। ওর ধারনা ওর করা পা'পে'র শা'স্তি দু'নি'য়াতে পাচ্ছে।এখন যদি মেয়েটা মা'ফ না করে তাহলে,ম'রা'র পরে ও শা'স্তি ভো'গ করতে হবে।
যেহেতু সব জানাজানি হয়েছে,তুর যদি চায় দেখা করতে ,তাহলে করবে।আমি আর বা'ধা হয়ে দাঁ'ড়া'বো না।
মা.....,আমি জানি তুমি খুব চি'ন্তিত,আমার সব কিছু থেকে তুরকে ভা'গ দিবো এটা ভেবে,তাই না? তুরকে আমার স'ম্প'দ থেকে আমি কি দিব।ওর মা আর ওর বাবার যে প'রিমা'ণ স'ম্প'দ আছে তোমার ছেলেদের সবাইকে দশ বার কিনলে ও শে'ষ হবে না।
ওর বাবাও সব কিছু ওর নামে করে দিয়েছে।তুর ওদের কাছে যাক কিংবা না যাক ওর সব কিছু ওরই থাকবে।ওর বাবা-মায়ের স'ম্প'দের তু'ল'না'য় আমার সব কিছু খুবই সামা'ন্য।
এবার বুঝতে পারছো ও কোনো রা'স্তা'র মেয়ে না।ওর জ'ন্ম দাতা বাবা একজন উ'চ্চ মানের ব্য'ব'সা'য়ী।মা ছিলো ল'ন্ড'নের মতো শ'হ'রে একটা ব্রা'ন্ডে'র এ'ম্বা'সে'ড'র।আ'ত্ম'নি'র্ভ'র'শী'ল একজন ম'হি'লা ছিলো।
আর ও কোনো অ'বৈ'ধ স'ন্তা'ন ও নয়।বি'য়ের মত প'বি'ত্র ব'ন্ধ'নে আ'ব'দ্ধ হয়েছিল সেলিম- জেনিফার। ভা'গ্যে'র ফে'রে এই চাঁদের টু'ক'রো আমার ঘরে।
এখানে ওর স'ম'তু'ল্য কেউ নেই।
আর কারো কিছু জানার আছে?রাইসা তুমি কিছু বলবে?
রাইসা :--------
আর কেউ কি কিছু বলবে?কিছু জানার বাকি আছে?
আমার কাছে সব কা'গ'জ প'ত্র আছে।লু'কি'য়ে রেখেছিলাম।যার কয়েক টা কা'বা'র্ডে ছিলো সেটা তুর দেখে ফেলে।"
এমন ম'র'মা'ন্তি'ক অ'তী'ত শুনে সকলের চোখে পানি।রাইসা,রিয়া, ধ্রুবর নানু,রিনা বেগম,আরো কিছু মহিলা যারা তুরকে সব সময় কথা শুনাতো সবাই 'স্ত'ব্ধ।
ফজিলাতুন্নেছা কাঁদছে।কতো বড়ো ভু'ল করেছে বুঝতে পেরে।উ'প'স্থি'ত সকলের চোখে পানি।
তুর বাবাকে জ'ড়ি'য়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদছে।বাবা ও মেয়েকে জ'ড়ি'য়ে কেঁদে দিয়েছে।
"মারে আমি অনেক স্বা'র্থ'প'র মা।আমাকে ক্ষ'মা করে দে।"
"নাহ বাবা।আমার বাবা সবচেয়ে বেস্ট বাবা।তুমি ক্ষ'মা চেও না বাবা,তুমি কেঁদো না।"
"আরো আগে জানালে হয়তো তোকে এতো ক'ষ্ট পেতে হতো না।আমরা তোকে হা'রা'নো'র ভ'য়ে বলতে পারিনি রে মা।আমাকে ক্ষ'মা করে দে...।"
"তুমি কেন ক্ষ'মা চাইছো,তুমি না থাকলে তো আমি বাঁ'চ'তে ই পারতাম না বাবা।আমি কখনো কোনোদিন তোমাদের ছে'ড়ে যাবো না বাবা। কনোদিন না।"
ছোট বা'চ্চা'দের মতো বাবার বু'কে লে'প্টে কাঁদতে থাকে।লিভিং রুমে উ'প'স্থি'ত কেউ কান্না আ'ট'কে রাখতে পারেনি।সকলে এ দৃ'শ্য দেখে কাঁদছে।
রায়লা বেগম খুশিতে আ'ন'ন্দ অ'শ্রু বি'স'র্জ'ন দিচ্ছেন।বাবার কাছ থেকে নিজের বু'কে জ'ড়ি'য়ে ধ'রে।কপালে সারামুখে ছোট্ট বেলার মতো চু'মু'তে ভ'রি'য়ে দেয়।তুর আবারও মাকে জ'ড়ি'য়ে ধ'রে হাউমাউ করে কেঁদে উঠে।
"আর কোনো দিন তোমাকে ক'ষ্ট দিব না আমি মা।তোমাকে ছে'ড়ে কোনোদিন দূরে যাবো না।"
রায়লা বেগম পরম মমতা দিয়ে জ'ড়ি'য়ে ধ'রে মেয়ের মাথায় হাত বুলায়।
কবির সাহেব বলেন,"মা রে ... মৃ'ত্যু'র দিন গু'না ওই অ'স'হা'য় মা'নু'ষ'টার সাথে একবার দেখা করবে না মা।সারাটা জী'বন যে লো'ক'টা শুধু ক'ষ্ট ই পেয়ে গেছে।তার অ'ন্তি'ম স'ম'য় তার ক'লি'জা'টা একটু ঠা'ণ্ডা করবে না মা।"
চলবে........